চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর সুলতানাবাদ ইউনিয়নের হাতিঘাট গ্রামে প্রধানীয়া বাড়ির ছিদ্দিকুর রহমানের প্রতিবন্ধী মেয়েকে (১৩)কে একই বাড়ির সিরাজুল ইসলামের ছেলে রবিউল (২৫) পাশের বাগানে নিয়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত এবং সম্ভমহানীর অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্ভ্রমহারা ওই প্রতিবন্ধীর মায়ের বুক ফাটা আর্তনাদে মতলব থেকে এখন চাঁদপুর সদর হাসপাতালের আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠছে।
প্রত্যক্ষদর্শী এবং প্রতিবন্ধীর পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়রা অভিযোগ করেন, গত ১৫ এপ্রিল শুক্রবার বিকেল ৩টায় হাতিরঘাট গ্রামের প্রধানীয়া বাড়ির রবিউল প্রতিবন্ধী ওই মেয়েটিকে বাড়ির পাশের বাগানের ঝোঁপে নিয়ে জোরপূর্বক শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত এবং সম্ভ্রমহানী করার সময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একই বাড়ির এক মহিলা ওই প্রতিবন্ধী মেয়েটির গোঙ্গানির আওয়াজ শুনে এগিয়ে গেলে রবিউল মেয়েটিকে রেখে দৌড়ে পালিয়ে যায়। ওই মহিলার ডাক চিৎকার শুনে বাড়ির এবং গ্রামের লোকজন জড়ো হয়। এবং তাৎক্ষণিক লম্পট রবিউলের পরিবারকে বিষয়টি অবহিত করলে তারা রবিউলের উপযুক্ত বিচার করবে বলে এলাকাবাসীকে আশ্বস্ত করে।
পরবর্তীতে এলাকার লোকজন ও গ্রাম্য ডাক্তার এসে প্রতিবন্ধী ওই মেয়ের মাকে মেয়েটির চিকিৎসা নিতে বললে তিনি শনিবার চাঁদপুর সদর হাসপাতালে মেয়েটিকে নিয়ে আসেন।
ডিউটিরত আরএমও ডা. মো. বেলায়েত হোসেন প্রতিবন্ধী ফারিয়ার অবস্থা খারাপ দেখে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিয়ে গাইনী বিভাগে ভর্তির নির্দেশ দেন।
এ ব্যাপারে মেয়েটির মা জানায়, গত শক্রবার বিকেল ৩টার দিকে আমাদের বাড়ির এক আত্মীয় বাগানে আমার মেয়ের গোঙ্গানীর আওয়াজ শুনে দেখতে গেলে রবিউলকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে এবং আমার মেয়ে চোখের জল ছেড়ে দিয়ে তাকে সম্ভ্রমহানির ঘটনা জানায়। এলাকার লোকজন এসে রবিউলকে খোঁজ করলে তাকে পাওয়া যায়নি। পরে রবিউলের বড় ভাই মেয়েটির মা’র কাছে এসে তার ভাইয়ের অপরাধের কথা স্বীকার করে কাউকে না জানানোর জন্যে বলে এবং বিষয়টি তারা পারিবারিকভাবে সমাধান করবে বলে জানায়।
ফারিয়ার মা সাংবাদিকদের দেখে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলে ‘ভাই গরিবের জন্য এ দেশে বিচার নাই টাকার কাছেই সব হাইরা যায়। আমরা গরিব মানুষ ভয়ে মামলাও করি নাই। দোষ করলো যারা তারাই আবার আইসা হুমকি দেয় আমগোরে মাইরা হালাইবো। হাসপাতালে আইছি এহানে হাছা রিপোর্ট পাইকি না আল্লায় জানে। আল্লার কাছে বিচার দিছি হেয় শয়তানগো বিচার করবো। হুনছি এসপি মেডাম ভালা উনি যদি শয়তান ডার বিচার করতো।’
বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়ে গেলে রবিউল অন্য এলাকা থেকে বখাটেদের এনে ওই প্রতিবন্ধী মেয়েটির পরিবারকে হুমকি ধমকি দেয়।
সুলতানাবাদ ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড মেম্বার নাজমূল হকের সাথে আলাপকালে তিনি বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি জেনেছি এলাকাবাসী এবং ওই বাড়ির লোকজন বলেছে ঘটনা সত্য। রবিউল বখাটে ধরনের, তার দ্বারা প্রতিবন্ধী ফারিয়ার সম্ভ্রমহানি হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ অভিযোগের বিষয়টি চেয়ারম্যান সাহেবকে অবহিত করবো।’
সুলতানাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী জানান, ‘বিষয়টি আমি কিছুক্ষণ আগে অবহিত হয়েছি আগামীকাল (রোববার) আমি ওই এলাকায় যাবো এ বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করবো।
এলাকার লোকজন বলেছে, রবিউল কর্তৃক প্রতিবন্ধী মেয়েটির সম্ভ্রমহানির অভিযোগের ঘটনা সত্য।