আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুরের ৫টি আসনেই আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থীদের দলীয় মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে তাদের সমর্থিত তৃণমূল নেতাকর্মীরা চিন্তায় আছেন।
কেউই নিশ্চিতভাবে বলতে পারছেন না দল থেকে মনোনয়ন কে পাবেন। তবে দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহকারী সবার বিশ্বাস সবাই দলীয় মনোনয়ন পাবেন। এক্ষেত্রে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, দল কাকে মনোনয়ন দেবে তা দেখতে হলে শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে চাঁদপুর-১ (কচুয়া) আসনে রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর। তার সমর্থিত নেতাকর্মীদের চিন্তায় কারণ সাবেক সচিব ও এনবিআরের চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন। কারণ একই আসন থেকে মনোনয়ন ফরম তুলেছেন সাবেক সচিব গোলাম হোসেন।
পাশাপাশি চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর-মতলব দক্ষিণ) আসনে মনোনয়ন নিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার সমর্থিত তৃণমূল নেতাকর্মীরা চিন্তায় রয়েছেন। তাদের চিন্তার কারণ একই আসন থেকে মনোনয়ন নিয়েছেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী,ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট নুরুল আমিন রুহুল এবং তরুণ শিল্পপতি আওয়ামী লীগ নেতা এম ইসফাক আহসান। যদিও আসনটি ধরে রাখতে ইতোমধ্যে মায়ার ছেলে সাজেদুল হোসেন চৌধুরী দীপুও মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন।
এদিকে, চাঁদপুর-৩ (সদর-হাইমচর) আসনে মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি সমর্থিত তৃণমূল নেতাকর্মীরা চিন্তায় রয়েছেন। তাদের চিন্তার কারণ একই আসন থেকে মনোনয়ন তুলেছেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীও আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেদওয়ান খান বোরহান।
এছাড়া চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ড. শামছুল হক ভূঁইয়া, সাবেক এমপি রাজা মিয়ার ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা আমির আজম রেজা, ডা. মোস্তফা হোসেন, জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি সাংবাদিক শফিকুর রহমান, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. হারুন অর রশিদ সাগর, সাবেক এমপিপুত্র অ্যাড. জাহিদুল ইসলাম রোমান।
এখানে এমপি সমর্থিত তুণমূল ও জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপপতি শফিকুর রহমান সমর্থিতদের অবস্থান শক্ত রয়েছে। দু’জনের পক্ষেই তৃণমূল নেতাকর্মী ছাড়াও নৌকা প্রতীকে বিজয়ী জনপ্রতিনিধিদের মধ্যেও গ্রুপিং দ্বন্দ্ব রয়েছে।
পাশাপাশি চাঁদপুর-৫ আসনে মনোনয়ন নিয়ে দ্বন্দ্বে রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমান সংসদ সদস্য মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম (বীর উত্তম)। তার আসন থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার সফিকুল ইসলাম, ব্রিগেডিয়ার (অব.) সালাউদ্দিন ও কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের সদস্য সফিকুল আলম ফিরোজ।
নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থীদের পাশাপাশি দ্বন্দ্বে রয়েছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা। কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কোন আসন থেকে কাকে মনোনয়ন দেবে দল। এ নিয়ে মাঠপর্যায়ে অস্থিরতা রয়েছে। কেউ কেউ বর্তমান এমপি-মন্ত্রীদের এগিয়ে রাখলেও নতুন কিছু মনোনয়ন সংগ্রহকারী হেভিওয়েট হওয়ায় তৃণমূলরা দুশ্চিন্তায় আছেন। সেইসঙ্গে নতুনদেরও এগিয়ে রাখছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মন্ত্রী-এমপিদের কয়েকজন বাদ পড়তে পারেন। সেক্ষেত্রে নতুন মুখের দেখা মিলবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে কোন আসন থেকে কাকে বাদ দেবেন আর কাকে নেবেন সেটি নেত্রীই ভালো বলতে পারেন। নেত্রীর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকতে হবে আমাদের। আমরা কাউকে এগিয়ে রাখতে চাই না। দল থেকে যাকে মনোনয়ন দেয়া হবে আমরা তার জন্যই কাজ করবো।
ক্লিক করে আরেকটি প্রতিবেদন পড়ুন- চাঁদপুরে পাঁচটি আসনে আওয়ামী লীগের মনোয়ন সংগ্রহ করলেন যারা
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,
১১ নভেম্বর, ২০১৮