কিছুদিন কথা বলার পর লিলুফা বেগমের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান চাঁদপুরের দেলোয়ার মিজি। বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন লিলুফা। বিয়েতে রাজিও হন দেলোয়ার। কিন্তু উদ্দেশ্য ছিল ভিন্ন। বিয়ের কথা বলে চাঁদপুর থেকে লঞ্চে করে ঢাকায় আসার পথে কৌশলে খুন করেন লিলুফাকে। এর ১০ দিনের মাথায় চলে যান ব্রুনেই।
গত ২২ সেপ্টেম্বর ব্রুনেই থেকে ফিরলে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এরপর তাঁকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
বৃহস্পতিবার পিবিআই প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন পিবিআইয়ের প্রধান অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক বনজ কুমার মজুমদার।
পিবিআইয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, খুনের চার বছর পর বিদেশে বসে লিলুফা হত্যা মামলার অগ্রগতি জানতে ভাগনেকে ফোন করেন দেলোয়ার। শুধু তাই নয়, ঘটনাস্থল ত্যাগ করার আগে প্রতিবেশীকে ফাঁসাতে লঞ্চের বুকিং রেজিস্ট্রারে জাহাঙ্গীরের নাম লিখে এর পাশে লিলুফার মুঠোফোন নম্বর লিখে দেন।
২০১৯ সালের ১৬ জুন ঢাকার সদরঘাটগামী মিতালি-৭ লঞ্চের কেবিনে খুন হন লিলুফা। এ ঘটনায় তাঁর ভাই বাদী হয়ে কেরানীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এরপর থানা-পুলিশের প্রায় এক মাসের তদন্তের পর মামলাটি পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
পিবিআইয়ের প্রধান বলেন, লিলুফা ও দেলোয়ার চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ থানার মোল্লাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা। ২০১৫ সালে লিলুফার স্বামী মারা যান। এক সময় লিলুফার বাসায় ফার্নিচারের কাজ করে দিয়েছিলেন দেলোয়ার। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দেলোয়ারের স্ত্রী ও মেয়ে রয়েছেন। এর মধ্যে দেলোয়ারের মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়।
বনজ কুমার মজুমদার বলেন, ‘শুরুতে জাহাঙ্গীরকে সন্দেহ করেই মামলার তদন্ত শুরু হয়। কিন্তু এ ঘটনায় জাহাঙ্গীরের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। পরে নতুন কৌশল নেয় পিবিআই। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে দেলোয়ারের সংশ্লিষ্টতা পেয়ে পিবিআই ইমিগ্রেশন পুলিশকে জানায়। দেলোয়ার দেশে আসা মাত্রই ইমিগ্রেশন পুলিশের সহায়তায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই।’
টাইমস ডেস্ক/১৩ অক্টোবর ২০২৩