অনেক শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে পাঠদান না করিয়ে শিক্ষার্থীদের নিজেদের কাছে প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করেন বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা.দীপু মনি। তিনি বলেন, ‘না পড়লে কখনো কখনো ছাত্রছাত্রীদের ফেল করিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে এ ধরনের অনৈতিক বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে।’
মঙ্গলবার চট্টগ্রাম কলেজ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা.দীপু মনি। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) চট্টগ্রাম অঞ্চল শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে এই মতবিনিময়ের আয়োজন করে।
প্রশ্নপত্র ফাঁসমুক্ত পরীক্ষা আয়োজনের জন্য সরকার ও শিক্ষকদের সঙ্গে অভিভাবক-শিক্ষার্থী সবার ভূমিকা আছে বলে মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ব্যবস্থা নেওয়ায় গতবার কোনো প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি। এ বছরও যাতে প্রশ্নপত্র ফাঁস না হয়, সে জন্য জোরদার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তীক্ষ্ণ গোয়েন্দা নজরদারি আছে।
দীপু মনি বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে কারা কারা বা কোন কোন পক্ষ জড়িত, তা জেনে লজ্জায় পড়তে হয়। পরীক্ষার প্রস্তুতি বাদ দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্ন খুঁজছে। অভিভাবকেরা টাকা জোগাড় করে প্রশ্নপত্র পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন। আবার পরীক্ষা শুরুর আগমুহূর্তে কেন্দ্র থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। এসব দুঃখজনক ও লজ্জাজনক।
সভায় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষা খাতে কোনো ধরনের অনিয়ম ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকলে কেউ কোনো ছাড় পাবেন না। যতটুকু কঠোর হতে হয়, ততটুকু কঠোর হব আমরা।’ তিনি বলেন, চট্টগ্রামের অনেক বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নানা উপায়ে নানাভাবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করছে। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা কোচিং-বাণিজ্যে যুক্ত আছেন।
শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য পৃথিবীর সব দেশে উল্লেখ করে চট্টগ্রাম-৯ আসনের সাংসদ মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশও ব্যতিক্রম নয়। তবে নিয়ম মেনে চলতে হবে। শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে পাঠদানে বাধ্য করলে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মতবিনিময় সভায় শিক্ষকেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জনবল-সংকট, পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট, অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার অভাব, বেতন-ভাতার সমতাকরণসহ বিভিন্ন দাবি উপস্থাপন করেন।
মাউশির মহাপরিচালক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুকের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান শাহেদা ইসলাম , মাউশির চট্টগ্রামের পরিচালক প্রদীপ চক্রবর্তী, চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষ মো. আবুল হাসান প্রমুখ। (প্রথম আলো)
বার্তা কক্ষ
২৩ জানুয়ারি,২০১৯