চাঁদপুর শহর থেকে বেপরোয়া দু’সহোদরকে একাধিক অভিযোগ ও এলাকাবাসির গণস্বাক্ষরের প্রেক্ষিতে গ্রেফতার করেছে মডেল থানা পুলিশ। উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আলী আক্কাছ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) মিশন রোড এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন চাঁদপুর পৌরসভার ১২ নং ওয়ার্ডস্থ দক্ষিন বিষ্ণুদী খান সড়ক এলাকার মানিক খান ও তার ভাই মোস্তফা খান।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) ভোরে প্রতিবেশি নাজমা বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধূকে দফায় দফায় মারধর করে গুরতর আহত করে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা তার ওপর ক্ষীপ্ত হয়ে পূর্বের অপরাধ উল্লেখপূর্বক গণস্বাক্ষর গ্রহণ করে। পরে নাজমা বেগমের স্বামী তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
বিভিন্ন বাড়ির একাধিক ব্যাক্তি জানায়, ওই এলাকার মানিক খান দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই এলাকায় পতিতা ব্যবসাসহ বিভিন্ন অসামাজিক কাজ করে আসছেন। সোমবার থেকে শুরু করে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত তারা আহত নাজমা বেগম ও তার স্বামী ইউসুফকে কয়েক দফায় মারধর করেন।
ঘটনার খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানার এস আই আক্কাছ সর্ঙ্গীয়ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলে মানিক খানের স্ত্রী ওই পুলিশের নামে নারী নির্যাতনের মামলা দিবে বলেও অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করে বলে বাসিন্দারা জানায়।
আহত নাজমা বেগম ওই এলাকার ইউসুফ আলী মুন্সির স্ত্রী। নাজমা বেগম ও তার পরিবারের লোকজন জানায়, তার স্বামী দীর্ঘদিন ধরে মিশন রোড এলাকায় ব্যবসা করার করার কারনে মানিক খানের সাথে পরিচয় হয়। তারপর প্রায় ৩ বছর আগে মানিক খান রেলওয়ের পূর্ব দখলকৃত ৩০ ফুট জায়গা ইউসুফের কাছে ৩ লাখ টাকায় বিক্রি করেন। তারপর সেখানে ইউসুফ ঘর নির্মাণ করে বসবাস শুরু করেন। আর ওই জায়গার অজুহাতে মানিক খান প্রায়ই ইউসুফের কাছে বিভিন্ন অংকের আরো অনেক টাকা দাবি করলে পরবর্তীতে ইউসুফ তাকে আরো ১ লাখ টাকা দেন।
তাদের উভয়ের ঘর পাশাপাশিতে হওয়াতে মানিক ও তার দু’ স্ত্রী অহেতুক নাজমা বেগমের সাথে ঝগড়ায় লিপ্ত হয়। যাতে করে তার স্বামী ইউসুফ ক্রয়কৃত ওই জায়গা ছেড়ে চলে যান। এতে ক্ষ্যান্ত না হয়ে মানিক খান নাজমা বেগমকে কু প্রস্তাব দিতে শুরু করেন। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে মানিক খান জোর করে নাজমা বেগমের গায়ে হাত দেন বলেও জানান তিনি।
সর্বশেষ ঘটনায় মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) মানিক খান, তার দুই স্ত্রী মনি বেগম, মুক্তা বেগম, বোন জোসনা বেগম, ছোট ভাই টিংকু ও তার স্ত্রী, ইউসুফ ও তার স্ত্রী নাজমা বেগমকে কয়েক দফায় মারধর করে গুরুতর আহত করেন। এবং তাদেরকে ওই জায়গা ছেড়ে চলে যেতে মেরে পেলার হুমকি দেয়।
পরে স্বজনরা খবর পেয়ে নাজমা বেগমকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন।
এদিকে দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় অবৈধভাবে রেলওয়ের জায়গা দখল, অবৈধ জায়গা বিক্রি এবং গোপনে পতিতা ব্যবসা, মাদক সেবন, একাধিক বিয়েসহ নারী কেলেংকারী ও অহেতুক স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে অধিকাংশ সময় মারামারিতে লিপ্ত থাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা তার বিরুদ্ধে গণস্বাক্ষর নিয়েছেন।
এলাকা বাসি এ গণস্বাক্ষরের মাধ্যমে মানিক খানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মানিক খানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি পতিতা ব্যবসা এবং মাদক সেবন করিনা। তবে দুটি বিয়ে করেছি এটি ঠিক আছে। অন্যান্য বিষয়ে এলাকার মানুষ আমার নামে বানিয়ে মিথ্যে বলছে। তিনি মারধরের ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, আমার মেয়ে স্কুল যাওয়ার সময় তার ছেলে দুষ্টুমি করার বিষয় নিয়ে তাদের সাথে ঝগড়া হয়।
তাদের বিষয়ে চাঁদপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আলী আক্কাছ চাঁদপুর টাইমসকে জানায়, নাজমা বেগমের স্বামী ইউসুফ মুন্সীর স্বামীর বাদী হয়ে মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) চাঁদপুর মডেল থানায় মামলা (নং ২৭) দায়ের করেন। এ প্রেক্ষিতে মানিক খান ও তার ভাই মোস্তফা খান ওরফে মস্তুকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রতিবেদক
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
: আপডেট, বাংলাদেশ ১১:৫৩ পিএম, ১৭ অক্টোবর, ২০১৭ মঙ্গলবার
ডিএইচ