চাঁদপুর জেলায় নির্মাণ সামগ্রী পরিবহন সংকটে জনসাধারণের মাঝে ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। এই সংকটকে পুঁজি করে এক শ্রেণির অসাধু ট্রাক মালিক ও চালকরা নির্মাণ সামগ্রী পরিবহনে জনসাধারনের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে।
প্রয়োজন মতো মালামাল পরিবহন না পেয়ে নির্মাণ কাজ ও সঠিকভাবে শুরু করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন ক’জন ইমারত নির্মাতা ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি।
জানা যায়, জেলা আইন শৃঙ্খলা সভার সিদ্ধান্ত আনুসারে সড়কে ট্রাক্টর চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। সিদন্তা অনুযাযী গত ক’দিনে জেলা জুড়ে প্রায় দেড় শতাধিক ট্রাক্টর আটক করেছে পুলিশ।
ট্রাক্টরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ট্রাক্টর সড়কে চলাচলে গ্রামীণ রাস্তাগুলো দ্রুত নষ্ট হয়া, অধিকহারে সড়ক দুর্ঘটনায় ব্যাপক প্রাণহানি ও লাইসেন্সবিহীন হওয়ায় সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিতসহ ইত্যাদি কারণে সড়কে ট্রাক্টর চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
কিন্তু সড়কে গত তিন দশক ধরে চলমান ট্রাক্টর হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমগ্র জেলাজুড়ে নির্মান সামগ্রী (ইট, বালি, সিমেন্ট, রড) পরিবহনে ব্যাপক সংকট সৃষ্টি হয়।
সংকটের কারণে ইট ও বালি ব্যবসায় ধস নামতে শুরু করে। সড়কে চলাচলকারী ট্রাক মালিক ও চালকেরা নির্মাণ সামগ্রী আনা-নেয়ায় অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করছে। ভুক্তভোগীরা বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েই মালামাল পরিবহন করে আসছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বাড়ি নির্মাতা চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘আগে যেখানে এক হাজার ইট ক্রয় ও পরিবহন বাবদ খরচ হতো ৭’হাজার টাকা বর্তমানে সেখানে দিতে হচ্ছে ৮ থেকে সাড়ে ৮ হাজার টাকা। এছাড়া গাড়ি না পাওয়ার কারনে মালামাল আনতে দেরি হওয়ায় সঠিক সময়ে কাজ শুরু করতে পারছি না।’
চাঁদপুর সদর উপজেলার রঘুনাথপুরে ইটভাটার মালিক আবুল বেপারী চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘পরিবহন সংকটের কারণে ফিল্ডের মাটির ব্যবস্থা করতে পারিনি। মাটি সংকটের কারণে এবার ইট তৈরিতে ব্যঘাত সৃষ্টি হয়েছে। আমার ব্রিক ফিল্ড খালি পড়ে আছে। আমি লক্ষাধিক টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি।
চাঁদপুরের সদর নানুপুরের ইটভাটার মালিক জানান, ‘এ মৌসুমে মাত্র একবার ইট তৈরি করেছি। কিন্তু যানবাহনের অভাবে ইট বিক্রিতে সমস্যা হচ্ছে। ট্রাক্টর বন্ধ থাকার সুবিধায় ট্রাকের মালিকেরা প্রতি গাড়ি ইট পরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করছে।’
ফরিদগঞ্জ বাজারের একজন রড সিমেন্ট ব্যবসায়ী এই প্রতিনিধিকে বলেন,‘আগে তো ট্রাক্টরে অধিকাংশ মালামাল পরিবহন করা হতো। এখন তা বন্ধ হয়ে যাওয়া মালামাল পরিবহনে সংকট সৃষ্টি হয়েছে। আর রড সিমেন্ট পরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া ও দিতে হচ্ছে। এছাড়া গত বছরের চেয়ে বিক্রিও অনেক কমে গেছে। সব মিলিয়ে আমরা ইমারত নির্মাণ সমাগ্রী ব্যবসায়ীরা ভালো নেই।’
বিকল্প পরিবহনের ব্যবস্থা না করে হঠাৎ সড়কে ট্রাক্টর বন্ধ করে দেয়ায় এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা
প্রতিবেদক-আতাউর রহমান সোহাগ
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৭: ৫০ পিএম, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, শনিবার
ডিএইচ