Home / চাঁদপুর / চাঁদপুরে যুবলীগ কর্মী বাবু হত্যার বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন  
যুবলীগ

চাঁদপুরে যুবলীগ কর্মী বাবু হত্যার বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন  

চাঁদপুরের মতলব উত্তরে মোহনপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কর্তৃক আয়োজিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে ৬নং ওয়ার্ড (বাহাদুরপুর গ্রাম) থেকে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের ওপর সমাবেশে যাওয়ার পথে কাজী মিজান গংদের সরাসরি গুলিতে নির্মমভাবে হত্যাকান্ডের শিকার যুবলীগ কর্মী মোবারক হোসেন বাবু হত্যার বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে নিহতের পরিবার।

৩ জুলাই সোমবার বিকেলে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের ৩য় তলায় সংবাদ সম্মেলনে পরিবারের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহতের ভাই ও মামলার বাদী আমির হোসেন কালু।

লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, চলতি বছরের ১৭ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে মোহনপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ কর্তৃক মাথাভাঙ্গা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। উক্ত সমাবেশে যোগদানের লক্ষে বাবু যখন লোকজন নিয়ে জড়ো হয় তখন হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সকল আসামী একযোগ হয়ে সমাবেশে যেতে বাঁধা প্রদান করে, বাধা অতিক্রম করে মিছিল সহকারে বাবু যেতে চাইলে কাজী মিজানেরর উপস্থিতিতে তার সরাসরি হুকুমে কাজি মতিন, কাজি হাবিব, রাজ্জাক প্রধান ওরফে কাইল্লা, বাবুল মেম্বার, শরীফ ঢালী, নূরু, ছোবহান, সুজন, ইব্রাহিম হত্যার উদ্দেশ্যে উপর্যুপরি গুলি করতে থাকে। পরে বাবু মাটিতে লুটিয়ে পররে অন্যান্য আসামীরা দা, ছেনা ও লাঠি দিয়ে আঘাত করে। মুমুর্ষ অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করলে সকল আসামী ইট পাটকেল মারতে থাকে তখন ভাতিজা ইমরান কে হত্যার উদ্দেশ্যে শাজাহান মাঝি, শহিদ, শাহআলম সর্দার, বিল্লাল তফাদার শর্টগান দিয়ে গুলি করে থাকে। আসামীদের কবল থেকে ভাতিজা ইমরান উদ্ধারে এগিয়ে আসলে আসামিরা জহির কবিরাজ, বাদল, লনি শিকদার এবং জসিম সরকারকে আহত করে। মৃত বাবুর শরীরে আসামিরা ৬৮টি শর্টগানের গুলি চালায়। আর ভাতিজা ইমরানের শরীরে ৩২ টি গুলি লাগে। কাজী মিজান ১৭ জুন উপস্থিত থেকে তার নির্দেশে বাবুকে হত্যার মধ্য দিয়ে লাশ ফেলার ইচ্ছা পূরণ করেছেন। ১৬ জুন বাহাদুরপুরে তার সমর্থকদের মধ্যে ৫ লক্ষ টাকা বিতরণ করেছেন।

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে আমির হোসেন কালু বলেন, আসামীদের নিয়ে কাজি মিজান গোপন মিটিং করেছেন। আর যে ভিডিও ফুটেজ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে তা এডিট করা। স্কুল মাঠে কাজি মিজান স্বশরীরে উপস্থিত ছিলেন।

সোমবার সকালে বন্ধু মনির মোল্লাসহ মটর সাইকেলে করে চাঁদপুরে আসার পথে ৪ থেকে ৫টি মটর সাইকেলে করে লোকজন আমাদের উপর হামলা করে। পরে আমি পালিয়ে গিয়ে রক্ষা পেলেও মনির ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়। আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। যে কোন সময় আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের হত্যা করা হবে। আমি আপনাদের মাদ্যমে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করি।

তিনি আরও বলেন, হত্যাকান্ডের ১৬ দিন অতিবাহিত হলেও ঘটনার সাথে জড়িত কাজি মতিন, কাজি হাবিব, নুরু, কাইল্লা, শরীফ ঢালীসহ বেশীর ভাগ আসামিরা ধরাছোয়ার বাহিরে। কাজি মিজান এর আগেও ২০২১ সালে আমিসহ আমার গ্রামের অনেক মানুষকে গুলি করে মারার চেষ্টা করেছেন তা সকলে অবহিত। এ বিষয়ে জি আর ১৪১/২০২১ মামলাটি আদালতে চলমান এবং ইতো মধ্যে উক্ত মামলায় কাজি মিজানের একদিনের রিমান্ড হয়েছে।

বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ, সাবেক সভাপতি কাজী শাহাদাত, শহীদ পাটওয়ারী, বিএম হান্নান,রশরীফ চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশা, সাংবাদিক শওকত আলী, শাহাদাত হোসেন শান্ত, জাকির হোসেন, মনওয়ার কানন, রফিকুল ইসলাম বাবু, তাড়হা জোবায়ের, নজরুল ইসলাম আতিক।

এ সময় নিহতের মা রওশন আরা, স্ত্রী আমেনা বেগম, ছেলে ইমন, ইমরান, মেয়ে রিমা, বোন আম্বিয়া, মদিনাসহ জাতীয় ও স্থানীয় বিভিন্ন গনমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিবেদক: মাজহারুল ইসলাম অনিক, ০৩ জুলাই ২০২৩