চাঁদপুরে পরিত্যক্ত ভবনে ঝুঁকি নিয়ে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান

চাঁদপুর সদর উপজেলার ব্রাহ্মণসাখুয়া আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেনিকক্ষের অভাবে পরিত্যক্ত ভবনে ঝুঁকি নিয়ে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কর্মসূচি।

বিদ্যালয় ভবনের ছাদের বিভিন্নস্থানে দেখা দিয়েছে ফাটল। কোথাও কোথাও পলেস্তারা খসে পড়ছে, বেরিয়ে পড়েছে রড। চাঁদপুর সদর উপজেলা বাগাদী ইউনিয়নে ব্রাহ্মণসাখুয়া আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণী কক্ষের অভাবে এমন ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন চলছে পরিত্যক্ত ভবনে পাঠদান।

বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণির বেশ কয়েক জন শিক্ষার্থী জানান আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করে যাচ্ছি। অনেক সময় বাড়ি থেকে বাবা-মায়েরা স্কুলে আসতে নিষেধ করে। তার পরও এমন শঙ্কার ভেতরে ক্লাস করছেন তারা। দ্রুতই তারা নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষের কাছে।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৮৪ সালে চাঁদপুর সদর উপজেলার ৮নং বাগাদী ইউনিয়নে ব্রাহ্মণসাখুয়া নামক স্থানে এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। বিদ্যালয়ে মোট ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১৫৬ জন। এতে প্রথম শ্রেণী থেকে ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য যে ক,টি কক্ষের প্রয়োজন, সে তুলনায় সে ক’টি শ্রেণিকক্ষ নেই। তাই শিক্ষার্থীদের পাঠদানেও ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের।

চাঁদপুর সদর উপজেলার ৮নং বাগাদী ইউনিয়নের ব্রাহ্মণসাখুয়া আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ওই বিদ্যালয়ের প্রতিটি পিলার, কক্ষের ছাদ ও বিমের পলেস্তারা খসে পড়েছে। জং ধরা রডগুলো বের হয়ে আছে। অনেক স্থানে দেয়ালে ফাটল ধরেছে। শ্রেণিকক্ষের মধ্যে ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের গায়ে পড়ছে। বিদ্যালয় ভবনের এমন পরিস্থিতিতে চরমভাবে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ পাটোয়ারী বহুবার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এর কার্যালয়ে নতুন ভবনের জন্য আবেদন করেও সুফল পাচ্ছে না বলে জানান ওই শিক্ষক।

তিনি বলেন, তারা আমাদের নতুন ভবন দিবে বলেও, বিলম্ব হচ্ছে। বিদ্যালয়ের একটি ভবনে আমাদের শিক্ষকদের কক্ষ, একটি প্রাক প্রাথমিক কক্ষ, আরেকটিতে একটি ক্লাসের পাঠদান হচ্ছে। তাই আমি ভবন সংকট এর কারনে বাধ্য হয়ে পরিত্যক্ত ভবনে ২ টি শ্রেনীর ক্লাস নিচ্ছি৷

এদিকে শ্রেনী কক্ষের অভাবে বর্তমানে পরিত্যক্ত জরাজীর্ণ ভবনে শিক্ষকরা ঝুঁকি নিয়ে চালাচ্ছেন পাঠদান কার্যক্রম। দিন দিন ঝুঁকি আরো বাড়ছে। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে । বিদ্যালয়ের ভবনের এমন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। জরাজীর্ণ ভবনের কারণে অভিভাবকরা অন্যত্র ভর্তি করছে তাদের ছেলে মেয়েদের। বর্তমানে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৫৬ জন।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও অভিভাবকগন জানান, বিদ্যালয়টির শ্রেণিকক্ষের অনেক সংকট রয়েছে। নতুন ভবন নির্মাণ না করার কারণে ঝরাজীর্ণ পরিত্যক্ত ভবনে বর্তমানে বিদ্যালয়ের ক্লাস পরিচালনা হয়ে আসছে। এতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যায়। তাই আমরা দ্রুতই নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।

প্রতিবেদক: কবির হোসেন মিজি, ২৩ মে ২০২৩

Share