চাঁদপুরে মাদকের অপব্যবহার রোধকল্পে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা (Comprehensive Action Plan) প্রণয়নে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২০ মার্চ সোমবার সকালে চাঁদপুর সদর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবং জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের সহযোগীতায় এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত কর্মশালায় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, সমাজকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
কর্মশালায় উদ্বোধন করেন, চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আবু সালেহ মো. মোসা। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এমদাদুল ইসলাম মিঠুন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সোহেল রুশদী, চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবদুর রশীদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট এএসএম মুসা বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় আমাদের দেশেও মাদক ধীরে ধীরে প্রকট আকার ধারণ করছে। তাই মাদক প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার কোন বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংবাদিক, ইমামসহ সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। তবে সবার আগে অভিভাবকদের সচেতন থাকতে হবে। মাদকমুক্ত সমাজ বিনির্মাণে এ সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের উদ্যোগটি খুবই প্রশংসনীয় উদ্যোগ।
তিনি বলেন, মাদক বিক্রেতা কিংবা সেবনকারীদের আটক করে সাজা দিলেই হবে না, মাদক নির্মূল করতে হবে। কারণ যার মাদকের সাথে জড়িত, তারা আমাদের কারো না কারো পরিবারের সদস্য। তাছাড়া প্রবীণরা মাদক সেবন করে না, মাদক সেবন করে তরুণরা। এই তরুণ সমাজকে রক্ষা করতে হবে। তাদের থেকে দেশের অনেক কিছু পাওয়ার আছে।
তিনি আরো বলেন, মাদক ব্যাবসায় মুনাফা বেশি। এজন্য একশ্রেণীর মানুষ বিপদ জেনেও মাদক বিক্রি করে। একটি ইয়াবা ট্যাবলেট ১শ’ টাকায় বর্ডার পারি দেয়া। সেটি ঢাকায় প্রবেশ করতে পারলেই ৫-৬শ’ টাকা হয়ে যায়। অল্পসময়ে অধিক মুনাফার জন্যেই মাদক ব্যবসায়ীরা এই পথ ছাড়ছে না।
এসময় অন্যান্য বক্তারা বলেন, দেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা ৪০ লক্ষাধিক। টেকনাফে ৯০ভাগ মানুষ মদক ব্যবসার সাথে জড়িত। শুধুমাত্র ঢাকা শহরে ৩ লক্ষ ইয়াবার চাহিদা আছে। এটি আমাদের সবার জন্য চিন্তার বিষয়। আমাদের তরুণরা দেশ ও জাতির আগামী দিনের কর্ণধার। সমাজ ও দেশকে গতিশীল করতে মূল চালিকাশক্তি হলো তরুণরাই।কিন্তু তরুণপ্রজন্মকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে মাদক। এর থেকে উত্তরণে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
প্রতিবেদক: আশিক বিন রহিম, ২০ মার্চ ২০২৩