চাঁদপুরে প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির লক্ষাধিক টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ!
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চার দফা দাবিতে ঢাকায় মহাসমাবেশে অংশ নিতে চাঁদপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নামে শিক্ষকদের কাছ থেকে অবৈধভাবে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, চাঁদপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অন্তত ১২০০ শিক্ষকের কাছ থেকে বাধ্যতামূলক ১০০ টাকা করে এই চাঁদা তোলা হয়েছে। এভাবে সর্বমোট ১২,শ শিক্ষকের কাছ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা সংগ্রহ করা হয়, যা নিয়ে চরম চাপা ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে প্রাথমিক শিক্ষকদের মধ্যে।
আর এই চাঁদা তোলার নির্দেশ দেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি গিয়াস কবির ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবুল হাসেম। টাকা সংগ্রহের দায়িত্বে ছিলেন সমিতির সদস্য মাহবুব, সাইফুল, ফারুক, তাহমিনা, কাসেম এবং সেক্রেটারী হাসেম।
অভিযোগ রয়েছে, চাঁদা না দিতে চাওয়া এক শিক্ষককে প্রকাশ্যে অপমানজনক ও খারাপ আচরণের শিকার হতে হয় সাধারণ সম্পাদক হাসেমের হাতে।
শিক্ষকদের অনেকেই বলেন, চাঁদপুর থেকে ঢাকায় গিয়ে সমাবেশে অংশ নিতে এত বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন হয় না। অথচ সমিতির নেতারা অযৌক্তিকভাবে এই টাকা তুলেছেন। এছাড়া সমাবেশেও সকল শিক্ষকরা অংশগ্রহন করেননি। তারা মাত্র ২০/২৫ জন অংশ নিতে যান। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে ঢাকায় যেতে তো এত টাকা খরচ হয়নি…? এবং পূর্বে এসব অনুষ্ঠান ভিত্তিক খরচ সমিতি বহন করেছে। নব নির্বাচিত সমিতির নেতৃবৃন্দ সেই নিয়ম ভেঙ্গে অনিয়ম করে এমন চাঁদাবাজিতে শিক্ষক মহলে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে একাধিক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমাদের জোর করে চাঁদা দিতে বাধ্য করা হয়েছে। এর প্রতিবাদ করতে গেলে হুমকি-ধমকিও দেওয়া হয়েছে। এমনকি ১০০ টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় আমাদের এক শিক্ষককে অপামানিত করা হয়েছে।
এদিকে এই সংবাদের বক্তব্য নিতে সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেমকে কল করার পর থেকে খবর নিয়ে জানা গেছে শহরের একটি স্কুলের যেসকল শিক্ষকরা সমাবেশে যায়নি। সেই স্কুলের শিক্ষকদের টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে। এছাড়া অনেক শিক্ষকদের কাছে জানা যায়, প্রধান শিক্ষকদের মাসিক মিটিংয়ে এসব চাঁদা তোলার বিষয়েও অনেকে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
শিক্ষক সমাজের দাবি, এ ঘটনায় স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’
এ বিষয়ে জেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি গিয়াস কবিরের নাম্বারে একাধিকবার কল দেয়ার চেষ্টা করেও বার বার বন্ধ পাওয়া যায়।
সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেমের সাথে কথা হলো তিনি প্রথমে অনেকটা উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘আপনাকে কি কেউ অভিযোগ দিয়েছে। পরে চাঁদা উঠানোর বিষয়টি স্কীকার করে তিনি বলেন, আমরা টাকা উঠিয়েছি ঠিক, তবে সব স্কুলের শিক্ষকরা দেয়নি। আমরা ৪০/৫০ জনের মতো ঢাকায় সমাবেশে গিয়েছি।’
অথচ অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সদর উপজেলার প্রায় সব, কটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছ থেকে বাধ্যতামূলক ১০০ টাকা করে চাঁদা উঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ভবরাঞ্জন দাস বলেন, ‘এভাবে শিক্ষকদের কাছে টাকা উঠানো এটা কোন নিয়মের মধ্যেই পড়েনা। তাছাড়া এই বিষয়ে আমাকে কোন শিক্ষক বা ডিপার্টমেন্টের কেউ অবগত করেননি।’
এদিকে এই সংবাদের বক্তব্য নিতে সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেমকে কল করার পর থেকে খবর নিয়ে জানা গেছে, শহরের একটি স্কুলের যেসকল শিক্ষকরা সমাবেশে যায়নি। সেই স্কুলের শিক্ষকদের টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে। এছাড়া অনেক শিক্ষকদের কাছে জানা যায়, প্রধান শিক্ষকদের মাসিক মিটিংয়ে এসব চাঁদা তোলার বিষয়েও অনেকে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
শিক্ষক সমাজের দাবি, এ ঘটনায় স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
প্রতিবেদক: কবির হোসেন মিজি,২১ জুলাই ২০২৫