চাঁদপুরে মাদক বিক্রেতাদের হামলা-মামলা আর হয়রানি থেকে রেহাই পেতে একটি পরিবার। গত কয়েক বছর ধরে ভিটেমাটিহীন এই নিরীহ পরিবারটি চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজারের চিহ্নিত একটি মাদক বিক্রেতা চক্রের দ্বারা হামলা-মামলা আর হয়রানির শিকার হয়ে পথে বসেছে। সবশেষ নদী ভাঙনের শিকার পরিবারটি একমাত্র সম্ভল বসতঘরটি ভাংচুর করে ঘরের আসবাবপত্র নষ্ট এবং লুটপাট করে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বর্তমানে মাদক বিক্রেতাদের ভয়ে সেখানে বসবাস করতে পারছে না তারা। এ বিষয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন অসহায় নার্গিস বেগম।
অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়, নদী ভাঙনের শিকার- ভিটেমাটিহীন ছায়েদ আলী আখন্দ ও তার স্ত্রী নার্গিস বেগম চার সন্তান নিয়ে অনেক বছর ধরে চাঁদপুর নতুনবাজার-পুরাণবাজার বিজ্রের নিচে (পুরাণবাজার ডিগ্রি কলেজের পাশে) সরকারি পরিত্যক্ত জমিতে ঘর তুলে বসবাস করেন। তাদের পাশ্ববর্তী শহিদ ছৈয়ালের পুত্র শাজাহান ছৈয়াল, জামাল ছৈয়াল ও সেলিম ছৈয়াল দীর্ঘদিন ধরে সেখানে মাদক ব্যবসা করে আসছে। তাই সেখান থেকে নার্গিস বেগমের পরিবারকে উচ্ছেদ করার জন্যে তারা নানাভাবে হুমকি-ধমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে।
নার্গিস বেগমের পরিবারের প্রায় সকলের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় কোলের বাচ্চা নিয়ে বেশ কয়েকদিন হাজতবাস করেন অসহায় নার্গিস বেগম। পরে বাধ্য হয়ে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করে নার্গিস বেগমও আদালতে মামলা দায়ের করে। যার মামলা নং সিআর ৩৪২/১৯। এতে আদালতের নির্দেশে তাঁদের আটক করা হলেও জামিনে মুক্তি পেয়ে তারা নানাভাবে হুমকি-ধমকি ও হামলা করতে থাকে।
গত ডিসেম্বর মাসের ২৩ তারিখে আদালত উভয়পক্ষকে মিলমিশ হওয়ার কথা বলে। পরের দিন উল্লেখিত মাদক বিক্রেতারা দলবল নিয়ে দেশিয় অস্ত্র দিয়ে তাদের বসতঘরটি কুপিয়ে ঘরের আসবাবপত্র নষ্ট এবং লুটপাট করে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে অসহায় নার্গিস বেগম জানান, শহিদ ছৈয়ালের পুত্র শাজাহান, জামাল ও সেলিম ছৈয়াল এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তাদের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। এদের মধ্যে শাজাহান মাদক মামলায় ৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী। কিছুদিন আগে সে জামিনে মুক্তি পেয়েছে।
গত বছর এলাকাবাসী মাদক ব্যবসা করার জন্যে তাদের এলাকা থেকে উচ্ছেদ করে দিয়েছিলো। কিন্তু তারা পুণরায় সেখানে মাদক ব্যবসা শুরু করে। এ বিষয়ে কেউ প্রতিবাদ করলে তাঁদের উপর হামলা চালায় এবং মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়ার ভয় দেখায়।
তিনি আরো জানান, আমার মেয়েটি এখন ৮ম শ্রেণীতে লেখাপড়া করছে। সে স্কুলে গেলে আমি সারাক্ষণ দুশ্চিন্তায় থাকি। এই মাদক বিক্রেতাদের হয়রানি আর হামলা-মামলা থেকে পরিত্রান নিয়ে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে নিরাপদে বসবাস করতে চাই। এ বিষয়ে তিনি পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
স্টাফ করেসপন্ডেট