Home / চাঁদপুর / চাঁদপুরে পৌর নির্বাচন শেষ না হতেই দরজায় কড়া নাড়ছে ইউপি নির্বাচন
চাঁদপুরে পৌর নির্বাচন শেষ না হতেই দরজায় কড়া নাড়ছে ইউপি নির্বাচন

চাঁদপুরে পৌর নির্বাচন শেষ না হতেই দরজায় কড়া নাড়ছে ইউপি নির্বাচন

যদিও নির্বাচন কমিশন চাঁদপুরের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেনি, তারপরও মার্চে নির্বাচন হচ্ছে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের এমন ঘোষণাতে গ্রাম-গঞ্জের বিভিন্ন চায়ের দোকানে অলিতে গলিতে আলোচনার ঝড় বইতে শুরু করেছে।

প্রার্থীগণ ভোটারদের দুয়ারে গিয়ে নিজেদের পদ পরিচয় জানান দিচ্ছেন। প্রতিশ্রুতির বন্যায় ভাসিয়ে দিয়ে ভোটারদের মন জয় লাভ করে সময় পার করেছেন অনেকে।

এবারের ইউনিয়ন নির্বাচনে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় এমনও প্রার্থী রয়েছেন যারা বহু দিন থেকে নিজেদের চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে জানান দিয়ে আসছে। বিভিন্ন বাৎসরিক অনুষ্ঠানে নিজেদের সরব পরিচয় মেলে দিয়ে আসছেন। তবে নতুনদের পদ পরিচয়ের কথা বর্তমানদের চেয়ে একটু বেশিই শুনা যাচ্ছে।

তবে এবারের নির্বাচন জনপ্রিয়তা বা ব্যাক্তির অধিনে নয়। কোনোরকমভাবে ক্ষমতাসীন দলের কাছ থেকে মার্কা নিতে পারলেই যেন চেয়ারম্যান। চায়ের দোকানে বসে এরকমই আলোচনা করতে শোনা যায় সাধারণ ভোটাররা।

এ ধরনের মন ভাসনা নিয়েই সামনের দিক পাড়ি দিচ্ছেন অনেকে। ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ১৫ টি ইউনিয়নে ১৫ জন চেয়ারম্যান রয়েছেন , বাস্তবিক অর্থে এ ১৫ জনের মধ্যে হয়তো দু’একজন ব্যাতিত বাকিরা শুধু কোন রকম ভাবে নিজেদের ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পরিচয় ছাড়া আর কিছুই উপহার দিতে পারেনি।

শুধু নাম পরিচয়েই সিমাবদ্ধতায় নয়, মোটামুটিভাবে নিজেরা অর্থ হাতিয়ে চেয়ারম্যানের চেয়ারে বসে নিজেদের বিলাশবহুল জীবন-যাপন করেছেন। আর ভাবছেন কি ভাবে পরের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া যায়।

এ উপজেলায় এমন কোন ইউনিয়ন বাদ নেই যেখানে চলাচলেন জন্য মানসম্যত একটা রাস্তা আছে। প্রতিটি ইউনিয়নে রাস্তার দুর্দশা এমন যেখান দিয়ে চলাচল করতে অসুস্থ মানুষ তো দুরের কথা একজন সুস্থ মানুষ ও মুহর্তের মাঝে অসুস্থ হয়ে পড়বে।

জনসাধারণেরর মনে এবং মুখে একটাই প্রশ্ন , সরকারের নিকট থেকে পাওয়া অর্থ এবং অনুদান যাচ্ছে কোথায়। ইউনিয়নে পর্যায়ে এমনও প্রতিবন্ধি রয়েছে যাদের এখনও প্রর্যাপ্ত ভাবে ভাতার ব্যাবস্থা করা হয়নি। আর বয়স্কদের কথা না হয় নাই, ইউনিয়ন পর্যায়ে এমন অসংখ্য বয়স্ক রয়েছেন যারা কোনোরকমভাবে বিভিন্ন বাৎসরিক উপহার তথা যাকাত ব্যাতিত আর কিছুই ভাগ্যে মেলেনি।

এ অবস্থাতে ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ৯ নং উত্তর গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের কয়েকজন বয়স্ক মহিলারর সাথে আলাপ কালে জানতে পারা যায়, আপনারা ভিক্ষা করেন কেনো? ইউনিয়ন থেকে আপনাদের বয়স্ক ভাতা দেয়নি? উত্তরে তারা বলেন , বয়স্ক ভাতা কি? কোথায় পাওয়া যায়, আমরা শুনেছি বয়স্কদের জন্য সরকার টাকা দেন তবে কি ভাবে সংগ্রহ করা লাগে আমরা তা জানিনা। ফরিদগঞ্জ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন বাসীর মনে একটাই ভাষনা আমাদের মাঝে এমন একজন করে ইউনিয়ন নেতা চেয়ারম্যান আসুক যাহার মাধ্যমে আমরা আমাদের চলাচলের জন্য রাস্তাটুকু পাকা নির্মানাধীন অবস্থায় পাই।

এরকম শত সমস্যা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সাধারণ ভোটাররা। যে প্রার্থীই আসুক তাদের দাবি তারা তুলে ধরবেন এমন কথাই বলছেন জনগণ। এছাড়া বিগত উপজেলা পরিষদ এবং পৌর সভার নির্বাচন অভিজ্ঞতা থেকে অনেকেই ভোট দিতে অনীহা প্রকাশ করেন। ভোটের প্রতিফলন না হওয়াতে ভোট দেওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন সাধারণ ভোটাররা। তারা অধীর আগ্রহ নিয়ে বসে আছে কি হয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে।
হাজীগঞ্জ উপজেলার ১১ নং পশ্চিম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন টিপু। চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মঙ্গলবার বিকালে উঠান বৈঠকের আয়োজন করেছেন।

ইউনিয়নের ধড্ডা শেখ আলী মাজার প্রাঙ্গনে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দসহ কয়েক’শ এলাকার জনগণকে নিয়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকটিতে ইউপি নির্বাচন সম্পর্কে আলোচনার চেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে ব্যক্তির রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে।
একই পরিস্থিতি কচুয়া উপজেলাতেও।

এ উপজেলায় ইউপি নির্বাচনে মেম্বার ও চেয়ারম্যান সবাই রাজনৈতিক সুবিধা ও সাপোর্ট পেতে এখন থেকেই দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছে।

এক্ষেত্রে সরকার সমর্থিতরা অনেকাংশে এগিয়ে। কমিটি কেন্দ্রিক ভঙ্গুর অবস্থায় থাকায় বিএনপি কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। তবে সম্প্রতি কচুয়া উপজেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়ে যাওয়ায় তৃণমূল ও সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা কিছুটা হালে পানি পেয়েছেন।

ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ ও বিএনপি’র সম্ভাব্য প্রার্থীরা আগাম নতুন বছরের শুভেচ্ছা, ভাষার মাস একুশে ফেব্রুয়ারী উপলক্ষে আগাম পোস্টার, ব্যানার, পেস্টুন ইউনিয়নব্যাপী সাটিয়ে জনসাধারনের মন জয়ের চেষ্টা করে দৌড় ঝাঁপ শুরু করেছেন।

সব মিলিয়ে ইউনিয়নের পাড়া মহল্লায়, চায়ের দোকানে ও হাট-বাজারে আলোচনার ঝড় বইছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে। কেউ কেউ আওয়ামীলীগ ও বিএনপি দলীয় সমর্থন পেতে হাই কমান্ডে জোর লভিং ও তদবীর শুরু করেছেন।

অনেকে দলীয় একক সমর্থন পাওয়ার আশায় জোর লবিং-তদবির করছেন হাই কমান্ডে এবং নির্বাচিত হলে ইউনিয়নবাসীর কল্যাণে কে-কী কাজ করবেন তার নানান প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন ভোটারদের কাছে।

তবে ভোটাররা জানিয়েছেন ভিন্ন কথা। কচুয়ার অধিকাংশ বাজারগুলোরা উন্নয়ন, মাদক নির্মূল, অনেক কাঁচা রাস্তা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা সমস্যা রয়েছে। এসকল সমস্যা সমাধানে যিনি এগিয়ে আসবেন, তাকেই চেয়ারম্যান নির্বাচিত করবেন তারা।

সানাউল হক,

 আপডেট ২:২৬ পিএম, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, বুধবার

ডিএইচ