চাঁদপুর কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার উন্নয়ন,শিক্ষার্থীদের খাবারের বিশুদ্ধ পানি,শিশু শিক্ষার্থীদের সু-শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সম্মত শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টিসহ অন্যান্য সব ব্যবস্থা নেয়া হবে। চাঁদপুর শহরের রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসতে যান জটের বিড়ম্বনায় পড়তে হবে না। অভিভাবক ও শিক্ষকদের সমাবেশে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসনের আইসিটি,শিক্ষা শাখার দায়িত্বে নিয়োজিত ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ আব্দুল হাই এ কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) দুপুরে কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের হল রুমে অধ্যক্ষ চিনন্ডি মায়ার সভাপতিত্বে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখেন ।
তিনি আরো বলেন,‘ বিদ্যালয়ের সব বিষয়ে খোলা মেলাভাবে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। তাহলে এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়ন করতে সহজ হবে। জেলা প্রশাসন থেকে ম্যাজিস্ট্রেট মারুফা সুলতানা খান হিরা মনিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি ১৫ দিন পর পর বিদ্যালয় এসে পরিদর্শন করবেন এবং বিদ্যালয়ের সব সমস্যা সমাধানকল্পে জেলা প্রশাসনকে অবহিত করবেন।’
চাঁদপুর জেলা প্রশাসন কর্তৃক পরিচালিত চাঁদপুর কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার মান উন্নয়ন ও শিশু শিক্ষার্থীদের সু-শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সম্মত শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে অভিভাবক ও শিক্ষকদের নিয়ে ওই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
অভিভাবকদের প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ আব্দুল হাই বলেন,‘বিদ্যালয়ের নতুন শিক্ষক নেয়ার ব্যাপারে আলোচনা করে দেখা হবে। শিক্ষার্থীদের বেতন বেশির ব্যাপারে অভিভাবকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বলেন, বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয় থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিদ্যালয়ের প্রতি মাসের বেতন প্রতি মাসের ১২ তারিখের মধ্যে দেয়ার সুযোগ পাবে শিক্ষার্থীরা। এতে কোনো জরিমানা লাগবে না। নির্ধারিত তারিখের পরে বেতন দেয়ার জন্যে যে ২শ’ টাকা জরিমানা নির্ধারণ করা হয়েছিল সেটি কমিয়ে ১শ’ টাকা করা হলো।
প্রতি মাসের বেতন প্রতি মাসেই অগ্রিম দিতে হবে। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মানুষ গড়ার কারিগর। তাদের বেতন বৃদ্ধির ব্যাপারে আলোচনা করে গভর্ণিং বডি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
বিদ্যালয়ের উন্নয়ন হচ্ছে,কিভাবে হচ্ছে তা’দেখার বিষয় নয়। দেখার বিষয় হচ্ছে এখানে কোনো দুর্নীতি হচ্ছে কিনা। দুর্নীতি হলে আপনাদের সেভাবে বলার সুযোগ রয়েছে। শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ড বড় আকারে রয়েছে সেটিকে ছোট আকারে ও ডিজিটাল পদ্ধতিতে করা হবে। বিদ্যালয়ে শিক্ষার মান উন্নয়নে আলোচনা সাপেক্ষে একজন ভাইস প্রিন্সিপাল নিয়োগ দেয়া হবে।
এছাড়া তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের উন্নয়নে পুরো বিষয় নিয়ে গভর্নিং বডিতে আলোচনা করে অচিরেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ সময় অভিভাবকদের পক্ষে উন্মুক্ত আলোচনায় অভিভাবকরা বলেন,বিদ্যালয়ের আরো মান উন্নয়ন করা প্রয়োজন রয়েছে। এ জন্য ভাল শিক্ষক নিয়োগ দেয়া প্রয়োজন। বিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে যা অচিরেই সমাধান প্রয়োজন বলে অভিভাবকরা বলেন।
প্রতিটি মিটিং সকল শিক্ষকদের উপস্থিত থাকা প্রয়োজন। শিক্ষকরা উপস্থিত থাকলে সমস্যা সম্পর্কে জানতে পারবে। এখানে শিক্ষক সংকট রয়েছে। শিক্ষার্থীরা সঠিক শিক্ষা পাচ্ছে না।
বিদ্যালয়ের শুরুতে প্রথম দিকে বিদ্যালয়ের যে উদ্দেশ্য ছিল ও ভালোভাবে কার্যক্রম চালু করেছে বর্তমানে সে অবস্থানে নেই। এতো অল্প শিক্ষক দিয়ে ভালো লেখাপড়া আশা করা যায় না।
বিদ্যালয়ের বেতন বেশি ৮শ’ থেকে ১ হাজার টাকা নেয়া হচ্ছে। কিন্তু সেই হিসেবে শিক্ষার মান ভালো নয়।তাই অভিভাবকরা বেতন কমানোর অনুরোধ জানান।
এ বিদ্যালয়ে আধুনিক ও ডিজিটাল মানের শিক্ষার প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন। অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন,বর্তমানে যে শিক্ষকরা শিক্ষাদান করছে তারা সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে শিক্ষা দিচ্ছেন। এতে করে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারা ভালো শিক্ষা দান করতে পারছেন না। বর্তমান প্রিন্সিপালের ভাষা অনেকে বুঝেন না।
অভিভাবকরা বলেন,শিক্ষার্থীরা সকাল বেলা বিদ্যালয়ে আসতে যান জটের সমস্যা পোহাতে হয়। বিশেষ করে কালি বাড়ির মোড়ে সকালে বিশাল যান জট হয়ে থাকে।
এ জন্য যান জট নিরসনে সকাল বেলা শপথ চত্বর মোড়ে ও ওয়ান মিনিট এলাকায় যান জট নিরসনে কমিটি পুলিশ দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা টয়লেটে যেতে হয় ময়লা পানি মাড়িয়ে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে তারা অনুরোধ জানান।
বিশেষ করে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা পানি পান করতে গিয়ে বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছে না বলে অভিভাবকরা অভিযোগ করেন। জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণে জেলা প্রশাসকের প্রতি অনুরোধ জানান।
এ সময় অভিভাকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন,দৈনিক আলোকিত চাঁদপুর পত্রিকার সম্পাদক মো.জাকির হোসেন, বিদ্যালয়ের অভিভাবক তাপস রায়, শাহানা আক্তার, বিটু দাস,মিলন,মাহবুব খান ও হাছিনা বেগম প্রমুখ।
প্রতিবেদক: কবির হোসেন মিজি
আপডেট,বাংলাদেশ সময় ৮:১৫ পিএম, ৩ আগস্ট ২০১৭,বৃহস্পতিবার
এজি