চাঁদপুরের হানারচর এলাকায় দেখা দিয়েছে মেঘনা নদীর ভাঙন। ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি, বসতঘর, গাছপালাসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। ভাঙনরোধে কর্তৃপক্ষের কার্যকর কোন ভূমিকা দেখা যায়নি।
দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে এই বর্ষাতেই দেশের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে পারে ওই এলাকাটি। মেঘনার ভাঙন থেকে বাপ-দাদার শেষ সম্বলটুকু জরুরী ভিত্তিতে রক্ষার দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা।
যদিও কর্তৃপক্ষ বলছে, ভাঙনরোধে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ হাতে নিয়েছেন।
সোমবার সরেজমিন চাঁদপুর সদর উপজেলার হানারচর এলাকায় দেখা যায়, স্রোত ও নদীর ঢেউয়ে ভাঙছে নদীর পাড়। হানারচর এলাকার গোবিন্দিয়া গ্রাম থেকে আখনের হাট পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙনের তীব্রতা দেখা দিয়েছে। ইতমধ্যে এই এলাকার বিভিন্ন স্থানে ২শ’ থেকে ৩শ’ মিটার জায়গা নদীগর্ভে চলে গেছে।
ইতোমধ্যে নদীভাঙনের শিকার হয়ে ভিটেমাটি হারিয়েছে ওই এলাকায় বসবাসকারী হালদার বাড়ি, সরকার বাড়ি, বেপারী বাড়ি, আখন্দ বাড়ি, দেওয়ান বাড়িসহ অনেক পরিবারের সদস্যরা। ভাঙন আতংকে বসতঘর সরিয়ে নিয়েছে অনেক স্থানীয় লোকজন।
দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় নদীভাঙন চললেও নেয়া হচ্ছে না কোনো ধরনের ব্যবস্থা। ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি, বসতঘর, গাছপালা। ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে বেড়িবাঁধ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, বসতঘর, ফসলি জমি, গাছপালাসহ অন্যান্য স্থাপনা।
গোবিন্দিয়া গ্রামের বাসিন্দা আ. রহমান জমাদার, মো. জহিরুল ইসলাম, মো. জাহাঙ্গীর, এবিএম তারেক আলম বলেন, চাঁদপুর শহর থেকে হাইমচর উপজেলা পর্যন্ত মেঘনা নদীর ভাঙনরোধে নদীর পাড়ে ব্লক ও জিও ব্যাগ ভর্তি বালি ফেলা হয়েছে।
কিন্তু অজ্ঞাত কারণবসত আমাদের এই অঞ্চলে কোন কাজ করা হচ্ছে না। গত বর্ষায়ও আমাদের এলাকা নদী ভাঙনে শিকার হয়েছে। তখন উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তার ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে গেছেন। কিন্তু ভাঙনরোধে এখনো পর্যন্ত কোন কাজ করা হয়নি।
এই বর্ষার শুরুতে যদি দ্রুত কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করা না হয় তাহলে আমাদের বাপ-দাদার বসতভিটা নদী গর্ভে হারিয়ে যাবে। আমাদের মাথা গোজার কোন ঠাই থাকবে না।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান বলেন, মেঘনা নদীর ভাঙন থেকে চাঁদপুরবাসীকে রক্ষা করতে সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে নদীভানরোধ করেছে।
কিন্তু হানারচর এলাকার গোবিন্দিয়া গ্রাম থেকে আখনের হাট পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। এখনই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে অচিরেই নদীতে বিলীন হয়ে যাবে ওই এলাকার জনপদ। তাই ওই এলাকায় মেঘনা নদীর ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর আবেদন জানাচ্ছি।
চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. বাবুল আখতার বলেন, হানার চর এলাকায় মেঘনার ভাঙন রোধে চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এই সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা ইতমধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। চূড়ান্ত অনুমোদন পেলেই ভাঙন রোধে দ্রুত কার্যক্রম শুরু করা হবে।
করেসপন্ডেন্ট, ২৪ মে ২০২০