চাঁদপুরে চলতি বর্ষা মৌসুমে ২৩ কি.মি বাগানসৃজন ও ৬৩ হাজার বৃক্ষরোপণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। চাঁদপুর সামাজিক বনায়ন নার্সারী ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বিষয়টি চাঁদপুর টাইমসকে বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) নিশ্চিত করেন।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, চাঁদপুর শহরের ইচলী থেকে টোরা মুন্সীর হাট-একতা বাজার পর্যন্ত ১৮ কি.মি এবং হাজীগঞ্জে-হাটিলা সড়কে ৩ কি.মি সড়ক বাগানসৃজন করার ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ঔষধি,বনজ ও ফলজ বৃক্ষরোপণ করা হবে। রক্ষণাবেক্ষণে স্থানীয় সুবিধাভোগীদের দেয়া হবে।
এদিকে উম্মুক্তভাবে প্রতিটি ৫ টাকা করে বিক্রির উদ্দেশ্যে জেলা বনবিভাগে ৬৩ হাজার বনজ,ঔষধি ও ফলজ বৃক্ষ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এরমধ্যে চাঁদপুর সদরে ৩০ হাজার,হাইমচরে ১ হাজার ৫শ’,হাজীগঞ্জে ২ হাজার ৫শ’,মতলব দক্ষিণে ৫ হাজার, ফরিদগঞ্জে ১০ হাজার,শাহারাস্তি ৩ হাজার বিতরণ করা হবে।
চাঁদপুর সামাজিক বনায়ন নার্সারী ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.তাজুল ইসলাম চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বেশি করে আমাদের গাছ লাগানো উচিত। জীবন ধারণের জন্যে গাছের ভূমিকা অপরিসীম। গৃহনিমাণ,আসবাবপত্র তৈরি ,দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ সৃষ্টি,ঝড়,জলোচ্ছ্বাস,বন্যা,মহামারি,নদীভাঙ্গন প্রতিরোধে গাছের ভূমিকা অপরিহার্য। গাছের অর্থনৈতিক মূল্যও অনেক ।
১৯৯০ সাল থেকেই একটি শ্লোগান রয়েছে ‘একটি গাছ কাটলে ৫টি গাছ রোপণ করতে হবে ’। ফলে মানুষের ভেতর গাছ রোপণের মানসিকতা অতীতের চেয়ে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।’
অপর একটি প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘অবৈধভাবে গড়ে উঠা স’মিলগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। এরইমধ্যে তাদেরকে লাইসেন্স গ্রহণে চিঠি দেয়া হয়েছে। আবার কোনো কোনো স’মিল মালিককে নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ামাত্র ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
তিনি আরো বলেন, কোনোভাবেই বনবিভাগের অনুমতি ব্যতীত বিদ্যুৎবিভাগের বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার এখন আর নেই ।
এদিকে চাঁদপুর সামাজিক বনায়ন নার্সারী ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.তাজুল ইসলাম আরো জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসন,বন ও কৃষি বিভাগের যৌথ আয়োজনে ১৯ জুলাই থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপি চাঁদপুর হাসান আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ‘বৃক্ষরোপণ সপ্তাহ ২০১৭’ পালিত হবে।
এর উ™ে¦াধন করবেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো.আব্দুস সবুর মন্ডল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল ও কুমিল্লা অঞ্চলের বন বিভাগীয় কর্মকর্তা মো.মাহবুবুর রহমান ।
প্রসঙ্গত, পরিবেশ, প্রকৃতি ও জীবজগতের পরম বন্ধু হলো বৃক্ষ। বৃক্ষ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি মানুষের জীবন ও জীবিকা নির্বাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মানুষ ও প্রাণী জগতের দৈনন্দিন জীবনে বেঁচে থাকার প্রয়োজনীয় উপাদান অক্সিজেন আসে এ বৃক্ষ থেকেই।
তা ’ছাড়া খরা, অতিবৃষ্টি,ঘূর্ণিঝড়,বন্যা,জলোচ্ছ্বাস প্রতিরোধে বৃক্ষের ভূমিকা অপরিসীম। বৃক্ষ ছাড়া পৃথিবীতে বসবাস করা সম্ভব নয়। মানুষের জীবন থেকে মৃত্যু পর্যন্ত বৃক্ষের অবদান অনস্বীকার্য।
জনসংখ্যা বৃদ্ধি, খাদ্য, জ্বালানি, বাসস্থান, আধুনিক জীবনের জন্য কাঠভিত্তিক আসবাবপত্রের চাহিদা পূরণ, নতুন নতুন কলকারখানা স্থাপন ও সময়ের চাহিদা পূরণে কাঠের চাহিদা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং দেশের বনাঞ্চল হ্রাস পাচ্ছে। এর ফলে দেশের পরিবেশের ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।
এক তথ্য মতে,ভারসাম্য রক্ষায় দশেরেে আয়তনরে ২৫ ভাগ বনভূমি প্রয়োজন। দেশে আছে ৯ থকে ১২ ভাগ । দশেের্ বতমানে ২৫ লাখ ২০ হাজার হক্টরে বন এলাকা রয়ছে।ে এর মধ্যে মাত্র ৪৫ ভাগ এলাকায় গাছ আছ।ে পাহাড়ি বন ৬শ’৪৭ হাজার হক্টরে,শালবন ১শ’২০ হাজার হক্টরে ও সুন্দরবন ৬শ’১০ হাজার হক্টের।
বন থেেক প্রতি বছর প্রায় ২২ লাখ ঘনফুট বনজ দ্রব্যাদি পাওয়া যায়, যার মূল্য কয়কশে’কোটি টাকা। এছাড়াও মধু, ফল,রসসহ বিভন্নি বনজ সম্পদ পাওয়া যায়। তাই এসবদিক থেকে বৃক্ষের অর্থনৈতিক মূল্যও অনেক বেশি।
প্রতিবেদক :আবদুল গনি
:আপডেট,বাংলাদেশ সময় ৯:১০ পিএম,১৩ জুলাই ২০১৭,বৃহস্পতিবার
ডিএইচ