‘বিতর্ক মানেই যুক্তি, বিজ্ঞানে মুক্তি’ এ শ্লোগানকে সামনে রেখে উৎসবমুখর ও আনন্দঘন পরিবেশে চাঁদপুর জেলার ৮ স্কুলের বিতার্কিকদের প্রাণবন্ত যুক্তিতর্ক এবং উপস্থিতিতে চাঁদপুর প্রেসক্লাবে সমকাল-বিএফএফ ‘ জাতীয় স্কুল বিজ্ঞান বিতর্ক উৎসব ২০১৮’ বুধবার (৯ মে ) সকাল ৯ টায় সম্পন্ন হয়।
এ বিতর্ক উৎসবের উদ্বোধন করেন চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. এএসএম দেলওয়ার হোসেন। বিকেলে সমাপনি পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ দলের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শওকত ওসমান।
বিতর্ক পর্বে চাঁদপুরের মাতৃপীঠ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়কে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। সেরা বক্তা হিসেবে নির্বাচিত হন রানার আপ দলের দলনেতা হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মো.তাওহিদুর রহমান।
বিতর্কে অংশ নেয়া স্কুলগুলো হচ্ছে- চাঁদপুরের মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা , হাসান আলী সরকারি , লেডী দেহলভী বালিকা , লেডী প্রতিমা মিত্র , পুরাণবাজার বালিকা , নূরিয়া পাইলট এবং গণি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়।
সমাপনি পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শওকত ওসমান বলেন,‘সমকাল যে বিতর্ক উৎসবের আয়োজন করেছে তাতে আমি তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
এ প্রাণবন্ত বিতর্কের মধ্যদিয়ে তথ্য-প্রযুক্তি সমৃদ্ধ একটি বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখতে হবে। এ বিতর্ক বিজ্ঞানকে সমৃদ্ধ করবে এবং জাতির জন্যে কল্যাণ বয়ে আনবে। ছাত্র-ছাত্রীরা আজকের এ বিতর্ক থেকে জ্ঞান নিয়ে বিজ্ঞান চর্চায় আরো উৎসাহী হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ কাল (১০ মে) বাংলাদেশের জন্যে একটি বিশেষ দিন। ওইদিন রাতে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাই উৎক্ষেপণ করা হবে। এটি আমাদের প্রিয় বাংলাদেশের জন্যে অনেক বড় একটি প্রাপ্তি এবং অর্জন।
বর্তমান সরকারে লক্ষ্য হলো উন্নত বাংলাদেশ গঠন করা। উন্নত বাংলাদেশ গঠন করতে হলে বিজ্ঞানের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের লক্ষ্য নতুন প্রজন্মের একেকজন উদ্ভাবক হবে, বিজ্ঞানী হবে। তারা রাষ্ট্রের সম্মান আরো উচ্চতায় নিয়ে যাবে।’
প্রধান অতিথি মোহাম্মদ শওকত ওসমান আরো বলেন,‘ জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার ২০০৮ সালে নির্বাচনি ইশতেহারে তথ-প্রযুক্তিকে প্রধান্য দিয়েছেন এবং ৮ বছরে তা বাস্তবায়ন করেছেন। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন তোমাদের দক্ষ নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। জাতির জন্যে কল্যাণ বয়ে আনতে হবে। যারা সফল হয়েছ তারা যোগ্যতার সাক্ষর রেখেছো আর যারা পারলে না তারা আগামি দিনের জন্য তৈরি হবে । হাতাশ হওয়ার কিছু নেই। তোমরা যতো বেশি প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে ততবেশি যোগ্যতা অর্জন করতে সক্ষম হবে।’
চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড.এএসএম দেলওয়ার হোসেন বলেন, ‘আজকের পৃথিবীকে আরো এগিয় নিতে হলে বিজ্ঞানকে সমৃদ্ধ করতে হবে।
এছাড়াও যৌক্তিক বিতর্কের মধ্যদিয়েই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। আজকে যারা অংশগ্রহণকারী তারা এ বিজ্ঞান বিষয়ক বিতর্ককে দেশব্যাপি ছড়িয়ে দিবে তাদের যুক্তির মাধ্যমে। সমকাল যে বিতর্ক উৎসবের আয়োজন করেছে এর জন্য আমি তাদের অভিনন্দন জানাই। বর্তমান সময় বিজ্ঞানের যুগ। তাই বিজ্ঞানের এ যুগে আমাদের সামাজিক বিজ্ঞান চর্চাকেও এগিয়ে নিতে হবে।’
উদ্বোধনী ও সমাপনি অনুষ্ঠানে সুহৃদ সমকাল চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি পীযূষ কান্তি রায় চৌধুরীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা আনসার কমান্ডার এএসএম আজিম উদ্দিন,জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা কাউছার আহমেদ, জেলা সহকারী তথ্য অফিসার বেলায়েত হোসেন, গণি মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রাসেল হাসান প্রমুখ।
বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন চাঁদপুর সরকারি কলেজের পদার্থবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন বাহার, রসায়ন বিদ্যা বিভাগের প্রভাষক মো. রেজাউল করিম, চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজের সিনিয়র প্রভাষক আল-আমিন ও চাঁদপুর বিতর্ক একাডেমির অধ্যক্ষ ডা.পীযূষ কান্তি বড়–য়া।
মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন বিতার্কিক শামীম হোসেন সজিব। বিতর্ক উৎসসের সমন্বয়কারী ছিলেন সমকালের চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন সুহৃদ সমাবেশের সহ-সভাপতি আবু সায়েম, সাধারণ সম্পাদক মো.খায়রুল আহছান সুফিয়ান, যুগ্ম -সম্পাদক মহিবুর রহমান, কার্যকরি সদস্য বিপুল চক্রবর্তী।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান শিক্ষক আব্বাস উদ্দিন, হাছান আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো.মহসিন মিয়া, মাতৃপীঠ সরকারি বালিকার সহকারী শিক্ষক মামুন দেওয়ান, নুরিয়া পাইলটের সহকারী শিক্ষক মো. মানছুর আহমেদ, বাবুরহাট স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক মো.মাসুদুর রহমান, লেডী প্রতিমা মিত্র বালিকার সহকারী শিক্ষক আকতারুন নেছা প্রমুখ।
প্রতিবেদক : আশিক বিন রহিম
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৮:১০ পিএম,৯ মে ২০১৮,বুধবার
এজি