চাঁদপুরের প্রত্যন্ত এলাকায় কমিউনিটি ক্লিনিকগুলি স্বাস্থ্যসেবামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে অসামান্য অবদান রেখে চলছে। জেলার ৮ উপজেলার ৮৯ ইউনিয়নে পল্লী এলাকার হতদরিদ্র মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দোরগোঁড়ায় পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে ২শ’৮টি কমিউনিটি ক্লিনিক বর্তমানে চালু রয়েছে।
এসব ক্লিনিকগুলোতে পল্লী জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে এটি একটি মাইলফলক এসব ক্লিনিকগুলোতে প্রতি মাসে গড়ে ১৫ সহস্রাধিক রোগী চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকে।
প্রতিদিন গড়ে ১৫ সহস্রাধিক শিশু, কিশোর-কিশোরী, গর্ভবতী মা ও তার, সন্তান প্রসবকালীন সময় ও পরে, নবজাতক শিশু, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা এ কমিউনিটি ক্লিনিকগুলি থেকে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করছে। কোনো কোনো জটিল রোগীকে তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কিংবা ঢাকায় রেফার করে থাকে।
এ ছাড়াও পরিবার পরিকল্পনার বিভিন্ন সেবা, জাতীয় টিকাদান কর্মসূচিসহ ৬ টি অত্যাবশকীয় টিকা প্রদান করা হয়। এখানে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩ টা পর্যন্ত স্বাস্থ্য বিভাগীয় কর্মী ও হেলথ প্রোভাইডর নিয়োজিত রয়েছে।
প্রতি মাসে সরকারিভাবে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা মূল্যের ঔষধ ৩০ প্রকারের ঔষধ দু’বারে প্রদান করা হয়। যা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে রোগীদের দেয়া হয়।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে -চাঁদপুর সদরে ৪৪টি, কচুয়ায় ৩৫টি, শাহারাস্তিতে ২২টি, হাজীগঞ্জে ১৬টি, মতলব দক্ষিণে ১৬টি, মতলব উত্তরে ৩৪টি, হাইমচরে ৭টি এবং ফরিদগঞ্জে ৩৭টি কমিউনিটি ক্লিনিক বর্তমানে চালু রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৯-২০০০অর্থবছরে তৎকালীন আ’লীগ সরকার সারা দেশব্যাপি পল্লী এলাকায় প্রতি ৬ হাজার হতদরিদ্র মানুষের জন্য স¦াস্থ্যসেবা দোরগোঁড়ায় পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে বারান্দাসহ ৬ শত্যাংশ ভূমির উপর একটি আর্সেনিক মুক্তকলসহ ৪ লাখ ২৪ হাজার টাকা ব্যয়ে দু’কক্ষ বিশিষ্ট একটি করে কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
২০০০-২০০১ অর্থবছর পর্যন্ত ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করার পর পরবর্তী সরকার পরিবর্তনের ফলে সবগুলি নির্মাণ হয় নি।
দেশের প্রথম কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ হয় গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গীপাড়ার ডিমাভাঙ্গা গ্রামে। এটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তখন চাঁদপুরের ৮ উপজেলায় ২শ’ ৯১টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণের প্রস্তাব স্বাস্থ্যবিভাগ গ্রহণ করে। এর মধ্যে নির্মাণ করা হয়েছিলো ২শ’৩১টি। চালু হয়েছিল ৭৬ টি।