চাঁদপুর

চাঁদপুরে বিভিন্ন বাজারে শিশু খাদ্য সংকট

নিলা বেগম। তার ছয় মাস বয়সী শিশু মুস্তাকিন। সে অসুস্থ্য। শিশুকে চিকিৎসক বায়োমেইল সয়া খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু তিনি কোথাও বায়োমেইল খুঁজে পাচ্ছেন না। তাই কিনতে পারেনি।

রামপুর বাজার থেকে হাজীগঞ্জ বাজারে আসলেন মেহেদী হাসান। তার ভাতিজা দুই বছর বয়সী তানজিম। প্রিজম দুধের কৌটা কিনতে বাজারে এসে সকল দোকানপাট বন্ধ পায়। কিনে নিতে পারেনি শিশুর জন্য খাবার।

এভাবে প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন বাজারে অভিভাবকরা গিয়ে শিশু খাদ্য না পেয়ে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন।

সারাদেশে নোভেল করোনাভাইরাস মানুষ এখন ঘর বন্দী। সমাজের অসহায় ও মধ্যবিত্তদের জন্য সরকারি ও বেসরকারিভাবে বিভিন্ন সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন অনেকে। কিন্তু কেউ ভাবছেন না পাঁচ বছর পর্যন্ত বয়সী শিশুদের খাদ্য নিয়ে।

জেলা সিভিল সার্জন কর্মকর্তা দেয়া তথ্য অনুযায়ী, পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুর সংখ্যা ৩৩ হাজার ৩৬৭ জন। এই শিশুদের মাঝে প্রায় ১৫ হাজার শিশু মায়ের দুধের পাশাপাশি বিকল্প খাদ্যের উপরে নির্ভর। জেলায় দোকানপাট বন্ধ থাকায় শিশু খাদ্য ক্রয় করতে হিমশিম খাচ্ছে সামর্থ্যবান অভিভাবকরা।

শিশুখাদ্য গুলোর মধ্যে রয়েছে, সেরেলাক্স, নান,সিরিয়াল, লেকটুকেট, ল্যাকটো ফিক্স, বায়োমিল, গ্যাস্ট্রো ফিক্স, এলডোবেবী, মার্কস গোল্ড, রিভিট- আর, আরএন, এল ১১০ সহ বিভিন্ন কোম্পানির শিশুখাদ্য বাজারে রয়েছে। শিশুদের পেপারসহ বিভিন্ন প্রসাধনী সামগ্রী।

জেলার বিভিন্ন বাজারের মুদি দোকান ঘুরে দেখা গেছে, সব দোকানগুলোতে শিশুদের ঐসকল খাদ্যদ্রব্য নেই।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাজীগঞ্জ বাজারের বিশাল শপিং সেন্টারে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকার শিশু খাদ্য মজুত রয়েছে। তাদের দোকান বন্ধ থাকায় শিশু খাদ্য বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান পরিচালক মনির হোসেন। এভাবে জেলার বড় কিছু মুদি সামগ্রীর দোকান বন্ধ রয়েছে। তাতে শিশুদের অভিভাবকরা বিভিন্ন বাজার ঘুরে হয়রানি হচ্ছেন।

হাজীগঞ্জ বাজারের মাম ফুডসের সেলসম্যানরা বলছেন, আমাদের কাছে কিছু শিশু খাদ্য আছে। তবে সব কোম্পানির বা বড় গুলো নেই।

হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সোয়েব আহমেদ বলেন, এই মৌসুমে নিউমোনিয়াসহ শিশুরা কয়েকটি রোগে আক্রান্ত হতে পারে বেশি। শিশুদের সুরক্ষার প্রতি সকলের নজরদারি বাড়াতে হবে।

হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বৈশাখী বড়ুয়া বলেন, ‘মুদি দোকানগুলো দুইটা পর্যন্ত খোলা রাখা হচ্ছে। সেখানে শিশু খাদ্য না পেলে করোনার এইকটা দিন অপেক্ষা করতে হবে। ‘

চাঁদপুর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন,’শিশু খাদ্যের দোকান খোলা থাকবে।’

চাঁদপুর সিভিল সার্জন ড. মোঃ সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন,জেলায় পাঁচ বছর পর্যন্ত বয়সের শিশুদের সংখ্যা ৩৩ হাজার ৩৬৭ জন। করোনার পাশাপাশি শিশুদের খাদ্য নিয়ে অবশ্যই ভাবতে হবে।

প্রতিবেদক:মনিরুজ্জামান বাবলু,৪ এপ্রিল ২০২০

Share