বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় গ্রামীণ রাস্তার চাঁদপুর জেলার ৮ উপজেলার ২০২টি ব্রিজ/কালভার্ট নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে সারাদেশের প্রতিটি উপজেলার জন্যে এই দরপত্রটি একত্রে আহ্বান করা হয়।
২য় পর্যায়ের দরপত্রে চাঁদপুরের ৮ উপজেলার ২০২টি সেতু/কালভার্ট নির্মাণের আহবানকৃত দরপত্র বিক্রির শেষ তারিখ আজ (মঙ্গলবার) ৫ এপ্রিল।
দরপত্র আহ্বান এবং গ্রহণে সরকারের শতভাগ সদিচ্ছা থাকলেও আওয়ামী একটি প্রভাবশালী মহলের বাধার মুখে সাধারণ ঠিকাদাররা গতকাল পর্যন্ত একটি দরপত্রও ক্রয় করতে পারেনি।
গত কদিন যাবৎ চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ এলাকায় পিআইও অফিস ঘিরে রেখেছে একটি প্রভাবশালী মহল। নিয়ম রক্ষার জন্য ওই অফিস থেকে বেশ কিছু দরপত্র জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঠিয়ে ওই চক্র সবকটি কিনে নিয়ে গেছে।
এমন চিত্র জেলার অধিকাংশ উপজেলাতেই।
মতলব উত্তর ও দক্ষিণ উপজেলার সাধারণ ঠিকাদাররা জানেনই না যে, ওই অফিস কোটি কোটি টাকার দরপত্র আহবান করেছে। সেখানকার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তারা নিজেদের অফিসে তালা ঝুলিয়ে বাইরে নিরাপদ স্থানে বসে তাদের দরপত্র বিক্রি ও গ্রহণের কাগুজে আনুষ্ঠানিকতা সারছেন বলে জানা গেছে।
প্রাপ্ত তথ্য মতে চাঁদপুর জেলার সদর উপজেলার ১৬টি, শাহরাস্তিতে ২১টি, ফরিদগঞ্জে ১৯টি, হাইমচরে ৬টি, কচুয়ায় ১৫টি, মতলব দক্ষিণে ৩৯টি এবং মতলব উত্তরে ৬৬টি সেতু/কালভার্ট নির্মাণে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা ব্যয় হবে। আজ এসব দরপত্র বিক্রির শেষ দিন।
বুধবার দরপত্র গ্রহণের ৭ দিনের মধ্যে ঠিকাদার নিয়োগ শেষ করতে হবে। পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে কাজ শুরু করতে হবে। আশ্চর্য ও হাস্যকর বিষয় হচ্ছে ঠিকাদার নিয়োগের ১ মাসের মধ্যে অর্থাৎ ৩০ মে ১৬ তারিখের মধ্যে এর নির্মাণ কাজ শেষ করতে হবে।
দরপত্র বিক্রি ও গ্রহণে প্রভাবশালীদের অযাচিত হস্তক্ষেপ এবং বাধার বিষয়টি জেলা প্রশাসক চাঁদপুরকে জানানো হয়েছে। সদরের বিষয়টি জানার পর তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে দরপত্র গ্রহণের নির্দেশ দেন। সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য আজ তার কার্যালয়ে পুলিশের সহায়তা চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, ‘আমি ডিসি (জেলা প্রশাসক) সাহেবকে বলেছি বিষয়টি হস্তক্ষেপ করার জন্যে। আমরা এসব টেন্ডারবাজিতে নেই। যারা করছে তাদেরকে সবাই চেনে। আমি চাই ফ্রেশ (স্বচ্ছ) টেন্ডার হোক।’
এ ব্যাপরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান,‘স্ব স্ব উপজেলার সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা চাইলে অবাধ ও নিরপেক্ষ দরপত্র গ্রহণে আমরা অবশ্যই পুলিশি সহায়তা দেবো।’
তবে চাঁদপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয়ের কেউ এ ব্যাপারে মুখ খুলতে রাজি হননি।
২/৩ জন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার সাথে আলাপকালে তারাও এ বিষয়ে কথা বলতে চাননি। (সূত্র- চাঁদপুরের একাধিক স্থানীয় দৈনিক)
: আপডেট ১:৩০ পিএম, ৫ মার্চ ২০১৬, মঙ্গলবার
ডিএইচ