চাঁদপুর

চাঁদপুরে প্রচারণায় দলকে প্রাধান্য দিচ্ছেন কাউন্সিলররা

অনেক জল্পনা-কল্পনা শেষে সারাদেশের ন্যয় চাঁদপুর জেলার পৌর নির্বাচনে বড় দু’দলের একক প্রার্থী নির্ধারনের অনিশ্চয়তার অবসান ঘটলো গত মঙ্গলবার রাতে। অবশেষে চাঁদপুর জেলার ৫টি পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মনোনীত ১০ প্রার্থীর নাম প্রকাশ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই দলীয় মনোনয়নপত্র তাদের হাতেও পৌঁছে গেছে মর্মে বিএনপি ও আওয়ামীলীগের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

দলীয় বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরপরই প্রায় সব মেয়র প্রার্থীগণ মনোয়নপত্র স্ব-স্ব উপজেলা নির্বাচন অফিসে জমাও দিয়েছেন। গত মঙ্গলবার রাতে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির কেন্দ্র থেকে পাওয়া প্রত্যায়নপত্র এখন প্রার্থীদের হাতে পৌঁছেছে।

আওয়ামী লীগ থেকে ৫ পৌরসভায় নৌকা প্রতীকে মেয়র পদে প্রার্থীর দলীয় প্রত্যায়নপত্র পেয়েছেন হাজীগঞ্জ পৌরসভায় মাহবুবুল আলম লিপন, মতলব পৌরসভায় আওলাদ হোসেন, কচুয়া পৌরসভায় নাজমুল আলম স্বপন, ফরিদগঞ্জ পৌরসভায় মাহফুজুল হক ও ছেংগারচর (মতলব উত্তর) পৌরসভায় রফিকুল আলম জজ।

এদিকে বিএনপি থেকে ধানের শীষ প্রতীকে মেয়র পদ প্রার্থী হিসেবে প্রত্যায়নপত্র পেয়েছেন, হাজীগঞ্জ পৌরসভায় আব্দুল মান্নান খান বাচ্চু, মতলব পৌরসভায় এনামুল হক বাদল, কচুয়া পৌরসভায় মোঃ হুমায়ূন কবির প্রধান, ফরিদগঞ্জ পৌরসভায় মোঃ হারুন-অর-রশিদ ও ছেংগারচর পৌরসভায় সারোয়ারুল আবেদীন।

প্রার্থী বাছাই পদ্ধতি সম্পর্কে আওয়ামী লীগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পৌর মেয়র পদে প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে জেলা কমিটি, উপজেলা কমিটি, শহর কমিটি/পৌর কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য বৈঠক করে একজন প্রার্থী মনোনয়ন করবেন। নির্বাচনী আইন, নীতিমালা ও বিধিমালা অনুযায়ী সেই প্রার্থীর সব তথ্য ৩০ নভেম্বরের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে পাঠাতে হবে। পরে কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ড মেয়র প্রার্থীর নাম বরাদ্দ করবে।

এদিকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন নতুন আইনে শুধুমাত্র মেয়র প্রার্থীদের ক্ষেত্রে দলীয় প্রতীক তথা দলীয় প্রার্থীর ভিত্তিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া কথা থাকলেও কাউন্সিলর পদের বিষয়টি আগের নিয়মে থেকে যায়। কিন্তু সম্প্রতি কাউন্সিলর প্রার্থীদের দৌড়ঝাপ, নির্বাচনী প্রচারণা, মনোনয়পত্র জমা ও সংবাদকর্মীদের তথ্য প্রদানের ক্ষেত্রেও দলীয় বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে আসছেন। যদিও তারা নির্বাচন কিংবা প্রতীকের ক্ষেত্রে দলীয় বিষয়কে নীতিগতভাবে অগ্রাধিকার দিতে পারছেন না, তারপরেও সবাই দলীয় নেতাকর্মীদেরকে কাছে টানতে দলকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। এ নিয়ে ভোটারদের মাঝেও রয়েছে চরম আগ্রহের পাশাপাশি পূর্বের নির্বাচনী ভোট কেন্দ্রের চিত্রে চরম উৎকণ্ঠা।

তবে সরকারবিরোধীজোটের অনেকেই নির্বাচনটি লোক দেখানো হিসেবেই নিয়ে নিয়েছেন। কারণ হিসেবে একাধিক ভোটার সমষ্টিগত মতামত ব্যক্ত করে জানিয়েছেন, এই নির্বাচনটি হচ্ছে নীতিগতভাবে দলীয় প্রার্থী ও প্রতীকে, কিন্তু এর আগে উপজেলা নির্বাচন হয়েছে, তা কিন্তু দলীয় প্রতীকে ছিলো না, কিন্তু তাতেও সরকার ও বিরোধীদলের সমর্থকদের অনেকেই তাদের গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রধান হাতিয়ার মূলবান ভোটটি প্রকাশ করতে পারেন নি। তাই যেহেতু এ নির্বাচনটি নীতিগতভাবে দলীয় প্রতীকেই হচ্ছে তাতে পূর্বের হিসেবে অনেকটাই শংকার সৃষ্টি করেছে। তবে দু’দলের শক্ত অবস্থান নিশ্চিত থাকলে ভোটারদের এই শংকা সম্ভাবনায় পরিগণিত হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকগণ।

অপরদিকে ভোটারদের শংকা দূর করতে নির্বাচন কমিশন সরকার দলের মন্ত্রী-এমপিদের দাবিকে উপক্ষো করে সাংসদ ও মন্ত্রীদেরকে প্রচারণা থেকে বাদ রেখেছেন যা পূর্বের নির্বাচনেও ছিল।

এতে করে অনেকটা স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে এবারের নির্বাচনে ভোটাররা যোগ্যতার পাশাপাশি প্রাথীরা দলীয় প্রতীক ও দলীয় প্রার্থীকে সবার ঊর্দ্ধে রাখার চিন্তা করছেন।

এদিকে মনোনয়ন পাওয়ার পর কচুয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির প্রধান বলেন, আমি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, জেলা বিএনপি এবং তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছে কৃতজ্ঞ। সকলে মিলে কাজ করলে এবং সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমি বিজয়ী হবো-ইনশাআল¬াহ।

প্রসঙ্গত, এই প্রথমবারের মতো পৌর নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হচ্ছে। তবে কাউন্সিলর নির্বাচন পূর্বের মতোই নীতিগতভাবে নির্দলীয়ভাবে হবে। ইসির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৩০ ডিসেম্বর দেশের ২৩৬টি পৌরসভা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নতুন আইন অনুযায়ী পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী দলীয় মনোনয়নে হলেও কাউন্সিলর পদে নির্দলীয়ভাবে হবে। তফসিল অনুাযয়ী ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেয়া যাবে। ৫ ও ৬ ডিসেম্বর মনোনয়ন বাছাই এবং প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৩ ডিসেম্বর।

দেলোয়ার হোসাইন

নিউজ ডেস্ক  ।। আপডেট : ১০:৪৪ এএম, ০৩ ডিসেম্বর ২০১৫, বৃহস্পতিবার

ডিএইচ

Share