নানা উৎকণ্ঠা ও ব্যাপক ভয় ও আতংকের মধ্যদিয়ে পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘুর্ণিঝড় ‘মোরা’ দুর্বল হয়ে পড়েছে।
ঝড়ো প্রভাবে দেশের বিভিন্ন জেলা ক্ষয়ক্ষতি হলেও চাঁদপুরে এর তেমন একটা প্রভাব পরেনি এবং বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। তবে সোমবার রাত থেকে শুরু হওয়া গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্ঠি মঙ্গলবার দিনভর চলতে থাকে।
এতে জনজীবন অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়ে। ব্যহত হয় কর্মজীবী সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। চাঁদপুরের আবহাওয়ার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জেলা আবহওয়া অফিসের মোবাইল নাংম্বারে (০১৭৮৯৬৭৫৭৩৬) একাধিকবার ফোন করলেও ওপর প্রান্ত থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
তবে মঙ্গলবার (৩০ মে) ঢাকা আবহওয়া অফিসের সর্বশেষ তথ্যে জানা যায়, প্রবল ঘূর্ণিঝড় ’মোরা’ উপকূল অতিক্রম করে উত্তরদিকে অগ্রসর হয়ে সকাল ০৬ টা থেকে দুপুর ১২ টার মধে ‘কুতুবদিয়ার -কক্সবাজার- চটধগ্রাম উপকূল অক্রিম করে দুর্বল হয়ে পড়েছে।
এর রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত খবরে এটি স্থল গভীর নি¤œচাপ আকারে রাঙামাটি ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝরের প্রভাবে গভীর নি¤œচাপটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে বৃষ্টি ঝরিয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। গভীর নি¤œচাপটির প্রভাবে উত্তর বঙোপসাগর এলাকায় বায়ুচাপের পার্থর্কের আধিক বিরাজ করছে।
উত্তর বঙোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদধ বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া সহ বৃষ্টি/বর্জসহ বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। আবহাওয়া অফিস সূত্রে আরো জানা যায়, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরসমূহকে ১০ (দশ) নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ (তিন) বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এদিকে মঙ্গলবার চাঁদপুর শহরের লঞ্চঘাট, বাস স্টেশন ও রেল স্টেশনগুলো ঘুরে প্রয়োজনের তাগীদে কর্মস্থল ও ঘরমুখো যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ লক্ষ্য করা গেছে। তবে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে আটকা পড়া শতাধিক যাত্রীকে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে শুকনো খাবার তিতরণ করতে দেখা গেছে।
অপরদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ কারণে যে কোনো ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে সোমবার দুপুর থেকেই চাঁদপুরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মহাবিপদ সংকেত জারি করা হয়েছিলো। এছাড়াও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রকার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। যার ফলে পূর্ব থেকে প্রস্তুতি নেয়ায় চাঁদপুরবাসীকে বড় ধরনের কোনো দূর্ঘটনার সম্মুক্ষিণ হতে হয়নি বলে ধারণা করছে সচেতন মহল।
চাঁদপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ঘুর্ণিঝর ‘মোড়া’ মোকাবেলা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাঁদপুরের ১৮টি চরাঞ্চলে ১১৭টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছিলো। এছাড়াও এসব চরাঞ্চলের ৫ লক্ষাধিক লোককে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক ও জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. আব্দুস সবুর মন্ডল বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি ও স্ব-স্ব দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি, নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ড, বিদ্যুৎ বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস, রেড ক্রিসেন্টসহ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে তৎপর থাকার নির্দেশ দেন। এছাড়াও দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়।
আশিক বিন রহিম
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৪: ০০ এএম, ৩১ মে ২০১৭, বুধবার
ডিএইচ