Home / চাঁদপুর / ডাকাতি হয়ে যাচ্ছে চাঁদপুরের ডাকাতিয়া নদী!
Dhakatia-Par
ফাইল ছবি

ডাকাতি হয়ে যাচ্ছে চাঁদপুরের ডাকাতিয়া নদী!

ইলিশের বাড়ি চাঁদপুরের বুকচিড়ে বয়ে চলা নদী ডাকাতিয়া এখন নিজেই যেনো ডাকাতি হয়ে যাচ্ছে। পদ্মা-মেঘনার মোহনা থেকে শুরু হয়ে এই নদীটি জেলার সদর উপজেলা, ফরিদগঞ্জ, হাজীগঞ্জ উপজেলাসহ বিভিন্ন অংশে বহমান এই নদী।

দীর্ঘসময় ধরে এর দুই পাড়ে চলছে দখলদারদের অবৈধ দখলের মহোৎসব চলছেই। ডাকাতিয়া নামের চিরো শান্ত এই নদীটি নিজেই যেনো প্রকাশ্য দিবোলোকে ডাকাতি হয়ে যাচ্ছে । যার ফলে এটির আয়তন ক্রমান্বয়ে ছোট হয়ে আসছে। অথচ এসব দেখার যেন কেউ নেই।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, চাঁদপুর শহরের বড় স্টেশন ত্রিনদীর মোহনা থেকে শুরু করে ফরিদগঞ্জ ও হাজীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন অংশেষ ডাকাতিয়াপাড় দখল করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে।

কোথাও কোথাও অবৈধ ড্রগ ইয়ার্ড, বালু কিংবা অন্যান্য মালামালের ব্যবসা করা হচ্ছে। আবার কেউ কেউ নিজেদের ক্রয়কৃত সম্পত্তি দাবী করে বহুতল বাড়িঘর তৈরীর কওে রেখেছেন। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান বড়স্টেশন, পুরাতন লঞ্চঘাট, ৫নং ঘাট, ৩নং ঘাট কয়লাঘাট, ১০নং ফেরী ঘাট, চৌধুরী ঘাট ও নতুন বাজার এলাকার নদীর দু’পাড়ে শত শত পাকা বিল্ডিং ও পাকা টিনসেট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘর নির্মান করা হয়েছে বহু আগেই। যার ফলে প্রাচীন এই শহর এলাকার পানি নিষ্কাশনে ব্যবস্থা অনেকটাই ভেঙ্গে পড়েছে।

ডাকাতিয়া দখল সম্পর্কে স্থানীয়, জাতীয় দৈনিক ও বেসরকারি টেলিভিশনগুলোও বহুবার প্রতিবেদন প্রকাশের পরেও কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি।
থামেনি দখলদারদের দৌরাত্ম্য। শহরের বাগাদী রোড বিআই ডাবি¬উটিএর মোড়ে বালু ব্যবসা বন্ধে পৌরসভার মেয়র ও জেলা প্রশাসন এশাধিকবার নির্দেশ বা প্রদক্ষেপ নিলেও তা কার্যত সফল হচ্ছে না। বর্তমানে পূর্বের স্থান থেকে একটি দক্ষিণে গিয়ে আবার সংঘবদ্ধ চক্রটি বালু ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে নতুন করে চাঁদপুর-রায়পুর সড়কের চাঁদপুর সেতুর উত্তর ও পশ্চিমপাশে দখল শুরু হয়েছে। সেখানে বিশাল আয়তন নিয়ে নদীর পাড় দখল করে শুরু হয়েছে বালুর ব্যবসা।

এছাড়া শহরের চৌধুরীঘাট এলাকায় প্রশাসন নদীরপাড় দখলমুক্ত করার জন্য গত বছর এবং এ বছর কয়েকবার অভিযান চালায়। কিন্তু কয়েকদিন পর আবারও দখলদাররা অবৈধ দখলে মেতে উঠে।

নদীর দু’পাড় সংকুচিত ও নাব্যতা কমে আসায় চাঁদপুর-ইচলী ঘাটে লঞ্চ চলাচল দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ রয়েছে। তাছাড়া মালবাহী নৌ-যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা এবং বর্ষার মৌসুমে পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।

নাব্যতা সংকটে নদীর জল¯্রােত ধীর গতি হওয়ায় এর দু’পাড় ঘেষে তৈরি হওয়া চাঁদপুর শহরে স্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এ নদীকে ঘিরে অসংখ্য কৃষি ফসল রয়েছে, সেগুলোও হুমকি মুখে পড়ছে।

এ অবস্থা থেকে উত্তরণে প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সম্মলিতভাবে এগিয়ে আসা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল। নয়তো চাঁদপুরের মানচিত্র থেকে একটা সময় চিরো শান্ত ডাকাতিয়া নদীটি দখলদারদের হাতে ডাকাতি হয়ে যাবে।

প্রতিবেদক- আশিক বিন রহিম