চাঁদপুরে মেয়রসহ ১৬ জনপ্রতিনিধি আত্মগোপনে, নাগরিক সেবা ব্যাহত

চাঁদপুর জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সদর উপজেলার ১৪ ইউনিয়ন পরিষদসহ ১৬ জনপ্রতিনিধি ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগের পর আত্মগোপনে রয়েছেন। তবে লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ওই দিন সন্ধ্যায় গণপিটুনিতে নিহত হন।

এসব জনপ্রতিনিধির বিষয়ে নানা গুঞ্জন থাকলেও তাদের দপ্তরে গিয়ে তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি। এর ফলে তাদের অনুপস্থিতিতে
নাগরিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

গত তিন দিন ধরে সদর উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সদরের বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে চেয়ারম্যানদের কক্ষ তালাবদ্ধ দেখা যায়। ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত একাধিক প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানান, চেয়ারম্যানরা নিরাপদ অবস্থানে আছেন বলে জানান।

গত ৫ আগস্টের পর আত্মগোপনে আছেন চাঁদপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ওচমান গণি পাটওয়ারী, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির সুমন ও পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান জুয়েল।

এছাড়া আত্মগোপনে আছেন- বিষ্ণুপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. নাছির উদ্দিন খান শামিম, আশিকাটি ইউপি চেয়ারম্যান মো. বিল্লাল হোসেন পাটওয়ারী, কল্যাণপুর ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন রনি, শাহমাহমুদপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান নান্টু, রামপুর ইউপি চেয়ারম্যান আল-মামুন পাটওয়ারী, মৈশাদি ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম পাটওয়ারী, তরপুরচন্ডী ইউপি চেয়ারম্যান ইমাম হাসান রাসেল, বাগাদী ইউপি চেয়ারম্যান মো. বেলায়েত হোসেন বিল্লাল, বালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল্যা পাটওয়ারী, লক্ষিপুর মডেল ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খান (গণপিটুনিতে নিহত), ইব্রাহীমপুর ইউপি চেয়ারম্যান হাজী আবুল কাশেম খান, চান্দ্রা ইউপি চেয়ারম্যান খান জাহান আলী কালু পাটওয়ারী, হানারচর ইউপি চেয়ারম্যান ছাত্তার রাঢ়ী ও রাজরাজেশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান হাজী হজরত আলী ব্যাপারী।

বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা তাছলিমা আক্তার বলেন, ৫ আগস্টের পর চেয়ারম্যান পরিষদে আসেননি। আমরা সেবামূলক কাজ প্রস্তুত করে রেখেছি; কিন্তু উনার স্বাক্ষর ছাড়া দিতে পারছি না।

আশিকাটি ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবু বকর মানিক বলেন, শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর আমাদের পরিষদে ভাঙচুর হয়েছে। এরপর থেকে চেয়ারম্যান আত্মগোপনে আছেন। পরিষদে আসেন না।

চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাখাওয়াত জামিল সৈকত বলেন, ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে সেবা প্রত্যাশীরা যাতে কোনো দুর্ভোগে না পড়েন সেই বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যেসব জনপ্রতিনিধি উপস্থিত নেই তাদের বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

এদিকে চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র ৫ আগস্টের আগে থেকেই আত্মগোপনে এবং তার বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। মেয়রের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরও বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে পৌরসভার জরুরি সেবামূলক কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে অফিস সূত্রে জানা গেছে।

স্টাফ করেসপন্ডেট, ১৫ আগস্ট ২০২৪

Share