চাঁদপুর

চাঁদপুরে প্রচীনতম মসজিদ পরিদর্শনে জেলা প্রশাসন

চাঁদপুরে সন্ধান পাওয়া সুলতানি আমলের মসজিদটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছে সরকারি প্রশাসন। শুক্রবার(৩১ আগস্ট) দুপুরে জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা সরেজমিন পরিদর্শন করেন। কয়েক দিন আগে সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের ছোটসুন্দর গ্রামের তালুকদারবাড়ির দিঘির পাড়ে জঙ্গলবেষ্টিত এই মসজিদের সন্ধান পাওয়া যায়।

শুক্রবার(৩১ আগস্ট) দেখা যায়, বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মানুষজন মসজিদটি দেখছে। দুপুরে সেখানে চাঁদপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক শওকত ওসমান জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে উপস্থিত হন। তিনি মসজিদটি ঘুরে দেখে জানান, প্রাচীন এই মসজিদ সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব সরকার নিয়েছে।

মসজিদের চারপাশে নিরাপত্তা দেয়াল, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কাছে এর পরিচিতি নিশ্চিত হতে প্রয়োজনীয় সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ জামাল হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নেজারত ডেপুটি কালেক্টরেট মোহাম্মদ সাইফুর রহমান, চাঁদপুর প্রেস ক্লাব সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আল মামুন প্রমুখ।

ধারণা করা হচ্ছে, এটি পাঁচ শতাধিক বছরের পুরনো মসজিদ। এক গম্বুজবিশিষ্ট লাল ইটের গাঁথুনির মসজিদটির দৈর্ঘ্য ১৬ ফুট ও প্রস্থ ১৫ ফুট। এর চারটি ছোট মিম্বর, একটি মেহরাব ও কোরআন রাখার বেশ কিছু খোপ রয়েছে। পোড়া ইট, বালু, চুন ও সুরকি দিয়ে এটি নির্মাণ করা হয়েছে।

ছোটসুন্দর তালুকদারবাড়ির প্রবীণ ব্যক্তি আব্দুল আজিজ তালুকদার আরজু (৭০) জানান, মসজিদটি ঘন জঙ্গলবেষ্টিত ছিল। সাপ ও অন্যান্য প্রাণীর ভয়ে সেখানে কেউ যেত না। সম্প্রতি সেখানে পুরনো একটি বড় গাছ কেটে ফেলার পর মসজিদটির অস্তিত্ব তাঁদের চোখে পড়ে। পরে সেখানকার ঝোপজঙ্গল কেটে ফেলা হয়। তিনি বলেন, তাঁর তিন পুরুষের কেউ জানতেন না যে এখানে একটি মসজিদ আছে।

রামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আল মামুন বলেন, মসজিদটি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষজন ছুটে আসছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. দীপু মনি পাশের গ্রামের বাসিন্দা। তাই বিষয়টি তাঁকে জানানো হলে তিনি এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারি প্রশাসনসহ প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরকে জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, শাহরাস্তি ও কচুয়া উপজেলায় সুলতানি আমলের এমন আরো বেশ কয়েকটি মসজিদ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সুলতানি আমলে ইসলাম প্রচার ও প্রসারের জন্য অনেক কামেল-দরবেশ এসব জনপদে এসেছিলেন। তাঁদের অবস্থান, ধর্ম প্রচার ও ইবাদতের জন্য ছোট আকারের এই মসজিদগুলো নির্মাণ করা হয়।

করসপন্ডেট

Share