চাঁদপুরে মার্শাল আর্টের প্রতি আগ্রহ শিশুদেরই বেশি

আত্মরক্ষায় চাঁদপুরে মার্শাল আর্টের প্রতি দিনদিন আগ্রহ বাড়ছে শিশুদের। আর তাই পরিবারের অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার পাশাপাশি নিয়মিত মার্শাল আর্ট শেখাতে নিয়ে যাচ্ছেন জেলা কারাতে একাডেমি পরিচালিত চাঁদপুর সোতোকান কারাতে সেন্টারে।

সোতোকান কারাতে সেন্টারের প্রধান প্রশিক্ষক মাস্টার জসিম গাজী জানান, ২০১৭ সাল থেকে ডিএন হাই স্কুল মাঠে ২৫জন শিক্ষার্থী নিয়ে আমাদের কারাতে সেন্টারের শুরু হয়। বর্তমানে এখানে সব বয়সী ৪০০ নারী পুরুষ ও শিশু কারাতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। তবে এখন আমরা চাঁদপুর স্টেডিয়ামের ভিআইপি প্যাভিলিয়নের বারান্দায় প্রতি সপ্তাহের মঙ্গল,শুক্র ও শনিবার ২ ঘন্টা করে ৫ বছরের বাচ্চা থেকে শুরু করে ৫০ বছর পর্যন্ত নারী পুরুষ ও শিশুদের মার্শাল আর্টের কলা কৌশল প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ কারাতে ফেডাশেন আয়োজিত প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে আমার প্রতিষ্ঠানের ২০জন ছেলে মেয়ে ব্ল্যাকবেল্ট অর্জন করেছে। আমরা এসব ব্ল্যাকবেল্ট প্রাপ্তদের সহযোগিতা নিয়ে নতুন ভর্তিকৃত ছোট বড় ছেলে মেয়েদের মান বুঝে গ্রুপ ভিত্তিক প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছি। প্রতি চার মাস অন্তর অন্তর আমরা এসব প্রশিক্ষনার্থীদের কিউ টেস্ট নিয়ে পর্যায়ক্রমে বেল্ট এবং সার্টিফিকেট প্রদান করে থাকি। এছাড়া জাতীয় বা অঞ্চল ভিত্তিক কারাতে প্রতিযোগিতায়ও অংশ নিয়ে থাকি।

এই কারাতে সেন্টার থেকে সর্বশেষ এ বছর একসাথে ১৩জন নারী,পুরুষ শিশু ব্ল্যাকবেল্ট অর্জন করেছেন। তার মধ্যে বিনায়ক সাহা নামে ১০ বছর বয়সী ক্লাশ ফোরের এক শিশু শিক্ষার্থী ব্ল্যাকবেল্ট অর্জন করে সবাইকে তাক লাগিয়েছে।

বিনায়ক সাহা জানায়,৭ বছর বয়সে আমি এই সোতোকোন কারাতে সেন্টারে ভর্তি হই। লেখাপড়ার পাশাপাশি আত্মরক্ষার কলা কৌশল শিখতে টানা তিন বছর ধরে প্রশিক্ষণ নিয়ে ব্ল্যাকবেল্ট অর্জন করতে সক্ষম হই। আগামীতে গ্রেড পরীক্ষায় অংশ নিয়ে আরও এগুতে চাই।

অভিভাবক প্রবীর পাল বলেন,আমার ১২ বছর বয়সের ছেলে এনে এখানে প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। এভাবে একজনের দেখাদেখি অন্যরাও এখানে এনে ভর্তি করাচ্ছেন মার্সাল আর্ট শেখাতে। তবে আমি মনে করি এই জায়গাটি কারাতে শেখাতে পর্যাপ্ত না। এ জন্য ক্রীড়া সংস্থা তাদের পৃথক একটি কক্ষের ব্যবস্থা করলে শিক্ষার্থীরা যেমনি করাতে শিখতে সাচ্ছন্দ বোধ করতেন। তেমনি অভিভাবকরাও স্বস্তি পেতেন।

একজন নারী অভিভাবক বলেন,আমাদের চাঁদপুরে এ ধরনের একটি প্রতিষ্ঠান আছে এর জন্য আমরা খুবই গর্বিত এবং আনন্দিত। কারণ চাঁদপুরের মত ছোট শহরে শিশুদের লেখা পড়ার পাশাপাশি বিনোদনের কিছুই নেই। সুস্বাস্থ্যের জন্য চাঁদপুর সোতোকান কারাতে সেন্টার এখন একটি ভরসার জায়গা।

চাঁদপুর জেলা কারাতে একাডেমির সভাপতি আলম পলাশ বলেন,আমাদের কারাতে প্রশিক্ষণ শুধু এই স্টেডিয়ামের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখিনি। আমরা ইতিমধ্যে চাঁদপুর ডেফোডিল স্কুল এন্ড কলেজেও গিয়ে শিক্ষার্থীদের কারাতে প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। এভাবে অন্যান্য স্কুল বা কলেজ থেকেও আগ্রহ প্রকাশ করলে আমাদের এখানকার যারা ব্ল্যাকবেল্ট পেয়েছেন তাদের সহযোগিতায় সেসব প্রতিষ্ঠানে গিয়ে প্রশিক্ষণ দিতে প্রস্তুত রয়েছি। আবেদন করলেই আমরা এগিয়ে আসবো।

স্টাফ করেসপন্ডেট/ ১৬ আগস্ট ২০২৫