স্টাফ রিপোর্টার ॥ সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুরেও হিন্দু সম্প্রদায়ের মহাঅষ্টমী স্নান ধর্মীয় ভাবগাম্ভির্জের মধ্য দিয়ে উদ্যাপিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) ভোর রাত থেকে অষ্টমীস্নানের কার্যক্রম শুরু হয়, তা চলে সারা দিন পর্যন্ত।
ভোর থেকে মহাঅষ্টমীর স্নান করতে চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে সনাতন ধর্মাবলম্ভীর হাজার হাজার নর-নারীরা চাঁদপুরের পুরান বাজার হরিসভা মন্দির এলাকার মেঘনা নদীর তীরে ভীড় জমাতে থাকে।
পূণ্যার্থীরা মন্ত্র উচ্চারণের মধ্য দিয়ে জগতের যাবতীয় সংকীর্ণতা ও পঙ্কিলতার আবরনে ঘেরা জীবন থেকে পাপ মুক্তির বাসনায় মেঘনা নদীর প্রতি মুক্তির বাসনায় প্রতি বছরের ন্যায় মহাঅষ্টমী স্নান করতে এই পূর্ণস্থানে এসেছে।
সকাল সাড়ে ৯টায় চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ অষ্টমী স্থান এলাকা পরিদর্শন করেন।
এ সময় তিনি ভক্তদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। আমরা সকল সম্প্রদায়ের মানুষ সকল ধর্মের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে থাকি। স্বাধীন দেশ পরিচালিত হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারের মাধ্যমে কিন্তু একটি উগ্রবাদী ধর্মান্ধ চক্র দেশে জঙ্গিবাদ কায়েম করার চেষ্টা করছে। আমরা সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে এ জঙ্গিদের স্ব-স্ব ধর্মানুযায়ী প্রতিহত করব।’
তিনি ভক্তদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আজকে বৈরী আবহাওয়া থাকায় মেঘনা নদীর পাড়ি উত্তাল হয়ে উঠেছে। এরমধ্যেও সনাতন ধর্মের নারী-পুরুষ পূর্ণতা অর্জনে এ স্থানে এসে অষ্টমী ¯œান করছে। আমি তাদের সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনা করছি।’
এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাস্ট্রি ও অষ্টমী ¯œান উদ্যাপন কমিটির সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায়, চেম্বার অব কমাার্সের পরিচালক তমাল কুমার ঘোষ।
পরিচালনা করেন জেলা জন্মাষ্টমী উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি গোপাল সাহা।
আরো উপস্থিত ছিলেন, চাঁদপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র ছিদ্দিকুর রহমান ঢালী, সম্ভুনাথ সাহা, কানাই পোদ্দার, পুরাণবাজার পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই জাহাঙ্গীর আলম, চাঁদপুর মডেল থানার এসআই বাপন চক্রবর্তী, পুলিশ সুপার কার্যালয়ের নারী কর্নারের এসআই আজমেরী বেগম প্রমুখ। এ সময় পূণ্যার্থীরা স্নানমন্ত্র পাঠপূর্বক নিজ নিজ ইচ্ছা অনুযায়ী ফুল, বেলপাতা, ধান দুর্বা, হরীতকি, ফল-ফলাদি, আম্ল ইত্যাদি নিয়ে পিতৃ ও মাতৃকুলে অর্পণ করে।
চাঁদপুর জেলায় ঐতিহ্যবাহী পুরাণবাজার হরিসভা মদন মোহন মন্দির সংলগ্ন মেঘনা নদীর অববাহিকায় প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও চৈত্র মাসের অষ্টমী তিথিতে সনাতন ধর্মীয় এ স্নান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সকাল থেকে চাঁদপুর শহর ছাড়াও জেলার বাকী ৭টি উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী নোয়াখালী, রায়পুর, লক্ষ্মীপুর এলাকার নর-নারীরা সিএনজি স্কুটার ও মাইক্রোবাসযোগে ভোর রাত থেকে চাঁদপুরে আসতে শুরু করে।
পূর্ণস্নান শেষে তারা পুণরায় স্ব-স্ব গন্তব্যে ফিরে যায়। সনাতন ধর্মীয় অষ্টমী স্নান উপলক্ষে মদন মোহন মন্দির ও সড়কের দু’পাশে বসেছিলো শিশু-কিশোরদের জন্য মেলা। যে যার সাধ্যমত মহাপ্রভুর নামে দান করেছে।
ভক্তদের জন্য ইসকন মন্দির, হরিসভা মন্দির, রামঠাকুর দোল প্রাঙ্গণ ও লোকনাথ মন্দির প্রসাদ বিতরণ করেছে।
প্রতিবেদক- মাজহারুল ইসলাম অনিক
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১১: ৩৩ পিএম, ৪ এপ্রিল ২০১৭, মঙ্গলবার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur