চাঁদপুরে নৌ পুলিশের উপস্থিতিতে হাজীগঞ্জের এক স্বর্ন ব্যবসায়ীর ৪৭ ভরি স্বর্ন ছিনতাই করার ঘটনার ৪দিন পর ছিনতাইকৃত স্বর্ন বৃহস্পতিবার রাত ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করেছে ডিবি পুলিশ।
এসময় স্বর্ণ ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ২ জনকে ডিবি পুলিশ আটক করেছে।
ডিবি এসআই ইসমাইল খন্দকারের নেতৃত্বে স্বর্ন ছিনতাইয়ের ঘটনার মূল হোতা কোড়ালিয়ার গ্যাসের ঠিকাদার মান্নান বেপারীর ৪তলা ভবনে এসব স্বর্ণ উদ্ধার করে।
এসময় স্বর্ণ ছিনতাইয়ের ঘটনার মূল হোতা মান্নান বেপারীর ছেলে পলাশ বেপারী ৩য় তলার বেডরুমের খাটের নিচ থেকে প্রায় ১৪ ভরি ওজনের ১টি স্বর্নের বার উদ্ধার করে।
ডিবি পুলিশ সূত্রে জানা যায়, স্বর্ন ছিনতাইয়ের ঘটনায় থানায় দায়েরকৃত মামলা হওয়ার পর ডিবি পুলিশ আসামী গ্রেফতার ও স্বর্র্ণ উদ্ধারে চিরুনী অভিযান চালানো হয়। এ ঘটনায় কোড়ালিয়ার সাগর ও জামতলার মাহাবুবকে আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যনুযায়ী স্বর্ন ছিনতাইকারীর মূলহোতা পলাশের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে প্রায় ১৪ ভরি ওজনের স্বর্নের ভার উদ্ধার করা হয়। ছিনতাই হওয়া স্বর্ণ কয়েকজনের মাঝে ভাগাভাগি হওয়ার কারণে বাকি স্বর্ণ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। পলাশের বাসায় অভিযানকালে তাকে পাওয়া যায়নি। তার স্ত্রীর মাধ্যমে খাটের নিচ থেকে লুকিয়ে রাখা স্বর্ন উদ্ধার করা হয়।
অভিযানকালে ডিবি পুলিশের সাথে উপস্থিত ছিলেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মডেল থানার তদন্ত ওসি মহিউদ্দিন।
প্রসঙ্গত, হাজীগঞ্জ নোয়ারদা গ্রামের মনোরঞ্জন সেনের ছেলে খাজা মার্কেটের নিচ তলার শ্যাম শিল্পালয়ের মালিক রতন সেন (৪৫) ৪৭ ভরি স্বর্ন নিয়ে শনিবার সকাল ৯ টায় ঢাকাগামী ঈগল-১ লঞ্চে রওনা হয়। স্বর্ন ব্যবসায়ী রতন সেন হাজীগঞ্জ থেকে রওনা হওয়ার পরই খবর পেয়ে জনৈক ব্যাক্তি ঘটনাটি চাঁদপুরের কোড়ালিয়া রোডের পলাশকে জানায়। স্বর্ন ব্যবসায়ী রতন সেন ঈগল লঞ্চের ৩য় তলায় সৌখিনে গিয়ে বসে। সকাল ৯টায় লঞ্চ ছাড়ার পূর্বে ঐ পলাশসহ তার সহযোগিরা ব্যবসায়ী রতন সেনকে স্বর্ন চোরাকারবারী অপবাদ দিয়ে তাকে লঞ্চ থেকে নামিয়ে আনার চেষ্টা করে। স্বর্ন ব্যবসায়ী রতন সেন সন্ত্রাসী ও ছিনতাইকারীদের ভয়ে সাথে থাকা ৪৭ ভরি স্বর্ন ঐ লঞ্চের যাত্রী তার প্রতিবেশী হাজীগঞ্জের বিএনপি নেতা ইমাম হাজীর কাছে রাখে। ঠিক ঐ সময়ে নৌ পুলিশ ও সোর্স পরিচয়ে তারা ভিতরে প্রবেশ করেই ব্যবসায়ী রতন সেনকে পাচারকারী বলে ব্যাপক মারধর করে। নৌ পুলিশের ইনচার্জ মোশারফের সামনেই তার সোর্সরা ইমাম হাজীর কাছ থেকে স্বর্ন ছিনিয়ে নিয়ে মোশারফের ইঙ্গিতে লঞ্চ থেকে নেমে পড়ে। পরে ব্যবসায়ী রতন সেনকে স্বর্ন পাচারকারী অপবাদ দিয়ে হাতে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে নৌ ফাড়িতে এনে বেধম মারধর করে।
এ নিয়ে তদন্ত শেষে পরে স্বর্ন ছিনতাইয়ের ঘটনায় মডেল থানায় মামলা দায়ের করার পর ডিবি পুলিশ ২ জন আসামি আটক করে ১৪ ভরি স্বর্ন উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।