চাঁদপুর

চাঁদপুরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রথম রথযাত্রা সম্পন্ন

সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুর জেলায়ও ব্যাপক আয়োজনে শনিবার (১৪ জুলাই) শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব জগন্নাথ দেবের প্রথম রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এ উৎসব উদযাপনে জেলার বিভিন্ন মন্দিরে নেয়া হয়েছে বিভিন্ন ধর্মীয় কর্মসূচি। শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব সম্পন্ন করার লক্ষ্যে এরইমধ্যে জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তমাল কুমার ঘোষসহ পূজা পরিষদের নেতৃবৃন্দ প্রশাসন ও সকল স্তরের মানুষের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

রথযাত্রা উৎসবকে কেন্দ্র করে পুরাণবাজার জগন্নাথ মন্দিরে দুপুরের পর থেকে ভক্তদের সমাগম ঘটতে থাকে। বিকেল সাড়ে ৪টায় পুরাণবাজার জগন্নাথ মন্দিরের রথযাত্রার উদ্বোধন করেন চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আলহাজ্ব নাছির উদ্দিন আহমেদ।

এ সময় তিনি বলেন, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সকল ধর্মের মানুষ একত্রিত হয়েই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে এদেশকে স্বাধীন করেছে। এদেশের মানুষ ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে একত্রে বসবাস করছে। ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে এদেশকে সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল।

বাংলাদেশ কেটি অসম্প্রদায়িক দেশ। ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। আমরা হিন্দু-মুসলিম ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সকলে সকলের ধর্ম পালন করে থাকি। আজকে পুরাণবাজার জগন্নাথ মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায়ের রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখানে আমরা জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সভাই একত্রিতভাবে অংশগ্রহণ করেছি। বর্তমান সরকার শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

বর্তমান সরকার হিন্দু সম্প্রদায়ের সকল অনুষ্ঠানেই সর্বাত্মকভাবে সহায়তা করে যাচ্ছে। জেলা পুজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তমাল কুমার ঘোষের সভাপতিত্বে ও কার্তিক সরকারের পরিচালনায় এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন, নরেন্দ্র নারায়ন চক্রবর্তী, অ্যাড: বিনয় ভূষণ মজুমদার, প্যানেল মেয়র ছিদ্দিকুর রহমান ঢালী, জেলা জন্মাষ্টমী উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি গোপাল চন্দ্র সাহা, মুক্তিযোদ্ধা

বিবি দাস, সদর থানা পুজা পরিষদের সভাপতি সুশীল কুমার সাহা, সাধারণ সম্পাদক লক্ষন চন্দ্র সূত্রধর ও বিশাল গোবিন্দ দাসাদীকারি। শুরুতে গীতা পাঠ করেন সুবর্ন অবতার। পরে পুরাণবাজার হরিসভা মন্দির কমপ্লেক্স জগন্নাথ মন্দির প্রাঙ্গন থেকে জগন্নাথদেব, বলরাম ও সুভদ্রার প্রতিমূর্তি রথে স্থাপন করে পুরাণবাজার ও নতুনবাজারের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে শ্রী শ্রী কালীবাড়ি মন্দিরে এসে শেষ হয়। এখানে জগন্নাথ মন্দিরের আয়োজনে সপ্তাহ ব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
অপরদিকে শহরের নতুন বাজার এলাকার নতুন বাজার এলাকার শ্রীশ্রী গোপাল জিউর আখড়া থেকে আরেকটি রথ অনুষ্ঠিত হয়। এই রথযাত্রার উদ্বোধন করেন জেলা পুজা উদ্যাপন পরিষদের সাবেক আহ্বায়ক প্রফেসর রঞ্জিত কুমার বনিক।

এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন জেলা স্কাউট কমিশনার ও হরিবোলা সমিতির সভাপতি অজয় কুমার ভৌমিক। আরও উপস্থিত ছিলেন গোপাল জিউর আখড়া মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি দুলাল কর্মকার, সাধারণ সম্পাদক চির রঞ্জন রায়, অর্থ সম্পাদক ডা: মনোরঞ্জন ঘোষ, বাচ্চু সাহা, সদর থানা পূজা পরিষদের সভাপতি সুশীল কুমার সাহা, সাধারণ সম্পাদক লক্ষন চন্দ্র সূত্রধর, নারায়ন পাল, সমিরন ভঞ্জ, ডা: প্রণব রায় চৌধুরী, সুধাংশু ঘোষ, মধুসূদন পোদ্দার, বাপ্পী পাল, দিলীপ পাল, নিরঞ্জন পাল, অরবিন্দু কর্মকার, দিপক পাল,

নেপাল সেন, গৌতম ঘোষ, লিটন সরকার প্রমুখ। গোপাল জিউড়র আখড়ার রথটি মন্দির প্রাঙ্গন থেকে বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পদক্ষিন করে মেথা রোডস্থ দূর্গা মন্দিরে গিয়ে শেষ হয়। জেলার কচুয়া উপজেলার সাচারে অনুষ্ঠিত হয়েছে সর্ববৃহৎ রথযাত্রা। কচুয়া উপজেলার বাতাইয়া শ্রীশ্রী জগন্নাথ মন্দির, শাহরাস্তি উপজেলার শ্রীশ্রী মেহের কালীবাড়ি, ছিখটিয়া শ্রীশ্রী রাধা মদনমোহন জিউড় মন্দির, হাজীগঞ্জ উপজেলার শ্রীশ্রী রাজা লক্ষ্মী নারায়ণ জিউড় মন্দির, উচ্চঙ্গা ইসকন মন্দির, ফরিদগঞ্জ উপজেলার আষ্টা মহামায়া শ্রীশ্রী জগন্নাথ মন্দির,

গুপ্টি সেনবাড়ির শ্রীশ্রী কাত্যায়নী মন্দির, মতলব উত্তর উপজেলার দুর্গাপুর শ্রীশ্রী কালী মন্দির, চরপাতালিয়া ইসকন মন্দির, মতলব দক্ষিণ উপজেলার মতলব বাজার শ্রীশ্রী জগন্নাথ মন্দির, মেহরন শ্রীশ্রী জগন্নাথ মন্দির, হাইমচর উপজেলার হাইমচর শ্রীশ্রী জগন্নাথ মন্দিরে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্রতিবেদক- মাজহারুল ইসলাম অনিক

Share