চাঁদপুরে রোগী মৃত্যুর অভিযোগে হামলা, থানায় অভিযোগ

২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে দায়িত্বরত চিকিৎসকের অবহেলায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ তুলে উত্তেজিত স্বজনরা চিকিৎসকের ওপর হামলা চালিয়েছেন। এ ঘটনায় আহত চিকিৎসক ডা. মাহমুদুল হাসান সুমন চাঁদপুর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। রোববার (১৯ অক্টোবর) রাতে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

ঘটনার বিষয়ে হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রোববার বিকেলে চাঁদপুর সদর উপজেলার কল্যাণপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. আরিফুজ্জামান (৪২) হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁর স্বজনরা দ্রুত তাকে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন।

সে সময় জরুরি বিভাগের ১১৬ নম্বর কক্ষে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মাহমুদুল হাসান সুমন অন্য রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছিলেন। স্বজনরা বারবার অনুরোধ করলেও চিকিৎসক “যাচ্ছি” বলে অপেক্ষায় রাখেন, যার ফলে রোগীর শারীরিক অবস্থা আরও অবনতি হয়। কিছু সময় পর চিকিৎসক এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ব্যবস্থাপত্র ও একটি প্রেসক্রিপশন দেন। ফলে স্বজনরা রোগীকে বাড়িতে নিয়ে যান, কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যে তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটে এবং পুনরায় হাসপাতালে আনার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

রোগীর মরদেহ হাসপাতালে পৌঁছানোর পর স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তারা সিএনজির ভেতর থেকেই চিকিৎসককে লক্ষ্য করে অশালীন ভাষায় গালাগালি শুরু করেন। ওয়ার্ডবয় কাউসার আহমেদ রোগী নামাতে গেলে মৃতের স্ত্রী প্রথমে তাঁকে ধাক্কা দেন। পরে স্বজনরা ১১৬ নম্বর কক্ষে ঢুকে চিকিৎসক ডা. মাহমুদুল হাসান সুমনের ওপর হামলা চালান, এতে তিনি গুরুতর আহত হন।

হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। তবে উত্তেজনা বাড়তে থাকায় পরে চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ বাহার মিয়া ও পুলিশের একটি ফোর্স ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

এ সময় হাসপাতালের অন্যান্য চিকিৎসক; ডা. নুরে আলম, ডা. সৈয়দ আহমেদ কাজল ও ডা. আনিসুর রহমান দ্রুত হাসপাতালে ছুটে আসেন।

পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে মৃত আরিফুজ্জামানের স্বজনরা তাঁর মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যান।

জানা গেছে, আরিফুজ্জামান বেপারী এক কন্যা সন্তানের জনক। তাঁর মেয়ে চাঁদপুর ড্যাফোডিল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মৃতের পরিবার লাশ দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

এ বিষয়ে চাদপুর সদর মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) বাহার মিয়া বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি পুলিশকে জানালে আমি সহ সঙ্গীও ফোর্স দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এ বিষয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, যার আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

স্টাফ করেসপন্ডেট/
২০ অক্টোবর ২০২৫