পদ্মা-মেঘনা নদীর ইলিশ কম মিললেও চাঁদপুরের মাছঘাট দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় নদীর ইলিশে সয়লাব হয়ে গেছে। ৬৫ দিন নিষিদ্ধ থাকার পর সাগর মোহনায় ফের মাঝ ধরার মৌসুম শুরু পর জেলেদের জালে ঝাঁকেঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে। সেই ইলিশ সরাসরি চলে আসছে চাঁদপুর মাছঘাটের পাইকারী বাজার।
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবে বরাত বলেন, “এখন ইলিশের ভরা মৌসুম কিন্তু চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় কাঙ্খিত ইলিশের দেখা নেই। এখানে আসা সব ইলিশ সাগর মোহনার।
“চাঁদপুরের জেলারা ট্রলার ও জাল নিয়ে চষে বেড়িয়েও ইলিশের দেখা মিলছে না। হয়তো কিছুদিনের মধ্যে চাঁদপুরের ইলিশের আমদানি বাড়বে।”
শবে বরাত আরো জানান, প্রতিদিন এ ঘাটে ৫ হাজার থেকে ৭ হাজার মণ ইলিশ আসছে। এসব ইলিশ এখানে প্যাকেটে প্রক্রিয়াজাত করে সড়ক, নৌপথ ও রেলপথে বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়।
চাঁদপুর মাছঘাটে গিয়ে দেখা যায়, একের পর এক নৌকা থেকে বিভিন্ন আড়তে নামানো হচ্ছে ইলিশ। সেই সাথে খুচরা ও পাইকার ক্রেতারা দরদাম করে নিয়ে যাচ্ছেন এসব ইলিশ।
প্রতিদিনই চাঁদপুর মাছঘাটে দক্ষিণে সাগর উপকূলীয় এলাকা থেকে ট্রলার বোঝাই বিভিন্ন সাইজের ইলিশ আসছে। সড়ক পথে ট্রাক, মিনি ট্রাক ও পিকআপে করে দক্ষিণাঞ্চলীয় ইলিশ নিয়ে আসছে চাঁদপুরে। শ্রমিকরা ঘাটে আসা ইলিশ টুকরিতে ভরে আড়তে তুলে বড় বড় স্তূপ করে সাজিয়ে রাখছেন।
চাঁদপুর মাছঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী শাহআলম বকাউল ও রুবেল গাজী বলেন, “দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশের দখলে এখন চাঁদপুর মাছঘাট। এখন প্রতিদিন সরগরম থাকবে চাঁদপুর আড়ৎ। চাঁদপুর ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এখানে ইলিশ কিনতে আসেন ক্রেতারা।
তবে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ ‘একেবারেই কম ধরা পড়ায়’ এখানকার জেলেদের বেশিরভাগই হতাশ বলে জানান তিনি।
মৎস্য ব্যবসায়ী মোস্তফা জানান, প্রতিদিন কী পরিমাণ মাছ আসছে তার উপর দাম নির্ধারণ করে। আমদানি বাড়লে দাম কমে, আমদানি কমলে দামও বাড়ে।
“বর্তমানে চাঁদপুর মাছঘাটে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৭শ থেকে ৮শ’ টাকায়। আর চাঁদপুরের নদীর ইলিশ এক হাজার থেকে ১১শ’ টাকার মত কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।”
এছাড়া ২৪ থেকে ২৫ হাজার টাকা মণ দরে ৫শ’ থেকে ৭শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। আবার একই ওজনের চাঁদপুরের পদ্মার ইলিশ ৩৭ থেকে ৩৮ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
ইলিশের মৌসুম শুরু হওয়ার কথা জানিয়ে চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আনিসুর রহমান বলেন, “আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর এ তিন মাসে ইলিশ আহরণ বাড়বে।”
ওই সময়ের ইলিশ সুস্বাদু হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “লকডাউন থাকার কারণে নদীর পানি অনেক কম দূষণ হয়েছে। ফলে ইলিশসহ অন্য মাছ অনায়াসে বিচরণ করতে পেরেছে।”
করেসপন্ডেট,২৬ জুলাই ২০২০
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur