চাঁদপুর সদর

চাঁদপুরে ননদের অবৈধ সম্পর্ক নিয়ে কেলেঙ্কারী : ফাঁস দিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যার চেষ্টা

চাঁদপুর সদর উপজেলার ৫নং রামপুর ইউনিয়নের অলিপুর গ্রামের নিরীহ গৃহবধূ বিলকিছ ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। এ ঘটনাকে বিভিন্ন জন ভিন্ন খাতে নিয়ে পুরো ঘটনাকেই একটা রহস্যময় করে তুলেছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার বিকেলে আহত অবস্থায় বিলকিছ নামের এই গৃহবধূকে হাসপাতালে এনে ভর্তি করে শাশুড়ি সোহরাব বেপারীর স্ত্রী ফরিদা ও জাহাঙ্গীর বেপারী স্ত্রী ফরিদা বেগম। এ সময় জাহাঙ্গীরের স্ত্রী ফরিদা বেগম জানায়, পাশের বাড়ির দেলোয়ার বেপারীর স্ত্রী পারভীনের সাথে ঝগড়া করে ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলো বিলকিছ। পাশের বাড়ির জেসমিন দেখে ডাক চিৎকার দিয়ে উদ্ধার করে। তারপর চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে বিলকিছের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত রোববার সন্ধ্যায় বিলকিছের শাশুড়ি ঘরে ঢুকে বিলকিছকে না দেখতে পেয়ে খুঁজতে বের হলে অন্য ঘরে গিয়ে জাহাঙ্গীর বেপারীর ছেলে সায়েম ও জয়নালের স্ত্রী বিলকিছকে বিবস্ত্র অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিৎকার দেয়। এ সময় লম্পট সায়েম পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে এলাকার মানুষের বিভিন্ন কথার কারণে ও শাশুড়ির নির্যাতনে অভিমানে ফাঁস দিতে যায় বিলকিছ।

সাবেক ইউপি সদস্যা রাবেয়া বেগম জানায়, গত রোববারের ঘটনায় বিলকিছকে এলাকাবাসী বিভিন্ন কথা বলতো। শাশুড়িও তার সাথে কথা বলতো না। আর সায়েম ছেলেটা খুবই লম্পট প্রকৃতির। আশেপাশের মানুষের কথা সহ্য করতে না পেরেই বিলকিছ আত্মহত্যা করতে যায়। এ সময় পারভীনের মেয়ে ফাতেমা ও অন্য ঘরের জেসমিন তাকে উদ্ধার করে।

আহত বিলকিছ জানায়, এলাকাবাসীর বক্তব্য সঠিক নয়। মূলতঃ আমার ননদ শিউলী আক্তার জাহিদ নামের এক ছেলের সাথে অবৈধ সম্পর্ক। ঘটনার দিন রোববার আমি তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলি। পরে শিউলী ও জাহিদ দৌড়ে পালিয়ে যায়। এ সময় আমি শিউলীকে খুঁজতে বের হলে কে যেন আমার পিছন থেকে ধাক্কা দিয়ে আমাকে মাটিতে ফেলে দেয় আর আমার শ্বাশুড়ি চিৎকার করে উঠে।

সায়েমের চাচাতো ভাই জানায়, সায়েম একটা লম্পট ছেলে। কোন কাজ না করে বাড়িতেই বসে থাকে। আর বিভিন্ন মহিলাদের দিকে অসৎ নজরে তাকায়। সায়েম ও বিলকিছকে বিবস্ত্র অবস্থায় ধরা হয়েছে ঘটনা সত্যি।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লার বিপাড়া গ্রামের শামছুল হক ও মাফিয়া খাতুনের মেয়ে বিলকিছ প্রায় ৪ বছর আগে রামপুর ইউনিয়নের অলিপুর গ্রামের সোহরাব বেপারীর ছেলে জয়নাল বেপারী দু’জনেই চট্টগ্রাম গার্মেন্টসে কাজ করা অবস্থায় প্রেমের সম্পর্ক করে বিয়ে করে। তারপরেই বিলকিছকে জয়নাল বাড়িতে নিয়ে আসে। তারপর থেকেই তার উপর চলে শ্বাশুড়ির অমানবিক নির্যাতন। জয়নালের মা ফরিদা বেগম বিষয়টি মেনে নেয়নি। মানবে যদি তাকে ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দেয়ার জন্য চাপ দেয়। বিলকিছ দিতে না পারায় তখন থেকেই তার উপর চলে অমানবিক নির্যাতন। কি করে তাকে এ বাড়ি থেকে সরাবে এ নিয়েও চলে নানা কৌশল। তারপরই গত রোববার বিলকিছের উপর অপবাদ দেয়।

তবে এ ব্যাপারে ভিন্ন জন ভিন্ন ভিন্ন মত দিয়েছেন। কেউ বলছে বিলকিছের স্বামী জয়নালসহ তার শাশুড়ীর অমানবিক নির্যাতনে ফাঁস দিতে চেয়েছে বিলকিছ। কেউ বলছে নিজের কু-কর্ম সবাই জেনে যাওয়ায় লজ্জায় এবং বিলকিছ নিজে বলছে তাকে ফাঁসানো হয়েছে। তবে বিলকিছের বর্তমান অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। চিকিৎসার খোঁজ নিচ্ছেনা কেউই।

স্বামী জয়নালের সাথে কথা বলে জানা যায়, সে চট্টগ্রাম আছে। বিলকিছ মরলেও তার কিছু যায় আসে না। জেল ফাঁসি পুরুষের জন্য। প্রত্যেক্যে প্রত্যেকের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে নিজেরা সাধু সেজে বসে আছে। এদিকে সবাইর সামনেই বাঁচার জন্য আকুল মিনতি জানাচ্ছে বিলকিছ। সে বাঁচতে চায়!

ক্রাইম রিপোর্টার || আপডেট: ১২:৪৮ পিএম, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, বুধবার

এমআরআর  

Share