চাঁদপুরে পদ্মা নদীর অব্যাহত ভাঙনে দিশেহারা রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের কয়েকটি চরের মানুষজন। ভিটেবাড়ি হারিয়ে কোথায় যাবে, এমন অনিশ্চয়তার মধ্যে তাদের এখন দিন কাটছে। রোববার আরো কয়েকশ পরিবারের শেষ সম্বল বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। তবে চারপাশে নদীগ্রাস করলেও এখনও ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে তিনতলা বিশিষ্ট একমাত্র আশ্রয় কেন্দ্রটি।মেঘনার ভাঙ্গনে চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধে ফাঁটল
গত কয়েকদিন ধরে চাঁদপুরের দুর্গমচর রাজরাজেশ্বরের বিস্তীর্ণ এলাকা প্রমত্তা পদ্মার ভয়াল থাবায় বিলীন হতে চলেছে। উজানের তীব্র পানির চাপ দক্ষিণের সাগরে নামতে থাকায় রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে পদ্মা নদীর চাঁদপুর অংশটি। এতে নদীপাড়ের রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের মান্দেরবাজার, ঢালিকান্দি, রাজারচর, মজিদকান্দি, লক্ষ্মীরচরসহ আরো কয়েকটি চর ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়ে।
গত কয়েকদিনের অব্যাহত এমন ভাঙনে ইতিমধ্যে প্রায় ৪০০ বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এতে বাদ পড়েনি ফসলি জমি, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং ছোট বাজারও।
মজিদকান্দির জেলে রহমান মিয়া, কাজল গাজী, খালেক বকাউলের পরিবারের সদস্যরা নৌকাযোগে আপাতত কোনো এক আত্মীয়ের বাড়ি আশ্রয় নেবেন। তবে পরবর্তীতে কোথাও যাবেন তা বলতে পারছেন না কেউ। আর কোনদিন ফেরা হবে না পিতৃভিটায়। ঝুঁকিতে চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধের পুরানবাজার অংশ
রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হযরত আলী বেপারী জানান, প্রতিবর্ষায় চরে ভাঙন দেখা দেয়। এতে এবারের ভাঙন ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। ফলে ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তরা তাদের বসতবাড়িসহ অন্যান্য স্থাপনা হারিয়ে একটা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। সহায় সম্বল হারানো এসব মানুষজনের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সরকারি প্রশাসনসহ বিত্তবানদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন এই জনপ্রতিনিধি।
এদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় চরের মানুষদের আশ্রয়ের জন্য তিনতলা বিশিষ্ট একমাত্র আশ্রয় কেন্দ্রটি কোনো মতে এখনো ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আসে। গত দুইদিনের ভাঙনে এই কেন্দ্রের চারপাশ ঘিরে ফেলেছে বিশাল পদ্মা। ফলে ২ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে সদ্যনির্মিত আশ্রয় কেন্দ্রটি যেকোনো মূহূর্তে নদীতে তলিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় আছে।
করেসপন্ডেট,২০ জুলাই ২০২০