চাঁদপুর

চাঁদপুরে ফুফু হত্যার দায়ে ভাতিজার যাবজ্জীবন

চাঁদপুরের মতলব উত্তরে দাবীকৃত ২০ হাজার টাকা না দেয়ায় ফুফু লায়লা বেগম (৭৫) কে গলাটিপে শ^াসরুদ্ধ করে হত্যার দায়ে আপন ভাইয়ের ছেলে হাফেজ নান্নু সিকদার (৩৫) কে সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমনা করা হয়।

বুধবার (১৯ জুলাই) দুপুর ১টায় চাঁদপুরের জেলা ও দায়রা জজ সালেহ উদ্দিন আহমদ এ রায় দেন।

হ্যতার শিকার লায়লা বেগম জেলার মতলব উত্তর উপজেলার উত্তর নাওড়া গ্রামের মোবারক হোসেনের স্ত্রী। আসামী হাফেজ নান্নু সিকদার একই উপজেলার এখলাসপুর ইউনিয়নের নয়ানগর গ্রামের মৃত আব্দুল হাই সিকদারের ছেলে।

মামলার বিবরণ থেকে জানাযায়, গত ২০১৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টায় নান্নু ফুফুর বাড়ীতে যায়। ফুফ নিজ বাড়ীতে একা থাকতেন। তার ছেলেরা ঢাকায় থাকেন। রাতের খাবার শেষে ফুফুর কাছে ২০ হাজার টাকা হাওলাত দাবী করে নান্নু। ফুফু টাকা নেই বলে তাকে জানান। রাতেই দু’জনেই ওই ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত আনুমানিক ১টার দিকে নান্নু ফুফুকে গলাটিপে হত্যা করে মশারির নিচে রেখে ঘরের দরজায় তালাবদ্ধ করে চলে যায়। এরপর দুইদিন লায়লা বেগমের ছেলেরা মায়ের খোঁজ না পেয়ে স্বজনদের ওই বাড়িতে পাঠান। আত্মীয় স্বজন ও এলাকাবাসী ঘরের দরজা ভেঙ্গে লায়লা বেগমকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে বাড়ীতে দাফন করেন।

লায়লা বেগমের মৃত্যুর বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি সন্তানরা। তারা নান্নুকে সন্দেহ করে তার মোবাইল ফোন নম্বর ও নাম ঠিকানা র‌্যাব-১১ এর কাছে দেন। র‌্যাব নান্নুর মোবাইল নম্বর সিডিআর লিষ্ট চেক করে ঘটনাস্থল মোবাইল টাওয়ার এলাকার তার অবস্থান নিশ্চিত করে। ২৯ সেপ্টেম্বর র‌্যাব নান্নুকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে এবং তাকে জিজ্ঞাসাবদ করলে সে ঘটনা সত্যতা স্বীকার করেন। ৩০ সেপ্টেম্বর র‌্যাব নান্নুর জবানবন্দী ও যাবতীয় তথ্যের একটি সিডিসহ মতলব উত্তর থানায় সোপর্দ করেন এবং ওই দিন নিহতের ছেলে ইউনুছ আজাদ বাদী হয়ে নান্নুর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ১ অক্টোবর তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়। আদালতে নান্নু ১৬৪ জবানবন্দী দেয়ার পর তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন মেজিস্ট্রেট।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মতলব উত্তর থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান সরকার তদন্ত শেষে ১৮ জুন ২০১৫ তারিখে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।

সরকার পক্ষের আইনজীবী (পিপি) মো. আমান উল্লাহ্ জানান, মামলাটি চলমান অবস্থায় ২৬জন সাক্ষীর মধ্যে ১৮জনের সাক্ষ্য গ্রহন শেষে নান্নুর অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় তার উপস্থিতিতে এ রায় দেন।

সরকার পক্ষের সহকারী আইনজীবী (এপিপি) ছিলেন মো. মোক্তার আহম্মদ (অভি)। আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন শরীফ মাহমুদ সায়েম।

প্রতিবেদক- মাজহারুল ইসলাম অনিক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৭: ০০ পিএম, ১৯ জুলাই ২০১৭, বুধবার
ডিএইচ

Share