মানুষের লিখিত ও মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে সত্যতা যাচাই পূর্বক র্যাব-১১ কুমিল্লার একটি বিশেষ দল চাঁদপুর পাসপোর্ট অফিস এলাকা তরপুরচন্ডীতে অভিযান চালিয়েছে। এতে পাসপোর্ট দালাল চক্রের মূলহোতা মো. ইয়াসিনসহ ১৬ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
রবিবার (২৩ জুন) দিনগত রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন র্যাব-১১ কুমিল্লার কোম্পানি অধিনায়ক (উপপরিচালক) লেফটেনেন্ট কমান্ডার মাহমুদুল হাসান।
গ্রেফতার দালালরা হলেন- চাঁদপুর সদর উপজেলার তরপুুরচন্ডী এলাকার হাতেম আলীর ছেলে মো. মামুন (৩৭), ছিটু গাজীর ছেলে মোবারক গাজী (৪০), মধ্য তরপুুরচন্ডী এলাকার মৃত সিরাজ মিজির ছেলে মো. সেলিম (৪০), মিজানুর রহমানের ছেলে মো. রবিউল আলম (২৮), তাজুল ইসলামের ছেলে মো. অমিত হাসান (২৮), দক্ষিণ তরপুরচন্ডী এলাকার কাশেম আলী দেওয়ানের মো. তোফাজ্জল দেওয়ান (৫৫), মির্জাপুর এলাকার মুসলিম গাজীর ছেলে মো. শরিফ হোসেন (৩৭), উত্তর পাইক আচড়া এলাকার শাহজাহান প্রধানিয়ার ছেলে শাওন (২২), পালকান্দি এলাকার ইমরান মিজির ছেলে তামিম হোসেন (২৩), মৈশাদি মির্জাপুর এলাকার ইব্রাহিমের ছেলে রানা (৩৭), শাহজাহান গাজীর ছেলে সাজ্জাদ (১৯), সাবদি পাঁচগাও এলাকার মৃত আব্দুল বারেক মজুমদার ছেলে নুরুল ইসলাম মজুমদার (২৬), বিমলের গাঁও এলাকার ইলিয়াসের ছেলে মো. ইয়াসিন (২২), সুবিদপুর এলাকার মনির হোসেনের ছেলে মুনকার আহমেদ রাজ (২২), ফরিদগঞ্জ উপজেলার পালতালুক এলাকার হাফেজের মো. তানভীর (২৩) এবং হাজীগঞ্জ উপজেলা বিশকাটালী এলাকার সাত্তার পাটোয়ারীর ছেলে আরমান হোসেন (৩০)।
কুমিল্লা অঞ্চলের র্যাবের অধিনায়ক কর্নেল মাহমুদুল হাসান বলেন, আটক ১৬ জন পাসপোর্ট দালাল চক্রের সদস্য। এদের মধ্যে ইয়াসিন এ চক্রের মূলহোতা। রোববার দুপুরে তাদের আটক করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অধিকাংশ সময়ে অসংখ্য ভুক্তভোগী দালাল চক্রের সদস্যকে পাসপোর্ট করতে দিয়ে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার পরও যথাসময়ে পাসপোর্ট পায়নি। তারা আমাদের কাছে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ করেন। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে চাঁদপুর পাসপোর্ট অফিসের সামনে থেকে তাদের আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ১৮৩টি ডেলিভারি স্লিপ, ৮টি মোবাইল ও নগদ ৪৫ হাজার ২০০ টাকাসহ পাসপোর্ট সংক্রান্ত বিভিন্ন নথিপত্র উদ্ধার করা হয়।
কর্নেল মাহমুদুল হাসান বলেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে পাসপোর্ট তৈরি করে দেওয়ার নাম করে ভুক্তভোগী লোকজনের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ফির চেয়ে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়ে আসছিল বলে স্বীকার করে। মূলত তারা সাধারণ মানুষকে সহজভাবে পাসপোর্ট তৈরি করার নাম করে বিভিন্ন এজেন্টের কাছে নিয়ে যায়। এই এজেন্ট গ্রুপ ভুক্তভোগীদের অনলাইন আবেদন ও ব্যাংক ড্রাফট করে দেওয়ার পাশাপাশি দ্রুত সময়ে পাসপোর্ট দেবে বলে ডেলিভারি স্লিপ নিজেদের কাছে রেখে দেয় এবং বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে পাসপোর্ট ডেলিভারি করার নির্দিষ্ট তারিখ নির্ধারণ করে। এভাবে তাদের কাছে টাকা জমা দিলে তারা বিভিন্নভাবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জালিয়াতির মাধ্যমে প্রস্তুত করে সব কার্যক্রম সম্পন্ন করে পাসপোর্ট অফিস থেকে পাসপোর্ট সংগ্রহ করার ব্যবস্থা করে আসছিল। এ বিষয়ে আটক আসামিদের বিরুদ্ধে চাঁদপুর সদর থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পাসপোর্ট দালাল নির্মূলে র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
স্টাফ করেসপন্ডেট, ২৪ জুন ২০২৪