চাঁদপুর

বরফ সংকটে চাঁদপুরে পঁচা ইলিশ কেটে লবণ দিয়ে সংরক্ষণ

চাঁদপুরে এখন ইলিশের ছড়াছড়ি। হাটবাজার ছাড়াও রাস্তাঘাট ও অলিগলিতে অসংখ্য ফেরিওয়ালা ঝাঁপিভরে ইলিশ বিক্রি করে বেড়াচ্ছেন। দাম তুলনামূলক একটু কম হওয়ায় বিক্রিও হচ্ছে। তবে অনেক ক্রেতাদের ফ্রিজে কোরবানির মাংস থাকায় কেনার আগ্রহও নাই অনেকের।

মৌসুমের শেষ মুহূর্তে বঙ্গোপসাগরসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন মোহনায় ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। বরফ সঙ্কটে আহরিত মাছের বিরাট একটি অংশ নষ্ট হওয়া ছাড়াও কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে জেলেদের।

চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছঘাট এখন ইলিশ ভরপুর। তবে অনেক ইলিশ মাছ একেবারেই খাবার অনুপযোগী। যার জন্যে মৎস্য ব্যবসায়ীরা ভিন্ন জেলা থেকে লোক ভাড়া করে চাঁদপুর মাছঘাটে এনেছে পচা ইলিশ মাছ কেটে লবণজাত করার জন্যে।

ভাড়া করে আনা লোকজন দিবারাত্রি মাছ কাটা আর লবণজাত করতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। প্রতিদিন এরা শত শত মণ পচা ইলিশ মাছ কেটে লবণ দিচ্ছে।

আর এ পচা ইলিশ লবণজাত করতে মাছ কাটার সময় মাছের ভেতর থেকে ডিম ছাড়িয়ে আলাদা করতে দেখা যায়। এসব ইলিশের ডিম বড় সাইজের প্লাস্টিকের বাক্সভর্তি করে। যাতে নষ্ট হয়ে না যায়। সেজন্যে বরফের মাঝে রেখে দেওয়া হচ্ছে।

ইলিশ কাটার জন্য দৌলতিয়া থেকে এসেছেন মো. মজিবর। তিনি জানান, ‘বিভিন্ন যায়গা থেকে ইলিশ আসছে চাঁদপুরে। বরফ ও সরবরাহ দেরিতে হওয়ার কারনে বেশির ভাগ ইলিশই পচে যাচ্ছে। আমরা পচা ইলিশগুলো লবণজাত করে সংরক্ষণ করে রাখছি। আর এই মাছের ডিমগুলো বাক্সে বরফেরর মাধ্যমে সংরক্ষণ করা হচ্ছে।’

লবণ ইলিশগুলো জামালপুর, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, দৌলতিয়া ঘাট, ঢাকা, চট্টগ্রাম, পূবাইলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হয়ে থাকে।

এদিকে ইলিশের মূল্য কম থাকলে ডিমের দাম অনেক বেশি। যে ইলিশ মাছ ৫শ’ থেকে এক দেড় হাজার টকায় কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে, সেসব ইলিশের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২ হাজার টাকা কেজি দরে।

প্রতিটি বাক্সে আড়াই কেজি ইলিশের ডিম ধারণ করে। বক্সের মূল্য পড়ে ৫ হাজার টাকা। চট্টগ্রাম থেকে এ ডিমগুলো প্রক্রিয়াজাত করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে থাকে।

সেখানে ইলিশের ডিমের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। শুধু তাই নয়, ইলিশ মাছের চেয়ে ডিমের কদর খুব বেশি। চাঁদপুরে ইলিশের ডিম বিক্রি না হলেও ইলিশের ডিম বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে।
বর্তমান সময়টা ইলিশের মৌসুমের শেষ প্রান্তে। মৌসুমজুড়ে ইলিশের অনেকটা আকাল ছিল ইলিশের অঞ্চল খ্যাত চাঁদপুর। অন্যান্য বছরের তুললনায় চলতি বছর জেলেরা এবছর প্রচার ইলশ মাছ পেয়েছে।

মৎস্য বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইদ্রীস গাজী চাঁদপুর টাইমসকে জানান, জেলেরা এই বছর যে পরিমাণ ইলিশ পেয়েছে, তা গত ১০ বছরে এ মাছ পেয়েছে কিনা আমার জানা নেই। চাঁদপুরে ইলিশের প্রচার আমদানি। সরবরাহ বেশি থাকায় দামও কম। সব মিলিয়ে জেলেরা এবার খুশি।’

তিনি আরো জানান, ‘মাছ বেশি থাকার কারণে বরফ তৈরি করতে হিমসিম খাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে বরফের দাম একটু বেশিই হাকিয়ে নিচ্ছেন। তবে অন্যন্যবারের তুলনায় মাছ তেমন নষ্ট হচ্ছে না। যেগুলো নষ্ট হচ্ছে সেগুলোকে লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করা হচ্ছে।’

: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১:০০ এএম, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬, বুধবার
ডিএইচ

About The Author

প্রতিবেদক- শরীফুল ইসলাম
Share