চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের লক্ষ্মীরচরে স্বামীর গলায় ধারালো অস্ত্র ঠেকিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করা হয়েছে স্ত্রীকে। ওই গৃহবধূকে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলার আসামিরা হলেন- একই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী মৃত ইয়াকুব গাজীর ছেলে সেলিম গাজী, ভুদাই গাজীর ছেলে বাবুল গাজী, শোবহান মল্লিকের ছেলে ফিরোজ মল্লিক, জাহাঙ্গীর প্রধানের ছেলে মোস্তফা প্রধানিয়া, শফী প্রধানিয়ার ছেলে সবুজ প্রধানিয়া ও শরফত আলী গাজীর ছেলে ফয়সাল গাজীসহ ৭-৮ জন। মুখোশ পরিহিত ছিল আরও ২ জন।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি। তবে অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশ ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছে।
ধর্ষণের শিকার গৃহবধূর স্বামী জানান, নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। ২১ জুন রোববার ভোরে ঘরের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে তার গলায় ধারালো অস্ত্র ঠেকিয়ে তার স্ত্রীকে এক এক করে ৭-৮ জন পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
ধর্ষকরা যাওয়ার সময় এ ঘটনা কাউকে জানালে গোটা পরিবারকে গুম করা হবে বলে তাকে ও তার স্ত্রীকে হুমকি দিয়ে যায়। শুধু তাই নয়, কোথাও গিয়ে যেন চিকিৎসা না নিতে পারেন সেজন্য অবরুদ্ধ করে রাখা হয় পরিবারের সবাইকে। পরে তারা চর থেকে কৌশলে পালিয়ে আসেন জেলা শহরে। বর্তমানে হুমকির কারণে ফের চরে যেতে ভয় পাচ্ছেন তিনি।
চাঁদপুর সদরের পদ্মা ও মেঘনা নদীবেষ্টিত রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের দুর্গম লক্ষ্মীরচর। শেষপর্যন্ত সোমবার রাতে কৌশলে চর থেকে পালিয়ে চাঁদপুর শহরে পৌঁছায় পরিবারটি। এ সময় সদর মডেল থানায় গিয়ে পুরো ঘটনা খুলে বলেন তারা। পরে পুলিশের সহযোগিতায় চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ওই নারীকে ভর্তি করা হয়।
সোমবার রাতে সবশেষ তথ্য অনুযায়ী এ ঘটনায় বাদীর অভিযোগটি এজহার হিসেবে গণ্য করা হয়েছে বলে মডেল থানার ওসি নাসিম উদ্দিন নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, লক্ষ্মীরচরে গত কিছু দিন ধরে গাজী ও বকাউল গোষ্ঠীর মধ্যে আধিপাত্য নিয়ে দ্বন্দ্ব এবং লুটপাট চলছে। এরমধ্যে এই দুই পক্ষের মারামারিতে গাজী বংশের লোকমান হোসেন নামে একজন মারা যান। আর সেই দ্বন্দ্বে প্রতিশোধ নিতে গাজী গোষ্ঠীর বখে যাওয়া যুবকরা নিরীহ এই পরিবারের ওপর এমন নির্যাতন করেছে।
এ বিষয়ে চাঁদপুর মডেল থানার ওসি নাসিম উদ্দিন জানান, ধর্ষণের ঘটনাটি আমরা তদন্ত করে দেখছি। যারা জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোমধ্যে অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশের ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছে। মামলাটি তদন্ত এবং আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের জন্য সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) হারুনুর রশিদকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সুজাউদৌলা রুবেল জানান, ধর্ষিতার চিকিৎসা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। নির্যাতিতার শারীরিক অবস্থা এখন বেশ স্থিতিশীল। তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে। ধর্ষণের আলামত নিশ্চিত হবে বলেও জানান তিনি।
চাঁদপুর করেসপন্ডেট,২৪ জুন ২০২০
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur