কৃষি ও গবাদি

চাঁদপুরে ঋণ বরাদ্দ ছিল ২৭১ কোটি টাকা : বিতরণ ১৫৮ কোটি টাকা

চাঁদপুরে ৮ উপজলোয় রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ২শ’৭১ কোটি ৮০ লাখ টাকা কৃষি ও দারিদ্রবিমোচনে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক বরাদ্দ দিয়েছে। অর্থবছরের তুলনায় এ অর্থবছরে ৩২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা বরাদ্দ বেশি ছিল ।

জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত চাঁদপুর জেলার কৃষিঋণ কমিটির সব ব্যাংকের আঞ্চলিক কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সমন্বয় সভায় জেলার অভিভাবক ব্যাংক সোনালী ব্যাংকের উপস্থাপিত তথ্যে বিষয়টিস জানা গেছে ।

প্রাপ্ত তথ্য মতে,সোনালী,অগ্রণী,জনতা,বাংলাদেশ কৃষি,রূপালী, বেসিক,কর্মসংস্থান,বিআরডিবি ও চাঁদপুরের বেসরকারিভাবে পরিচালিত ২০ টি ব্যাংকে ওই বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত বা সরকারিভাবে পরিচালিত ৭ টি ব্যাংকে ২শ’২৪ কোটি টাকা ও বেসরকারি ওই ব্যাংকে ৪৭ কোটি ৭৯ লাখ টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক বিতরণের নির্দেশ ছিল ।

২০১৮-২০১৯ পর্যন্ত সরকারিভাবে পরিচালিত ব্যাংকগুলো ১৫৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ও বেসরকারি ব্যাংকগুলো ৪০ কোটি ৮১ লাখ টাকা বিতরণ করেছে। যার হার যথাক্রমে ৭১% ও ৮৫%।
১ লাখ ১শ’৩৯ জন ঋণগ্রহীতার নিকট ঔ ঋণ বিতরণ করা হয়েছে।

এদিকে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের জুন পর্যন্ত বকেয়া রয়েছে ৩৮৩ কোটি টাকা । এর মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ টাকার পরিমাণ হলো ৭৯ কোটি ৭২ লাখ টাকা।

সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের আঞ্চলিক কার্যালয়ের সূত্রে জানা গেছে,সোনালী ব্যাংকের ২০ টি শাখার চলতি (২০১৮-১৯) অর্থবছরে ১০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা,অগ্রণী ব্যাংকের ২০ টি শাখায় ১৬ কোটি ৩৬ লাখ ,জনতা ব্যাংকরে ১৫ টি শাখায় ২৪ কোটি ২৭ লাখ ৫০ হাজার,বাংলাদশে কৃষি ব্যাংকরে ২৮ টি শাখায় ১৭২ কোটি ৩৪ লাখ,পল্লী উন্নয়ন বোর্ড ২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা গত অর্থবছরে কৃষি ও দারিদ্রবিমোচনে বিতরণের লক্ষ্যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বাকি ৪৭ কোটি ৭৯ লাখ টাকা বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল।

এ দিকে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের শাখাগুলো ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ৪% সুদে‘ ডাল,তৈলবীজ,মসলা জাতীয় ফসল ও ভুট্টা ’ চাষাবাদের জন্যে ৫৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে । এ ছাড়া জুলাই পর্যন্ত ৩ শ’৫৫ কোটি ৯৮ লাখ ৫ হাজার টাকা বকেয়া হিসেবে জেলার কৃষি,দারিদ্রবিমোচন ও অন্যান্য খাতে পড়ে আছে। ব্যাংকগুলোতে মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের পরিমাণ ৯০ কোটি ৪১ লাখ টাকা।

সংশ্লিষ্ঠ একজন ব্যাংক কর্মকর্তা চাঁদপুর টাইমসকে বলেন,‘একজন কৃষকের ঋণ পাওয়ার প্রথম শর্তহচ্ছে তার অবশ্যই চাষাবাদ উপযোগী জমি থাকতে হবে। বর্গ চাষীরাও জমির মালিকগণের অনুমতিপত্র সহ আবেদন করলে ঋণ পাবেন । অপর এক প্রশ্নের জবাবে বলেন মৎস্য,গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি প্রতিপালনে সর্ব্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন ।’

প্রসঙ্গত,কৃষি ব্যাংক একটি বিশেষায়িত ব্যাংক। কৃষি উৎপাদন,সেচযন্ত্র ক্রয়,পাওয়ারটিলার ক্রয়,গরু মোটাতাজাকরণ,পল্ট্রীফার্ম,গাভীপালন,মৎস্যচাষ,শাক-সবজি উৎপাদন ও রবিফসল করতে কৃষকদের সহজ শর্তে কৃষকদের ঋণ দিয়ে থাকে। সঠিকভাবে মূল্যায়ন করে বর্গাচাষীদেরও কৃষিঋণ প্রদান করে।

২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ঋণ প্রদানের বেলায় জমি আছে ও নিজে চাষাবাদ করে এমন কৃষকদের ব্যাংকের মাঠ সহকারীগণ তাৎক্ষণিকভাবে ঋণ দেবার প্রস্তাব করলে ব্যাংক ৯% সরল সুদে কৃষি উৎপাদন খাতে ঋণ বিতরণ করে থাকে ।’

সারাদেশে জাতীয়ভাবে চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২১ হাজার ৮শ’ কোটি টাকা। কৃষি ও পল্লী ঋণের চাহিদার কথা বিবেচনায় রেখে, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত বাংকগুলোর স্বনির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা এবং বেসরকারি ও বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহের নিট ঋণ ও অগ্রিমের ২ % হারে এ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে লক্ষ্যমাত্রার ৬০% বিতরণ করতে হবে শস্য খাতে, ন্যূনতম ১০% মৎস্য খাতে এবং প্রাণিসম্পদ খাতে ১০% বিতরণ করতে হবে। কৃষি যন্ত্রপাতি, দারিদ্র্য বিমোচন ও অন্যান্য খাতে বাকি অর্থ বিতরণ করার নির্দে।শ ছিল ।

প্রতিবেদক :আবদুল গনি
১১ আগস্ট ২০১৯

Share