চাঁদপুরে মসজিদে নামাজ বন্ধ করে ৪ দিন ধরে শুকানো হচ্ছে ধান

চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নের উত্তর মৈশাদী গ্রামে বাইতুন নুর নামের একটি জামে মসজিদে নামাজ বন্ধ করে দিয়ে ৪ দিন ধরে শুকানো হচ্ছে ধান। বিগত ৪ দিন ধরেই একটানা মসজিদে থাকা সিলিং ফ্যান চালিয়ে ফ্লোরের মধ্যে ধান বিছিয়ে শুকাচ্ছেন মসজিদ প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের মোঃ নুরুল ইসলাম খান। যার কারণে বিগত ৪ দিন ধরে মসল্লিরা নামাজ আদায় করতে না পেরে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

উক্ত মসজিদটিতে প্রতিদিনের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের জামাত বন্ধ থাকায় উত্তেজিত মুসল্লি ও এলাকাবাসি বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে অবগত করে মসজিদে ২য় তালা লাগিয়ে দেন।

সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উত্তর মৈশাদী গ্রামের চাঁন খান মিয়া বাড়ির আঙ্গিনা থাকা বাইতুর নুর জামে মসজিদের দুটি গেটেই তালা ঝুলে আছে। ভেতরে চলছে কয়েকটি সিলিং ফ্যান। নিচে ফ্লোরের মধ্যে পাটি বিছিয়ে শুনানো হচ্ছে ধান। মসজিদের প্রবেশের কোন প্রকার বিকল্প ব্যবস্থা নেই।


স্থানীয় এলাকার সোহেল গাজী, সাত্তার মোল্লা, শফিক গাজী, মোস্তফা গাজী, আরশাদ মজুমদার, মাইনুদ্দিন ঢালী, মিন্টু গাজী, মতিন গাজী সহ একাধিক ব্যাক্তি ও মুসল্লিরা জানান,  মসজিদ প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের মৃত আহম্মদ খানের (চান খান) ছেলে নুরুল ইসলাম খান গত শুক্রবার দিন মসজিদের ভিতরের ফ্যান চালিয়ে ফ্লোরের মধ্যে ধান শুকাতে দেন। যার কারণে তারা বিগত চার দিন ধরে ওই মসজিদে ঠিকমতো নামাজ আদায় করতে পারেননি। যার কারণে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম পাটওয়ারীকে অবগত করে তারা মসজিদে আরেকটি তালা লাগিয়ে দেন।

তারা জানান, প্রায় তিন বছর পূর্বে বিমান বাহিনীর ক্যাপ্টেন আরমান উল্লাহ চৌধুরীর অনুদানে সেখানে বায়তুর নূর জামে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। তারপর থেকেই নুরুল ইসলাম খান নিজের খাম খেয়ালী ও ইচ্ছামত মসজিদে যা খুশি তাই রাখেন। এ নিয়ে মুসল্লি এবং এলাকাবাসী প্রতিবাদ করলে তিনি তাদেরকে বলে দেন, ইচ্ছে হলে কেউ মসজিদে  নামাজ পড়বে। যাদের ইচ্ছা হবেনা তারা এই মসজিদে নামাজ পরবেনা। এমন কথা বলেই তিনি মুসল্লিদেরকে ওই মসজিদে নামাজ আদায় না করার জন্য বারণ করেন। তারপর থেকে বিগত এক বছর ওই মসজিদে তারা নামাজ পড়তে পারেননি বলে জানান।

এ বিষয়ে নুরুল ইসলাম খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই মসজিদটি আমার ছোট ভাই বিমান বাহিনীর সদস্য হাফেজ ফরিদুল ইসলাম মিজান এবং বিমান বাহিনীর এক ক্যাপেন্টের অনুদানে প্রায় দুই আড়াই বছর আগে নির্মান করেন। এটার পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছি আমি। আমি কাউকে এই মসজিদে নামাজ পড়ার বিষয়ে ভারন করিনি।

তিনি বলেন, ধানগুলো আমি ছাদে শুকাতে দিয়েছিলাম। কিন্তু দুদিন টানা বৃষ্টি হওয়ার কারনে আমার ছেলেকে বলেছিলাম মসজিদের এক কোনে ধান গুলো মেলে দিতে।  তিনি মসজিদের ভেতরে ধান শুকানোর বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন,আসলে এ কাজটি আমার ঠিক হয়নি। কিন্তু এখন এলাকার লোকজন আরেকটি তালা আটকানোর কারনে আমি ধান গুলো বের করতে পারছিনা।

এবিষয়ে মৈশাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম পাটোয়ারী বলেন, মসজিদে ধান শুকানোর বিষয়টি এলাকার লোকজন আমাকে জানিয়েছে। আমি তাদেরকে পরামর্শ দিয়েছি মসজিদে আরেকটি তালা লাগিয়ে দিতে। এরপর নতুন করে মসজিদ কমিটি গঠন করে তালা খোলা হবে।

প্রতিবেদক: কবির হোসেন মিজি,১৩ জুন ২০২৩

Share