চাঁদপুরের কোটা সংস্কারের দাবি এবং সারাদেশে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। ১৬ জুলাই মঙ্গলবার বিকেল ৩ টায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। কর্মসূচির অংশ হিসেবে চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা বের হলে উত্তাল হয়ে ওঠে আন্দোলন। পরে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা চাঁদপুর শহরের শপথ চত্বর ও অঙ্গীকারের সামনে অবস্থান নেয়। অঙ্গীকার পাদদেশের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে চাঁদপুর সরকারি কলেজ, চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজ, আল-আমিন একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, নার্সিং ইনস্টিটিউট, মৎস্য ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউটসহ শহরের বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে অংশ নেয়।
এর আগে সকালে শহরের কালীবাড়ি এলাকা থেকে একটি মিছিল বের করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আল-আমিন একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে মেথা রোড ও জেএম সেনগুপ্ত রোড হয়ে কালীবাড়ি এলাকায় যায়।
আরও পড়ুন… আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ফিরাতে চাঁদপুর জেলা ছাত্রলীগের চেষ্টা, আহত ৪
এদিকে বিকেল ৩টায় হাসান আলী সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জড়ো হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে একটি মিছিল বের হয়ে শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গিয়ে অবস্থান করে। সেখানে মিছিলটি ছাত্রলীগের বাবার মুখে পড়ে। এসময় জেলা ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ সাধারণ শিক্ষার্থীদের সড়কে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করে বাসায় ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানান। এক পর্যায়ে উভয়ের পক্ষের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। শুরু হয় দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়া। দুপাশ থেকে নিক্ষেপ করা হয় ইটপাটকেল। এতে আহত হয় অন্তত ১০ জন। এসময় শহরে তিন ঘণ্টার তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এই ঘটনার পর সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বাসস্ট্যান্ড থেকে পুনরায় হাসান সরকারি আলী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এসে অবস্থান নেয়।
অপর দিকে ছাত্রলীগের একটি মিছিল শহরের বাসস্ট্যান্ড থেকে মুক্তিযোদ্ধা সড়ক হয়ে কালীবাড়ি এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। ছাত্রলীগের মিছিল হাসান আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ অতিক্রম করা সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে ধাওয়া দিলে কোটা সংস্কার আন্দোলনরত ৪ শিক্ষার্থী পাশের লেকের পানির মধ্যে পড়ে যায়।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায়। এসময় অন্তত ১০-১৫ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জহির উদ্দিন বলেন, আমরা তাদেরকে (সাধারণ শিক্ষার্থী) শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে বলেছি। কিন্তু তারা আন্দোলনের নামে রাস্তা-ঘাট বন্ধ করে জনদূর্ভোগের সৃষ্টি করে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মিছিল থেকে আমাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছে। এতে আমাদের ছাত্রলীগের সিয়াম, জসিম, শিহাব, মাসুদসহ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়। আমরা এ হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
এ বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সন্ধ্যা ৬ টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। কোনো আহতের খবর আমাদের কাছে নেই।’
প্রতিবেদক: আশিক বিন রহিম, ১৬ জুলাই ২০২৪