পবিত্র মাহে রমজান মাসে স্বস্তিতে নেই শহরের নিয়মিত চলাচলকারী সাধারণ মানুষ। একদিকে তীব্র যানজট অন্যদিকে অবৈধ ফুটপাত দোকানিদের অবৈধ দখল।
শহরের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে খ্যাত কালীবাড়ি মোড়, কোর্টস্টেশন ও রেলক্রসের আশপাশে এলাকায় সাধারণ মানুষ চলাচল করতে পারছে না।
ক্ষোভ প্রকাশ করে ক’জন পথচারী বলেন, রেলকর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট কোনো দপ্তরের তেমন তদারকি না থাকায় যার ইচ্ছেমতো যেখানে খুশি চটি বসিয়ে ব্যবসা করছে।
পুরো চাঁদপুর কোর্ট স্টেশন ও তার আশ-পাশের মেইন রোডে যাতায়তের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বাজারে পরিণত করেছে ভ্রাম্যমাণ দোকানিরা।
খবর নিয়ে জানা যায় শহরের প্রাণকেন্দ্র রেলওয়ে কোর্ট স্টেশনে যাত্রীদের ট্রেনে ওঠানামা ও চলাচলের সুবিধার্থে প্লাটফর্মসহ আশপাশে বেশ ক’বার অবৈধ ফল ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করা হয়।
কিছু দিন পর তারা পূর্বের ন্যায় আবার ফিরে আসে। বর্তমানে আবারো রেলওয়ের ঘুণ্টিঘরের আশপাশ ও স্টেশনের উত্তর, দক্ষিণসহ চারপাশে অবৈধভাবে ফল ব্যবসায়ীরা পসরা সাজিয়ে বসেছেন।
এক কথায় এখানে অসাধু ফল ব্যবসায়ী ও অন্যান্য কিছু দখলদারদের রাম-রাজত্ব চলছে। এতে ট্রেন স্টেশনে ভিড়লে ট্রেন থেকে নামা ও যাতায়াত করা খুব কঠিন হয়ে পড়ে।
অথচ রেলকর্তৃপক্ষ জনস্বার্থের এ সমস্যার দিকে তেমন দৃষ্টি না দিয়ে অজ্ঞাত কারণে ব্যবসায়ীদেরকেই সম্মতি দিচ্ছে। এ নিয়ে শহরে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে শহরের যানজট নিরসনে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও পৌর প্রশাসন দীর্ঘদিন যাবৎ নানা ধরনের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
এ সমস্যা নিয়ে সভা সেমিনারেরও কমতি নেই। কিন্তু এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে যানজট নিরসনের উদ্যোগ বারবার ভেস্তে যাচ্ছে।
বিশেষ করে চাঁদপুর শহরের অতি গুরুত্বপূর্ণ স্থান কোর্ট স্টেশন, কালীবাড়ি, শপথ চত্বর, পালবাজার গেইট ও শহীদ মিনার এলাকায় সর্বদা লেগেই থাকে যানজট।
সরজমিনে দেখা যায়, রেলওয়ে প্লাটফর্মের ওপর ও আশপাশে যেন ভ্রাম্যমাণ কাঁচামালের আড়ৎ বসানো হয়েছে। রেলগেটের গেটকে অবলম্বন করেও একটি চক্র জনচলাচলকে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। ঘুণ্টিঘরের সামনে ও সংলগ্ন স্থানে অবৈধ ফল ব্যবসায়ীরা তাদের মালামাল নিয়ে দীর্ঘদিন বসে রাজত্ব করছে।
এতেকরে সাধারণ মানুষের চলাচল দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। শহরের এ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে যে যেখানে সুযোগ পেয়েছে সেখানে পসরা সাজিয়ে বসে পড়েছে। তাদের ওপর নিয়মিত তদারকি না থাকায় তারা যা খুশি তাই করছে।
শুধুমাত্র রেল লাইনের আশেপাশেই নয় খোদ ঘুণ্টিঘরেই একটি চক্র তাদের মালামাল রাখার নিরাপদ স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছে। দেড় বছর পূর্বে অগ্নিসংযোগে ঘুণ্টিঘর পুড়ে ছাই হলেও এতে ওই চক্রের কোনো মাথা ব্যাথা নেই। বরং তাদের কপাল খুলেছে । তারা নতুন করে নব-নির্মিত ঘুণ্টিঘরে তাদের মালামাল রেখে দেদারছে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
একদিকে ট্রেন আসছে অন্যদিকে তারা দোকানের ওপর ছাতা খুলে ব্যবসা চালাচ্ছে। এতে করে সাধারণ যাত্রীদের চলাচল ও ট্রেন থেকে ওঠানামার জন্য ব্যাপক বেগ পেতে হচ্ছে।
রেল কর্তৃপক্ষের কার ইন্ধনে এবং কোন খুঁটির জোরে এ চক্ররা জনগণের সমস্যা করে দেদারছে অবৈধভাবে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে তা সাধারণ মানুষের ধোয়াসা বলেই মনে হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, চাঁদপুর শহরের রেল কর্তৃপক্ষের কতিপয় অসাধু ব্যক্তিকে মাসোয়ারার বিনিময়ে তারা এভাবে দিনের পর দিন ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে রেলওয়ে থানার চাঁদপুর ইনচার্জ উসমান গনি পাঠান চাঁদপুর টাইমসকে জানান, এসব ব্যবসায়ীরা অবৈধ। তাদেরকে বেশ ক’বার উচ্ছেদ করা হলেও তারা পুনরায় বসে। আবারো পদক্ষেপ নেয়া হবে।
রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান চাঁদপুর টাইমসকে জানান, যারা অবৈধভাবে রেলওয়ের জায়গা দখল করে ও জনসমস্যা সৃষ্টি করে ব্যবসা বাণিজ্য করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চাঁদপুরে কর্তব্যরত এসএই জাহান শরিফ জানান, ‘অবৈধ ব্যবসায়ীদের সরে যেতে বহুবার বলেছি। তারা শুনতে চায় না। আবারো ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
প্রতিবেদক-আশিক বিন রহিম
আপডেট, বাংলাদেশ সম ৬ : ৩৫ এএম, ৫ জুন ২০১৭, সোমবার
এজি / এইউ