টঙ্গী ইজতেমার মাঠে সাদ-পন্থিদের নৃশংস হত্যাকান্ডের বিচার এবং চাঁদপুরে তাদের সকল কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। ৩০ ডিসেম্বর সোমবার দুপুরে প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে চাঁদপুরের ওলামায়ে কেরাম এবং শুরায়ী নেজামের দাওয়াত ও তাবলীগ সাথীগণ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে এই স্মারকলিপি প্রদান করেন।
এর আগে সকাল ১০ টায় শহরের পুরাতন বাসস্টেশন ইলিশ চত্বরের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে চাঁদপুর জেলার বিভিন্নস্থান থেকে শত শত ওলামায়ে কেরাম এবং শুরায়ী নেজামের দাওয়াত ও তাবলীগ সাথীগণ অংশগ্রহণ করেন।
সমাবেশ থেকে চাঁদপুরে সাদপন্থীদের নেতৃত্বদানকারীদের বিতারিত করা, বাসস্টেশন জামে মসজিদ থেকে আব্দুর রশিদ ও আব্দুল্লাকে অপসারন করতে প্রশাসনকে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেয়া হয়। একইসাথে দাবি মেনে না নিলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
জাফরাবাদ হাফিজিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম খাজা আহমদ উল্লাহর সভাপতিত্বে এবং মাওলানা মুফতি নুর আলম ও মুফতি শহীদুল্লাহর পরিচালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, ষোলঘর মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা লিয়াকত হোসাইন, বড় স্টেশন মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতি সিরাজুল ইসলাম, বেগম মসজিদের খতিব মুফতি মাহবুবুর রহমান, জাফরাবাদ হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষা সচিব মুফতি তোহা খান, মহামায়া মাদ্রাসার শিক্ষা সচিব মাওলানা মোহাম্মাদ উল্লাহ, দারুন ফজল মাদ্রাসার মুহতামিম হাফেজ আবুল হাসান, জাফরাবাদ মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা মোঃ জুবায়ের, মাওলানা আলআমিন, মমিনপুর মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, রঘুনাথপুর মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা আশরাফ আলী, মারকাজ মসজিদের ইমাম মাওলানা এমদাদ, তাবলীগের সিনিয়র মুরুব্বী মোঃ হুমায়ুন, নিশি বিল্ডিং হাওলাদার জামে মসজিদ ও মাদ্রাসার মোতামিন মুফতি আশেক এলাহী, বকুলতলা মসজিদের খতিব মাওলানা ওবায়দুল্লাহ, ভূইয়া মার্কেট মসজিদের ইমাম হাফেজ ক্বারী রশিদ আহমেদ, কচুয়া মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতি আবু হানিফ, মতলব উত্তরের উপজেলা প্রতিনিধি মুফতি জয়নাল আবেদীন, ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি মাওলানা আবুল কালাম, শাহারাস্তি উপজেলার প্রতিনিধি মাওলানা হাবিবুর রহমান, মতলব দক্ষিণ শাহী মসজিদের খতিব গোলাম সারোয়ার ফরিদী, হাজীগঞ্জ উপজেলার প্রতিনিধি হাফেজ মাওলানা জুবায়ের।
বক্তারা বলেন, টঙ্গীর ময়দানে গভীর রাতে সন্ত্রাসী সাদপন্থীরা শুরাঈ নিজামের সাথীদের উপর অতর্কিত হামলায় করে। তারা আমাদের ভাইদের নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। এই হামলার সাথে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাসী। কিন্তু সাদপন্থীদের যদি সঠিক বিচার না করা হয় তাহলে আমরা কঠিন আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা পাঁচদফা নামের মধ্যে রয়েছে, (১) সাদপন্থী সন্ত্রাসীদের বর্বর নৃশংস হামলা ও মসজিদে মসজিদে বিশৃঙ্খলা বন্ধ করার লক্ষ্যে চাঁদপুর-সহ সারা দেশে তাদের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে। (২) ২০১৮ ও ২০২৪ সালে টঙ্গী মাঠে হামলার সাথে জড়িত চাঁদপুর-সহ সারাদেশের সকল সন্ত্রাসীকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। (৩) ঢাকার কাকরাইল মারকায ও টঙ্গী ইজতেমা মাঠ সম্পূর্ণরূপে শুরায়ী নেযামের তত্ত্বাবধানে দেওয়ার মাধ্যমে সুষ্ঠভাবে দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ আঞ্জাম দেওয়ার পরিবেশ সৃষ্টি করে দিতে হবে। (৪) পুরানবাজার জামে মসজিদে সাদপন্থীদের সকল কার্যক্রম স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে হবে। অন্যথায় কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হলে এর দায়ভার প্রশাসনকেই বহন করতে হবে। (৫) চাঁদপুর বাসস্ট্যান্ড মসজিদ মাদরাসা থেকে সাদপন্থীদের লিডার আবদুর রশীদ ও মৌলভী আব্দুল্লাহকে আগামী এক ‘সপ্তাহের মধ্যে অপসারণ করতে আগামীতে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
প্রতিবেদক: কবির হোসেন মিজি, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪