Home / উপজেলা সংবাদ / স্বামীর বহু পরকীয়ায় বাধা : মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে স্ত্রী
স্বামীর বহু পরকীয়ায় বাধা : মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে স্ত্রী

স্বামীর বহু পরকীয়ায় বাধা : মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে স্ত্রী

‎Sunday, ‎April ‎05, ‎2015  09:17:23 PM

শরীফুল ইসলাম, স্পেশাল করসপেন্ডেন্ট :

চাঁদপুর শহরের স্ট্র্যান্ড রোডে দুই সন্তানের জনক মুদি ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান কিরণ পরকীয়া প্রেমে মগ্ন হওয়ায় এর প্রতিবাদ করায় স্ত্রীকে শারীরিক নির্যাতন করে গুরুতর আহত করেছে। আহত স্ত্রী বর্তমানে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছে।

দীর্ঘ কয়েকদিন যাবত নির্যাতিত স্ত্রী রুবি হাসপাতালের বেডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভর্তি রয়েছে। আঘাতের ক্ষতস্থান রক্ত সঞ্চালন না হওয়ার চিকিৎসক তার শরীরে দু’বার অপারেশন করায় সে বর্তমানে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।

এই ঘটনায় স্বামী কামরুজ্জামান কিরণের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা যায়।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, চাঁদপুর স্ট্র্যান্ড রোডে হীরা পাঁচতারা ভবনের মালিক মৃত নুরুজ্জামান খানের ছেলে কামরুজ্জামান কিরণের সাথে ২০০০ সালের নভেম্বরের ২৪ তারিখে শহরে মমিনপাড়ার মৃত আঃ ছাত্তারের মেয়ে রূপমা জাহান রুবির পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়।

দাম্পত্য জীবনে তাদের পরিবারে রিজোয়ান আহম্মেদ খান রামিম (৯) ও রিফাত আহম্মেদ খান শ্রাবন (৫) নামে দুটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই স্বামী কামরুজ্জামান কিরণ স্ত্রীকে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন চালাতো। এছাড়া সে তার দোকানে আসা বিভিন্ন মেয়েদের সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রেমের ফাঁদে ফেলে শারীরিক সম্পর্কও গড়ে তোলে।

এ ব্যাপারে তার স্ত্রী তাকে প্রথমে বুঝিয়ে এই পথ থেকে ফিরে আসার অনুরোধ করে। কিন্তু তার স্ত্রীর প্রথম সন্তান গর্ভে থাকা আবস্থায় অজ্ঞাত মহিলাদের সাথে মোবাইলে কথা বলার সময় প্রতিবাদ করলে তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।

তারপর তার স্বাসী বেবি নামের এক নারীর সাথে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে বেশ ক’বার শালিশি বৈঠকেও তার সমাধান হয়নি। একের এক মহিলাদের সাথে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে স্ত্রীকে নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।

কামরুজ্জামান কিরণের সাথে ৫নং খেয়াঘাট এলাকার আরেক মহিলার সাথে অবৈধ সম্পর্কের কথা এলাকাবাসী জানতে পেরে তার পরিবারকে জানায়, এ নিয়ে সংসারে বাগবিতন্ডার সৃষ্টি হয়।

এছাড়াও হাজী মহসিন রোড়ের এক ব্যবসায়ী কনফেকশনারির মালিকের দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে পরাকিয়ার সম্পর্ক গড়ে তুলে কিরণ।

এই ঘটনা জানতে পেরে তার স্ত্রী রুবি তার শাশুরী ও ছোট দেবর কামরুল হাসান কাকনকে জানিয়ে প্রতিবাদ করলে তারা কিরণের পক্ষ নিয়ে রুবিকে পিটিয়ে আহত করে। তারপরও রুবি দুই সন্তানের কথা ভেবে স্বামীর নির্যাতন নীরবে সহ্য করে আসছিলো।

ডিসেম্বরের ২৮ তারিখ সকালে বড় ছেলে স্কুলে যাবার সময় ১শ’ টাকা চাওয়ার কারণে কিরণ ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রী রুবিকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে ঘর থেকে বের করে দেয়। রুবির ডায়বেটিস থাকায় তার ক্ষতস্থানে রক্তজমাট বেঁধে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তারপরও তার স্বামী প্রতিনিয়ত তার উপর নির্যাতন চালিয়ে যায়। তার শরীর মারাত্তক অসুস্থ হওয়ায়, স্বামী তার চিকিৎসা না করার কারণে রুবির মা ও ভাই তাকে প্রথমে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপালে ভর্তি করায়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্যে চাঁদপুর প্রিমিয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

প্রিমিয়ার হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার তার ক্ষতস্থানে রক্ত চলাচলের জন্য পরপর দু’বার অপারেশন করে। পরে আহত রুবিকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে জানা যায় সে বর্তমানে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছে।

এদিকে তার স্বামী স্ত্রী রুমানা জাহান রুবিকে তালাক দিয়ে অন্য মেয়েকে বিয়ে করার পরিকল্পনা চালিয়ে যাচ্ছে বলে রুবির পরিবার জানিয়েছে।

চাঁদপুর টাইমস : এমআরআর/এসআই/২০১৫