চাঁদপুর

চাঁদপুরে সপ্তাহব্যাপী পুলিশের অভিযানে অবৈধ ১৪৯ গাড়ির অর্থদণ্ড

চাঁদপুরে অবৈধ মোটর সাইকেল, সিএনজি ও অন্যান্য যানবাহনের উপর পুলিশ সুপার শামসুন্নাহারের বিশেষ নির্দেশনায় গত ২৯ নভেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭ দিন ব্যাপী জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্পটে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।

এতে ১৪৯ টি মোটর যান জব্দ করে ট্রাফিক আইনে অর্থদ- প্রদান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাঁদপুর পুলিশ বিভাগ।

চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজার-নতুনবাজার সেতুর রাস্তার মাথায় ওয়ারল্যাস, বঙ্গবন্ধু সড়কের পূর্ব মাথায় ও বাবুরহাটসহ পুরো জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রাত-দিন এসব অভিযান পরিচালনা করা হয়।

চাঁদপুর মডেল থানায় টিআই আব্দুর রহমান, টিএসআই খলিল, সার্জেন নাহিয়ান থানার এসআই জাকির ও সেলিম অভিযান পরিচালনা করেন।

একই পদ্ধতিতে চাঁদপুরের বাকী ৭টি থানার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়।

৭ দিনের অভিযানে ব্যাপক সাড়া পড়ে। রাস্তায় মোটর সাইকেলের সংখ্যা অনেকটা কমে যায় এবং অনেকেই ইতোমধ্যে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও হয়রানী থেক্তে মুক্ত থাকতে বিআরটিসি অফিস ও স্ব-স্ব গাড়ির কোম্পানী অনুমোদিত শো-রুমে রেজিস্ট্রেশনের জন্য যোগাযোগের চেষ্টা করছেন।

পুলিশ জানায়, লাইসেন্সবিহীন মটর সাইকেল, সিএনজি স্কুটার ও হেলমেট ছাড়া মটর সাইকেল চালানোর কারণে অভিযানে মোটর সাইকেল জব্দ করতে সক্ষম হয়। ইদানিংকালে মটর সাইকেল আরোহী হয়ে বিভিন্ন অপকর্ম সংঘটিত করছে। এছাড়া দেশের সীমান্ত এলাকা দিয়ে প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে মটর সাইকেল (টানা গাড়ি) প্রবেশ করছে। আর এসব মটর সাইকেলে পুরো জেলা সয়লাব হয়ে গেছে। তাই এদেরকে আইনের আওতায় আনতে এ অভিযান পরিচালিত হয়েছিল। বিষয়টিতে ব্যাপক সাড়া পড়েছিলো।

মোটরযানের উপর এ অভিযানে বিশেষ করে অবৈধ মোটর সাইকেল চিহ্নিত করতে ৭ দিনের বিশেষ অভিযান কেমন সাড়া পড়েছে জানতে চাইলে চাঁদপুরের ডিআইওয়ান (ডিএসবি) মনিরুজ্জামান চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘৭ দিনের বিশেষ অভিযানে ব্যাপক সাড়া পড়েছে, রাস্তায় টানা গাড়ির (চোরাই গাড়ী) চলাচল ও আমাদানি কমেছে।

তবে তিনি বিষয়টির জন্য দেশের আইনের সংশোধনের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘রেজিস্ট্রেশনবিহীন মোটর সাইকেলের সংখ্যা কমে যেতো, যদি মোটর সাইকেলের শো-রুমগুলোকে যদি এই আইনের আওতায় আনা যেতো। আইন সংশোধন করে গাড়ীর শো-রুমগুলোকে রেজিস্ট্রেশন শর্তারোপ করা গেলে, তাদের গাড়ীর লেনদেনের সময় রেজিস্ট্রেশনের ফি যুক্ত করা গেলে অথবা কিস্তিতিতে মূল্য পরিশোধের সময় প্রথম কিস্তিটি রেজিস্ট্রেশন ফি হিসেবে ধরা হলে রাস্তায় বৈধ গাড়ীর সংখ্যা বেশি থাকতো।’

তিনি আরো জানান, ‘চাঁদপুরে টানা গড়ির (চোরাই গাড়ী) সংখ্যা আগের তুলনায় অনেকে কমেছে, অভিযান অব্যহত থাকবে। বৈধভাবে অনেকেই মোটর সাইকেল চালাতে চাচ্ছেন, কিন্তু প্রথমেই শো-রুম থেকে গাড়ী ক্রয় করার সময় অনেকটাই অনুৎসাহিত হয়ে থাকেন। হয়তো অনেকেই ধারণা করেন, নাম্বার ছাড়া চলতেছে তো! সমস্যা তো হচ্ছে না।’

অভিযানের পূর্বে চাঁদপুর পুলিশ সুপারের নিদের্শনাসমূহ ছিল হেলমেট ছাড়া কোন চালক মোটরসাইকেল চালাতে পারবে না। চালকসহ দু’জনের অতিরিক্ত মোটর সাইকেলে আরোহন করা যাবে না। চালক এবং মোটরসাইকেল আরোহনকারী উভয়কেই হেলমেট ব্যবহার করতে হবে। মোটর সাইকেলের সামনে কোন শিশুকে বহন করা যাবে না। শহর এলাকায় মোটরসাইকেলের গতিবেগ ঘন্টায় সর্বোচ্চ ১৮-২০ কিলোমিটার। শহরের বাইরে অন্যান্য এলাকায় গতিবেগ ঘন্টায় সর্বোচ্চ ৩০-৩৫ কিলোমিটার। চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স ও মোটর সাইকেল কাগজপত্র সংগে থাকতে হবে। ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং মোটরসাইকেলের কাগজপত্র ছাড়া গাড়ী চালানা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

অবৈধ যানবাহন দুরীকরণ ও সরকারি রাজস্ব আয়ের বৃহৎ একটি খাতকে সক্রিয় করতে প্রশাসনের অভিযানের পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধিসহ শো-রুমগুলোকেও এই আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি সচেতনমহলের।’

দেলোয়ার হোসাইন

।। আপডেট : ০২:২০ এএম, ১০ ডিসেম্বর ২০১৫, বৃহস্পতিবার
ডিএইচ

Share