আর সপ্তাহখানেক পরেই বিশ্বের সকল মুসলিম উম্মাহর ন্যায় আমাদের দেশের মুসলমানরাও মেতে উঠবে ঈদুল ফিতরের আনন্দে।
স্বজনদের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগ করে নিতে প্রতিবছরই দূর-দুরান্তে জীবিকার প্রয়োজনে ব্যস্ততায় আটকে থাকা মানুষগুলো নাড়ির টানে ফিরে আসেন দেশের বাড়ি। দেশের সমগ্র জেলার ন্যায় চাঁদপুরেও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মানুষ আর যানজট। বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে বঙ্গবন্ধু সড়ক তৈরি করেও নিয়ন্ত্রণ হয়নি যানজট।
ফলে ঈদ এলেই বাড়তি মানুষ আর যানজটে নাকাল হয়ে ওঠে সিকি কোটিরও বেশি মানুষের প্রিয় চাঁদপুর। পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে রমজানের মধ্যভাগ থেকেই চাঁদপুর শহর অনেকটাই ক্লান্ত হয়ে উঠছে। আর ঈদের কেনাকাটা করতে বের হওয়া মানুষগুলোকে পড়তে হচ্ছে যানজট নামের এ ভোগান্তির মুখে।
বিগত দিনের অভিজ্ঞতার আলোকে দেখা যায় জেলার ট্রেন স্টেশন, লঞ্চঘাট ও বাস ষ্টেশনগুলোর প্রধান স্ট্যান্ডগুলি শহরের প্রাণকেন্দ্র কালীবাড়ি এলাকার কাছাকাছি হওয়ায় সারা বছর ছোট্ট এ শহরটিতে যানজট লেগেই থাকে।
এছাড়া মত্রারিক্ত সিএনজি অটোরিক্সা, ব্যাটারি চালিত অটোবাইক, যানজটের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
একটি সূত্র থেকে জানা যায় শহরে এখনো প্রায় সহ¯্রাধিক সিএনজি আটো-রিক্সা লাইসেন্স বিহীন অবৈধবাবে চলাচল করছে। এসব সিএনজি আটো রিক্সাগুলোর মালিকরা ট্রাফিক পুলিশকে মাসিক চাঁদা প্রদানের মাধ্যমে পরিবহন চালিয়ে যাচ্ছে। এতে করে সরকার মোটা অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তা অনায়নেই বলা যায়।
অপর দিকে গ্যাস চালিত নতুন অট্রো রিক্সা-গুলো পৌরসভার লাইসেন্সের আওতায় না আসলেও এব্যপারে কতৃপক্ষ কিছুটা নিরব রয়েছে।
তাছাড়া ধারণ ক্ষমতার চেয়েও কয়েকগুণ বেশি সিএনজি, অটোরিক্সা, ব্যাটারি চালিত অটোবাইক শহরের চলাচলের লাইসেন্স দেয়ায় নগর কর্তৃপক্ষের প্রতি শান্তি প্রিয় শহরবাসীর কিছুটা চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এ দিকে শহরের কালিবাড়ি শপথ চত্ত্বর, শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ, ছায়াবাণীর মোড়সহ শহরের বিভিন্ন গুত্বপূর্ণস্থানে গাড়ি থামিয়ে যাত্রী ওঠা নামা করাও যানজটের অন্যতম একটি কারণ।
শনিবার (২৫ জুন) সকাল ১০টা থেকে রাত ৯ টাপর্যন্ত শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো যানজট দেখা যায়। তবে সবচেয়ে বেশি যানজট দেখা যায়, শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সড়কের হকার্স মার্কেট থেকে শুরু করে ছায়াবাণী মোড়, গণি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে শুরু করে মহিলা কলেজ সড়ক পর্যন্ত আর কালীবাড়ি শপথ চত্ত্বর থেকে পাল বাজার ব্রীজের গোড়া এলাকায়।
এদিকে শনিবার (২৫ জুন) চাঁদপুর জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় বিভিন্ন বক্তাদের বক্তব্যে শহরের যানজটের বিষয়টি উঠে আসে। ওই সভায় জেলা প্রশাসক মো. আব্দুর সবুর মন্ডল ও পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার তাদের বক্তব্যে ঈদে যানজট নিরসনে ব্যাপক প্রস্তুতির কথা জানান।
তারা জানান, ‘আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরকে আনন্দময় করতে শহরেকে অবশ্যই যানজট মুক্ত রাখা হবে। এবং ঈদ মার্কেট করতে আসা ক্রেতাসহ সর্বধারণের জন্য বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হবে।’
সভায় আরো জানানো হয়, কোনো মতেই চাঁদপুর শহরে ট্রাক্টর ও লাইসেন্সবিহীন অবৈধ সিএনজি-মোটরসাইকেল চলতে দেয়া হবে না।’
অপরদিকে এছাড়াও রমজানের আগেই শহরকে ফুটপাত ও অবৈধ দখলমুক্ত করার জন্য পৌর মেয়রের নির্দেশে পৌর-পরিষদ সাহসি ভূমিকা রাখাতে দেখা গেছে।
শহরবাসীর দাবি আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে লাইসেন্স বিহীন অবৈধ রিক্সা, সিএনজি, অটোরিক্সাগুলোর বেপরোয়ার চলাচল ঠেকানোসহ শহরের যত্রতত্র সিএনজি থামিয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করা বন্ধ করা প্রয়োজন।
প্রতিবেদক- আশিক বিন রহিম
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৮:৫০ পিএম, ২৭ জুন ২০১৬, সোমবার
ডিএইচ