Home / চাঁদপুর / চাঁদপুরে বাসাবাড়িতে বিদ্যুতের সার্ভিস তার চুরি হিড়িক
বাসাবাড়িতে

চাঁদপুরে বাসাবাড়িতে বিদ্যুতের সার্ভিস তার চুরি হিড়িক

চাঁদপুর পৌরসভার ১১ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ গুনরাজদী ও মধ্য ইছলী প্রায় ৩০ টি ফ্যামিলির বিদ্যুতের খুঁটি থেকে মিটারের সাথে সংযোগ বিদ্যুতের সার্ভিস তার চুরির ঘটনা ঘটছে। বাসাবাড়ি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে শেষ রাতের দিকে চুরি হচ্ছে হচ্ছে বলে এলাকাবাসী জানান‌। এতে এলাকার বাসিন্দারা বিপাকে পড়েছেন।

ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, ১ মার্চ শুক্রবার রাত ২ টার দিকে দক্ষিণ গুনরাজদী ভূঁইয়া বাড়িতে প্রায় ১২ টি ঘরে খুঁটির তার শরীর ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়। এলাকাবাসী বলেন, গত কয়েকদিন যাবত এই ঘটনা ঘটে আসছে। ভূঁইয়া বাড়ির ব্যবসায়ী ইয়াকুব ভূঁইয়া জানান, আমার বাসার খুঁটি থেকে মিটার পর্যন্ত দুইবার তার কেটে নিয়ে যায়। দুদু ভূঁইয়া জানান, রাত তিনটার সময় আমার বাসার কারেন্ট চলে গেলে আমি লাফিয়ে উঠে বিদ্যুতের খুঁটির দিকে তাকাই তখনই দেখতে পাই চোর তারগুলা বস্তা ভরে নিয়ে যাচ্ছে। আমি ডাক চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন আসার পূর্বেই চোর চলে যায়। চোর আমার এলাকার সন্তান। আমি তাকে চিনতে পেরেছি।

রাত ২টা থেকে রাস্তার পিডিবির বৈদ্যুতিক পিলার থেকে গ্রাহকের মিটার পযন্ত টানা মিটারের তামার তার কেটে নিয়ে যায় ছেচড়া চোর। এতে রাত থেকেই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বাড়ির।

এছাড়াও একই রাতে ঐ এলাকার বাসিন্দা মোঃ কামাল ভূঁইয়া, আ: মালেক ভূঁইয়া, ফজল গাজী, মানিক ভূঁইয়া, সহ এলাকার বেশ কয়েকজনের বাসার বিদ্যুতের তার চুরি হয়। আগেও একের পর এক নানা ধরনের চুরির ঘটনা ঘটলেও পুলিশের নথিতে কোনো অভিযোগ নেই।

শুধু ওই বাড়ি নয়, প্রায় প্রতিদিনই শহরের বিভিন্ন স্থানে বৈদ্যুতিক তার চুরির ঘটনায় গ্রাহকরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। তার চুরিরোধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপসহ গলির রাস্তায় সিসি ক্যামেরা স্থাপনের দাবী ভুক্তভোগীদের।

একটি সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ দিনে মধ্যে ইছলী কোল্ড স্টোর আশপাশে প্রায় ৩০ টি বসতবাড়িতে বিদ্যুতের সংযোগ (সার্ভিস) তার চুরি হয়েছে। তবে এসব চুরির ঘটনা থানায় না জানিয়ে বাড়ির মালিকেরা নিজেরাই আবার সংযোগ লাগিয়ে নিচ্ছেন। এ কারণে পুলিশ চুরির ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না।

ভুক্তভোগীরা জানান, থানায় গেলে পুলিশ সন্দেহভাজন চোরের নাম দিয়ে অভিযোগ করতে বলে। কিন্তু নিশ্চিত না হয়ে তাঁরা কারও নাম দিয়ে বিপদে পড়তে চান না। এ কারণে তাঁরা নামও দেন না। এক সময় দেখা যায় চোরের থেকে অভিযোগকারী হয়রানি অনেক বেশি হয়ে যায়। তাই কেউ থানায় এসব বিষয়ে অভিযোগ করতেও আগ্রহীনা।

এলাকার বাসিন্দারা জানান, ভূইয়া বাড়ির ছলেমান ভূঁইয়ার ছেলে মোঃ আরিফ ভূঁইয়া বিগত ২০ বছর ধরে চুরি করে আসছে। এই পর্যন্ত বহুবার পুলিশের হাতেও এলাকাবাসী ধরিয়ে দিলেও সে বেশকিছু দিন জেলে থাকার পর আবার যে সে। রাতে আরিফ চোরাই অনেকের সামনে পড়তে দেখা গেছে বলে এলাকার লোকজন জানান। বড় ক্ষতির ভয়ে কেউ তার ব্যাপারে রিক্স নিতে চাচ্ছেন না।

এখন প্রতিদিনই কোনো না কোনো বাড়ির তার মোটর চুরির ঘটনা শোনা যাচ্ছে। এ ঘটনায় থানায় কারো কোন লিখিত অভিযোগ নেই বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চাঁদপুর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) একজন কর্মচারী জানান, গত সপ্তাহে শহরের প্রায় ২০ থেকে ৩০ টি বাড়ির সংযোগ তার তারা লাগিয়ে দিয়েছেন। চোরের প্রত্যেক বাসায় মিটারের গোড়া থেকে ও বিদ্যুতের পিলারের মেইন লাইন থেকে ৩/৪ ফুট রেখে কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। কিছু ছাদের উপর দাঁড়িয়ে কিছু গাছের উপর উঠে কেটে নিয়ে যাচ্ছে। যারা চুরি করছে তারা পেশাদার। কারণ বিদ্যুতের সংযোগ থাকা অবস্থায় ঝুঁকি নিয়ে তারা কেটে নিয়ে যাচ্ছে।

এ ঘটনায় ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, এই চুরির থেকে অসহায় দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষের বাসা বাড়ি থেকেও তার কেটে নিয়ে যাচ্ছে। বাসায় বিদ্যুতের তার চুরির ঘটনা তুচ্ছ করে দেখার কোন সুযোগ নেই। তার চুরির ঘটনা ও কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করেন তারা। এবং এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারে জোর দাবি জানান এলাকাবাসী। এবং এলাকাবাসী যুবসমাজ মিলে চোর ধরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেন।

চাঁদপুর সদর মডেল থানার (ওসি) ইন্সপেক্টর মো. বাহার মিয়া জানান, শুনেছি প্রায়ই শহরের বিভিন্ন এলাকার বসতবাড়ির বৈদ্যুতিক তার চুরি হচ্ছে । এ ঘটনায় থানায় তেমন কোন অভিযোগ নেই। তবে আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি।

প্রতিবেদক: মুহাম্মদ বাদশা ভূঁইয়া, ২ মার্চ ২০২৫