নজরুল সংগীত শিল্পী পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখার অভিষেক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সন্ধায় জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রদীপ প্রজ্জলনের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বরেণ্য সংগীত শিল্পী ও সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুজিত মোস্তফা।
পরে ‘নম নম হে বাংলাদেশ নম’ গানের মধ্যদিয়ে শুরু হয় নজরুল সংগীতানুষ্ঠান। এছাড়া নজরুল সংগীতের ফাঁকে ফাঁতে নৃত্য পরিবেশন করে স্থানীয় নৃত্যশিল্পীরা।
সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সবুর মন্ডল। বিশেষ অতিথির হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার। সংগঠনের সভাপতি রুপালী চম্পকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌধুরীর পরিচালনা অতিথি হিবেবে বক্তব্য রাখেন স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডা. সৈয়দা বদরুন্নাহার, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি বিএম হান্নান। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ-সভাপতি প্রাকৌ. মো. দেলোয়ার হোসেন।
জেলা প্রশাসক আব্দুস সবুর মন্ডল তার বক্তব্যে বলেন, আগামিতে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় শিল্পকলা একাডেমিতে বছরের ৮মাসে ১৬টি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। এর মধ্যে ৮টি হবে নজরুল ও রবীন্দ্র সংগীত নিয়ে। প্রত্যেকটি অনুষ্ঠানের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ হাজার টাকা করে দিবো। টাকা যেভাবেই হোক সংগ্রহ করা হবে। এ বিষয়ে জেলা কালচারাল অফিসার ও এখানকার সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করা হবে।
তিনি আরো বলেন, ‘আমি চাই চাঁদপুরে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুরো যাতে শক্তিশালি হয়ে উঠে এবং মানুষ যেনো সংগীত প্রেমী, নাটক প্রেমী হয়ে উঠে। সাংস্কৃতীক কর্মীদের মাঝে প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হয়। বেশী বেশী করে কালচারাল অনুষ্ঠান হোক। আমি আশ্বাস দিচ্ছি যে সকল সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে জেলা প্রশাসন থাকবে।’
পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার তার বক্তব্যে বলেন, জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে প্রতি মাসে যাতে একটি করে নজরুল সংগীতের অনুষ্ঠান হয়, এ ব্যপারে পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা থাকবে।
তিনি আরো বলেন, আগামি প্রজন্মকে জঙ্গিবাদের বিপদগামীতা থেকে রক্ষ করতে হলে আমাদের সাংস্কৃতিক বিপ্লব অত্যন্ত জরুরী। আমাদের সন্তানদে বেশী বেশী করে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
উদ্বোধকের বক্তব্যে বরেণ্য সংগীত শিল্পী ও সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুজিত মোস্তফা বলেন, ৬৪ জেলার মধ্যে আমাদের নজরুল সংগীত পরিষদের কার্যক্রম রয়েছে। চাঁদপুরে এখন থেকে শুরু হয়েছে। এখানে এসে দেখতে পেলাম জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার দু’জনেই কন্ঠ শিল্পী। তাদের সর্বাত্তক সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি। আমরা চাই প্রতিমাসে এই মঞ্চে একটি করে অনুষ্ঠান করতে। এজন্য জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপারের সহযোগিতা প্রয়োজন।
তিনি আরো বলেন, আমাদের সন্তানদেরকে যদি সাংস্কৃতির সাথে সম্পৃক্ত রাখতে পারি তাহলে, এদেশ থেকে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ নিমূল হবে। আমাদের চেতনাকে জাগ্রত করতে হবে।’
এসময় অন্যান্যে মাঝে উপস্থিত ছিলেন নজরুল সংগীত শিল্পী পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি রুপালী চম্পক ও সাধারণ সম্পাদক শরীফ চোধুরী পরিচালনায় এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ঠ সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব জীবন কানাই চক্রবর্তী, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রুশদী. ঢাকার বিশিষ্ট নজরুল সংগীত শিল্পী আশীষ কুমার সরকার, তানজিনা করিম স্বরলিপি ও বর্ণালী সরকার, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট জেলা শাখার সভাপতি তপন সরকার, বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা জেলা শাখার সভাপতি অ্যাড. বদিউজ্জামান কিরণ, চতুরঙ্গ সাংস্কৃতিক সংগঠনের মহা-সচিব হারুন আল রশীদ, নজরুল সংগীত শিল্পী পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখার সহ-সভাপতি সুরজিৎ চক্রবর্তী, সহ-সম্পাদক রুমা সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক মৃণাল সরকার, কোষাদক্ষ ফেরদৌসী বেগম, প্রচার সম্পাদক কেএম মাসুদ,প্রকাশনা সম্পাদক আশিক বিন রহিম, কার্যনির্বাহী সদস্য শংকর আর্চার্য, গোরাঙ্গ সাহা, বৈশাখী ঘোষাল তুলি, খোকন চন্দ্র দাস, রিতা পাল, শাওন সাথী, রানা দত্ত প্রমুখ।
আলোচনা অনুষ্ঠানে নজরুল সংগীত শিল্পী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুজিত মোস্তফা চাঁদপুর জেলা শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করেন এবং কমিটির সকল সদস্যকে পরিচয় করিয়ে দেন।