চাঁদপুর

চাঁদপুরে মুখোমুখি অবস্থানে জেলা বিএনপির দু’গ্রুপ!

বিএনপির কেন্দ্রিয় নেতাদের উপস্থিতিতে সাংগঠনিক সভার আয়োজনকে ঘিরে চাঁদপুরে মুখোমুখি অবস্থানে জেলা বিএনপির দু’গ্রুপ। এ নিয়ে পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচিও ঘোষণা  করা হয়েছে।

বাংলা নববর্ষের আগের দিন শুক্রবার (১৩ এপ্রিল) চাঁদপুর প্রেসক্লাবে সভা আয়োজনের অনুমতি চেয়ে এরইমধ্যে চাঁদপুর পুলিশ সুপার বরাবর আবেদনও করেছে উভয় গ্রুপ। সভা সফল করতে বুধবার (১১ এপ্রিল) প্রস্তুতি সভা করার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে আবেদনে।

একই স্থানে সভা আয়োজনের অনুমতি চেয়ে একদিকে জেলা বিএনপির আহবায়ক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের পক্ষে আবেদন পত্রে স্বাক্ষর করেছেন জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক অ্যাড. সলিমুল্লাহ সেলিম।

অন্যদিকে সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এহসানুল হক মিলন ও সাবেক এমপি লায়ন হারুন, জিএম ফজলুল হক, রাশেদা বেগম হীরা এবং জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হকসহ কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটির সদস্যদের সমন্নয়ে কেন্দ্রিয় নির্বাহী সদস্য ও সাবেক পৌর মেয়র শফিকুর রহমান ভুইয়ার পক্ষে আবেদন পত্রে স্বাক্ষর করেছেন জেলা বিএনপির আরেক যুগ্ম আহবায়ক কাজী গোলাম মোস্তফা।

জেলা বিএনপির এ সাংগঠনিক সভায় উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে বিএনপির কেন্দ্রিয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও কেন্দ্রিয় প্রতিনিধি দলের প্রধান গোলাম আকবর খন্দকার।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং দলকে সুসংগঠিত করার লক্ষে স্থানীয় সাবেক ও বর্তমান সকল নেতা-কর্মীদের সমন্নয়ে কেন্দ্র ঘোষিত এ সাংগঠনিক সভা করার সিদ্ধান্ত হয়েছিলো গত ৩০ মার্চ গুলশান কার্যালয়ে। ওই সভায় জেলা বিএনপির আহবায়ক, নির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ ও সাবেক এমপিদের উপস্থিতিতে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন কেন্দ্রিয় প্রতিনিধি দলের প্রধান গোলাম আকবর খন্দকার।

দলীয় এমন সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে এরইমধ্যে দু’গ্রুপ বিভক্ত হয়ে একই দিনে একই স্থানে সভার আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ।

এমন একটি দিনে বিএনপির এ সভার আয়োজন চলছে, যার পরদিন ১৪ এপ্রিল বাঙ্গালীর অন্যতম সেরা উৎসব পহেলা বৈশাখ। এ দিনে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের পূর্ব ঘোষিত বিভিন্ন কর্মসূচী রয়েছে। ঠিক তার আগের দিনে জেলা বিএনপির দু’গ্রুপ দলীয় সভা আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। জেলা বিএনপির দলীয় অন্তকোন্দলে এ সভাকে ঘিরে ঘটে যেতে পারে যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা।

এমন সঙ্কায় সভা আয়োজনে পুলিশ কাউকে অনুমতি দেবে কিনা, তা জানতে চাইলে চাঁদপুর জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা (ডিএসবি) ডিআইও-১ চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘পহেলা বৈশাখ (১৪ এপ্রিল) এর আগে এ ধরণের কোনো সভার অনুমতি দেয়া হয়নি।’

এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক অ্যাড. সলিমুল্লাহ সেলিম বলেন, ‘আমরা পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন করেছি এবং তিনি আমাদেরকে মৌখিক অনুমতিও দিয়েছেন,।

একই দিনে একই স্থানে জেলা বিএনপির দু’গ্রুপের সভা করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিএনপি একটা, যারা গ্রুপিং করে তারা বিএনপি নয়।’

অপরদিকে কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক পৌর মেয়র শফিকুর রহমান ভুইয়া চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘যেহেতু জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই এ কমিটির কোনো সভায় আমরা যাবো না। আর কেন্দ্রিয় নেতৃবৃন্দ চাঁদপুরে কোনো প্রোগ্রামে আসতে হলে আমাদের প্রোগ্রামেই আসতে হবে।’

পুলিশ আপনাদের প্রোগ্রাম করার অনুমতি দিয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পহেলা বৈশাখের আগে কোনো প্রোগ্রাম করা যাবে না বলে পুলিশ আমাদেরকে জানিয়েছে।’

জেলা বিএনপির সিনিয়র নেতাদের বিভক্ত হয়ে একই দিনে একই স্থানে সভা আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়ে নেতাকর্মীদের দাওয়াতপত্র দেয়া হচ্ছে। এমতাবস্থায় ঐদিন একই স্থানে সভা করাকে কেন্দ্র করে বড় ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্য়কায় রয়েছে সাধারণ নেতাকর্মীরা।

চাঁদপুর টাইমস রিপোর্ট

Share