চাঁদপুর

চাঁদপুর গুলিশায় স্কুল ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার : পরিবারের দাবি হত্যাকাণ্ড

চাঁদপুর সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের গুলিশা গ্রামের ফসলি জমি থেকে ফাহিম (১৩) নামে স্কুল ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টায় ওই গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন মাঠ থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

ফাহিম দক্ষিণ গুলিশা গ্রামের দুলাল গাজীর ছেলে এবং স্থানীয় ফরক্কাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।

স্থানীয় ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ফাহিম নিখোঁজ হয়। পরিবারের লোকজন আত্মীয় স্বজন এবং বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করে পায়নি।

সন্ধ্যায় ফাহিমের মা খোঁজতে গিয়ে বাড়ির পাশে ফসলি জমিতে তার মরদেহ দেখতে পেয়ে চিৎকার করে কান্নকাটি করলে স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়।

পরে বালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম মিয়াজী চাঁদপুর মডেল থানায় সংবাদ দেয়। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

এলাকাবাসি ও পরিবারের দাবি পূর্ব শত্রুতা নিয়ে ফাহিমকে গোপনে হত্যা করেছে দুর্বত্তরা।

নিহত ফাহিমের পিতা দুলাল জানান, বৃহস্পতিবার রাতে এশার নামাজের পর থেকে ফহিমের কোন সন্ধ্যান পায়নি। তারা রাত থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত বিভিন্নস্থানে খুঁজতে থাকেন। বিকেল বেলা তার মা পারভিন বেগম তাকে খুঁজতে খুঁজতে উত্তর গুলিশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পূর্বদিকের বিলে গেলে সেখানকার একটি খালের পাশে থাকা সেচ মেশিনের কাছে বেতমুড়া ও জোপঝাঁড়ের ভেতর কাঁদাপানিতে লুকানো অবস্থায় ফাহিমের লাশ পড়ে থাকতে দেখে। পরে তার আত্মচিৎকারে লোকজন এগিয়ে গেলে ফহিমের লাশ পাওয়ার বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।

তিনি আরো জানায়, ঈদের পর ওই এলাকার সাজু ও সেলিম নামে দু’জন ব্যাক্তির সাথে পয়সা দিয়ে চান লতা খেলে ফাহিম ১৫’শ টাকা জিতে আনে। তিনি টাকা দেখে তা জানতে পেরে ছেলেকে এসব না খেলার জন্য ভারন করেন। তাই তিনি মনে করছেন বাজি খেলার ওই ১৫’শ টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব থেকে এ হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটতে পারে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সেলিম শেখ ও সাজু শেখ চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘তার সাথে আমাদের কখনো কোন খেলা হয়নি। খেলার বিষয়ে আমরা কিছুই বলতে পারবো না।’

ফাহিমের মাতা পারভিন বেগম ছেলের লাশের বর্ননা দিয়ে বলেন, আমি ছেলেকে খুঁজতে খুঁজতে গিয়ে দেখি ওইখানে খালের সেচ মেশিনের পানি যেখানে পড়ে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে ওই গর্তের বেতর কাঁদাপানির ভেতর আমার ছেলেকে মেরে পুঁতে রাখা হয়েছে। আমি আমার বা’জানরে জড়িয়ে ধরে অজ্ঞান হয়ে যাই। এসময় তার মৃতদেহে মুখে রক্তক্ষরনের দাগ দেখা যায় এবং হাত ও গলার নিচে সিগারেটের আগুনের বেশকিছু পোড়া দাগ খেতে পেয়েছি।’

বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান মোঃ তাজুল ইসলাম মিজি চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘আমি ঘটনার পরে শুনেছি ফাহিমকে রাত থেকে তার পরিবার খুঁজে পায়নি। বিকেলে সেখানে তার লাশ পাওয়ার খবর শুনে আমিও ঘটনাস্থলে গিয়ে তা দেখে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশকে খবর দিয়েছি।’

চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিতদন্ত) মাহবুবুর রহমান মোল্লা জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ময়না তদন্তের জন্য স্কুল ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করেছে। কিভাবে স্কুল ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে তদন্ত ছাড়া এখন বলা যাবে না।

প্রতিবেদক- কবির হোসেন মিজি
: আপডেট, বাংলাদেশ ১১: ৫০ পিএম, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ শুক্রবার
ডিএইচ

Share