চাঁদপুর

চাঁদপুরে ৫ পৌর নির্বাচন :স্বতন্ত্রের আড়ালে বিদ্রোহী প্রার্থী

চাঁদপুরের ৫ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র, কাউন্সিলর ও নারী কাউন্সিলর মিলে মোট ৩শ’ ১৪জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাচাই শেষে বাতিল হওয়ার পর চূড়ান্ত হয়েছে ২৯৮ প্রার্থী। আপিল আবেদন করেছেন একাধিক প্রার্থী। আপিল গ্রহণ হলে এ সংখ্যা আরো বাড়বে আর বিদ্রোহী প্রার্থীগণ মনোনয়ন প্রত্যাহার করলে সংখ্যা পরিবর্তন হতে পারে।

এখন দলীয় নেতাকর্মীসহ দলীয় নীতিনির্ধারকমহল তাকিয়ে আছেন বিদ্রোহী প্রার্থীদের সিদ্ধান্তের দিকে। যদিও বহিষ্কারের হুমকিতে এক প্রকার চাপে রয়েছেন বিদ্রোহী প্রার্থীরা। সুষ্ঠ নির্বাচন হলে দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ী হওয়ার পথে প্রধান বাধা হিসেবে থাকবে বিদ্রোহী প্রার্থীরা।

এ নিয়ে বর্তমানে দু’দলেই বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে বিপাকে রয়েছেন। এছাড়া সময়ও কম থাকায় বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে দু’দলেই বুঝা-পড়া করারও তেমন বেশি সুযোগ পাচ্ছেন না। এখনো পর্যন্ত কোন বিদ্রোহী প্রার্থীকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে শোনা যায়নি। যদিও সময় এখনো রয়েছে।

৫ পৌরসভার মধ্যে ফরিদগঞ্জে বিএনপির একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে। তারা সমানভাবে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। সেদিক এগিয়ে আছেন বর্তমান মেয়র মঞ্জিল। বর্তমান মেয়র হওয়া স্বত্ত্বেও দল থেকে মনোনয়ন না দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দলের বৃহৎ একটি অংশ। ওই এলাকা আ’লীগের প্রার্থীর ক্ষেত্রেও সরকার দলের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট মুক্তিযোদ্ধাগণ সাংবাদিক সম্মেলনে তাদের বিদ্রোহ অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।

দু’দিনের যাচাই-বাচাই পর্বে মেয়র পদে ৪, কাউন্সিলর পদে ১১ ও ১ নারী কাউন্সিলর প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হলেও নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে অনেকেই ইতোমধ্যে আপিল করেছেন।

আপিল থেকে বিরত থাকেননি (ছেঙ্গারচর) মতলব উত্তর উপজেলার একমাত্র বিএনপির প্রার্থী সারোয়ারুল আবেদিন খোকন। তবে তার আপিল গ্রহণযোগ্য না হলে সরকার দলের প্রার্থী পূবের নির্বাচনের মতোই বিনা ভোটে বিজয়ী হবেন এমনটাই মন্তব্য ওইসব এলাকার ভোটারদের।

এদিকে স্বতঃফুর্তভাবে মাঠে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছেন প্রার্থীরা। যার যার এলাকার ভোটারদের সাথে নিরব যোগাযোগ রক্ষা করছেন তারা।

একাধিক ভোটার জানান, ‘প্রার্থী যেই হোক, যোগ্য প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হলে তাকেই ভোট দেবো। এলাকার উন্নয়নে যারা অগ্রণী ভূমিকা রাখবে ও আমাদের সুখে দুঃখে পাশে থাকবে এমন প্রার্থীকেই আমরা জনপ্রতিনিধি হিসেবে পেতে চাই।’

এসব এলাকার ভোটারদের বক্তব্যে জনপ্রতিনিধিদের ওপর আকাংখার বিষয়গুলো সু-স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তাদের মতে এবার প্রথম বারেরমত দলীয় প্রতীকে পৌর নির্বাচন হতে যাচ্ছে। নির্বাচনে মেয়র পদে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপি উভয় দলেরই মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীরা মাঠে মাঠে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু ভোটারদের চাওয়া হচ্ছে পৌর নির্বাচনে যারা বিজয়ী হয়ে আসবে তারা তাদের পুরনো কাজগুলো বিশেষ করে উন্নয়মূলক কর্মকাণ্ডের প্রতি দৃষ্টি দেবে।

চাঁদপুরের পৌর এলাকা ৫ উপজেলার মধ্যে হাজীগঞ্জ ও মতলব পৌরসভায় দেখা যায়, নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দ এখনো না হওয়ায় প্রার্থীদের পাশাপাশি তাদের কর্মী-সমর্থকরাও কিছুটা মাঠ পর্যায়ে ঢিলেঢালা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

তবে এবার প্রার্থীদের নির্বাচনী অফিস কেন্দ্রীক প্রচারণা তেমন লক্ষ্য করা যায়নি। কোনো কোনো প্রার্থী নির্বাচনী অফিস করলেও তেমন একটা জমজমাট দেখা যায়নি।

প্রচারণায় ব্যবহৃত কর্মী-সমর্থকরাও জানায়, প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হলেই আমরা দলের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় ঝাঁপিয়ে পড়বো।

এবার নির্বাচন নিয়ে বিশেষ আগ্রহ রয়েছে নারী ভোটারদের মাঝে। তবে পূর্বের কয়েকটি নির্বাচনের বিষয় স্মরণ করে কিছুটা আশংকার কথাও প্রকাশ করেছেন। তাদের প্রশ্ন ভোট দিতে পারবো তো?

এ ব্যপারে হাজিগঞ্জ মধ্যবাজার এলাকার নাজমা আলম নামে এক নারী ভোটার জানায়, ‘অনেকের কাছ থেকেই শুনেছি ভোট কেন্দ্রে নাকি নিজের ভোট দেওয়া খুবই কষ্টকর। আমি আশা করি এবার আমরা সুন্দর পরিবেশে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবো।’

কয়েকজন প্রার্থীর সাথে কথা হলে তারা জানান, আমরা ভোটারদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করছি। আগামী ১৩ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। তবে প্রতীক এলে জোরালোভাবে নির্বাচনী প্রচারে নেমে পড়বো।

দেলোয়ার হোসাইন

 ।। আপডেট : ০১:২০ এএম, ০৯ ডিসেম্বর ২০১৫, বুধবার

ডিএইচ

Share