চাঁদপুর

চাঁদপুরে নৌ-মন্ত্রণালয়ের ১৫ কোটি টাকার কাজ ফেরত যাওয়ার আশংকা

চাঁদপুর থেকে হাজীগঞ্জের নৌ চ্যানেলের নাব্যতা সংকট নিরসন ও ডাকাতিয়ার নৌ-রুট সচল রাখার লক্ষ্যে সরকার টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিআইডব্লিউটিএ এর তত্ত্বাবধানে নৌ চ্যানেল খননের উদ্যোগ নেয়।

গত কয়েকমাস আগে সর্বনি¤œ ১৫ কোটি টাকার বাজেট দিয়ে দেশের প্রখ্যাত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বঙ্গ খনন ড্রেজার কোম্পানী কাজটি পায়। দীর্ঘ একমাস পূর্বে শহরের ইচলীঘাট এলাকায় বঙ্গ খনন ড্রেজার কোম্পানীর নদী খননের সরঞ্জামাদি এসে পৌছলেও এখন পর্যন্ত তারা কাজ শুরু করতে পারেনি।

অভিযোগ রয়েছে চাঁদপুরের একটি নামধারী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান টেন্ডার প্রক্রিয়ায় ব্যর্থ হয়ে কাজ নিতে না পেরে চাঁদপুর হাজিগঞ্জ নৌ রুটের ড্রেজিং কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। ওই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি চাঁদা দাবি করে। তাদের কাজ করতে হলে ৩ কোটি টাকা চাঁদা দিয়ে কাজ করতে হবে।

ড্রেজিং এর ব্যপারে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক বরাবর নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে মার্চের ২৪ তারিখে প্রধান প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক রফিকুল ইসলাম তালুকদার স্বাক্ষরিত চিঠি আসার পরও জেলা প্রশাসন এখন পর্যন্ত অজানা অজ্ঞাত কারণে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ।

জানা গেছে, কিছুদিন পূর্বে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে চাঁদপুর বড় স্টেশন মোলহেড থেকে চাঁদপুর-হাজীগঞ্জ নৌ-রুটের চাঁদপুর সদরের সাহেব বাজার পর্যন্ত নদী ড্রেজিং করতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানদের টেন্ডার আহব্বান করা হয়।

এসময় চাঁদপুরের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি নেওয়ার জন্য তদবির করে। নদী খননের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, ড্রেজার, দক্ষতা ও দরপত্র বেশি দেওয়ায় তাদেরকে নৌ মন্ত্রনালয় কাজটি দেয়নি।

সর্বনি¤œ দরপত্র হিসেবে বঙ্গ খনন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. রেজাউল প্রায় ১৫ কোটি টাকায় খনন কাজ পায়। কাজ পাওয়ার পরপরই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি গত ১মাস পূর্বে জনবল নিয়ে ড্রেজিং এর সরঞ্জামাদিসহ চাঁদপুর আসে।

প্রতিষ্ঠানটি কাজ শুরু করতে গেলে গুনরাজদী এলাকার কতিপয় যুবক রাজনৈতিক দলের নেতা পরিচয় দিয়ে কাজে বাধা প্রদান করে। নেতাদের অনুমতি ব্যতীত কাজ করতে দেওয়া যাবে না বলে হুমকি প্রদান করে। এছাড়া কাজ করতে হলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে ৩ কোটি টাকা চাঁদা দিতে হবে এমন হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে এ কাজ বন্ধ করতে চাঁদপুরের রাজনৈতিক দলের বেশ কিছু প্রভাবশালী নেতা জড়িত রয়েছে বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বঙ্গ খনন ড্রেজারের এজিএম ড্রেজিং আনিছুর জামান চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘কি ঝামেলা হচ্ছে তা আমি জানি না জানতে চাই ও না। বিআই ডব্লিউটিএ আমাকে কাজ শুরু করার পরিবেশ তৈরি করে দেবে আমি কাজ শুরু করবো। যে কোন সমস্যা হলে তারাই মোকাবেলা করবে।’

চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ এর নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম চাঁদপুর জানান, ‘পোর্ট (বন্দর) অফিসারে মাধ্যমে জেনেছি কে বা কারা সরকারের বরাদ্দকৃত ডাকাতিয়া নদী খনন কাজে বাধা প্রদান করেছে। এ ব্যপারে বিআইডব্লিউটিএ এর চেয়ারম্যানকে অবহিত করা হয়েছে।’

বিআইডব্লিউটিএ এর অফিস সূত্রে জানা গেছে, কাজে বাধা প্রদান করলে সাথে সাথে চাঁদপুরে পুলিশ সুপারকে ফোনে অবগত করা হয়। পুলিশ সুপার যাচাই-বাছাই করে লিখিত দিতে বলে অন্যথায় মামলা করার পরামর্শ প্রদান করে।

শাওন পাটোয়ারী : আপডেট ১০:২৯ পিএম, ১৭ এপ্রিল ২০১৬, রোববার
ডিএইচ

Share